সোমবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বদলগাছীতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের

মো: সাগর হোসাইন: উত্তর বঙ্গের শষ্য ভান্ডার খ্যাত জেলা নওগাঁ এই জেলার ধান ও চাউলের সুনাম ছড়িয়ে যায় দেশ জুড়ে নওগাঁর ১১ টি উপজেলায় দুলছে সোনালী বর্নের ধান যা দেখে কৃষকরা স্বপ্ন দেখছেন বাম্পার ফলনের।

জেলার বদলগাছী উপজেলায় প্রতিটি মাঠ জুড়ে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্নের ধান। মাঠগুলোতে এখন বোরো ধানের সবুজ বরণ কেটে হলুদ বরণ ধারণ করতে শুরু করেছে। কিছু কিছু এলাকায় পাকতে শুরু করেছে বোরো ধান । যে দিকেই চোখ যায় শুধু ধান আর ধান ধানের শীষে মাঠ জুড়ে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। চারিদিকে এ যেন এক দৃষ্টিকারা দৃশ্য। হালকা হালকা হাওয়ায় দুলছে ধানের সোনালী শীষ। আর খুশিতে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন । কৃষকের মনে উঁকি দিচ্ছে এক নতুন স্বপ্ন । সোনালী খেত দেখে বারবার ফিরে তাকায় আর যেন হারিয়ে যাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝড়োয়া আবহাওয়া ও শিলাবৃষ্টির ভাবনায় ।

আর কিছুদিন পরেই রাশি রাশি সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শূণ্য গোলা আর কৃষকের মুখে ফুটবে হাসি। বোরো ধানের সোনালী শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। পাকা ধান ঘরে তুলতে জায়গা প্রস্তুতি নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। কৃষকরা বলছেন, ধানের চারা রোপণ থেকে শুরু করে শেষ সময় পর্যন্ত কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও আবহাওয়া অনুকূল থাকাইর কারণে ধানক্ষেতে রোগ-বালাই তুলনামূলক নেই বললেই চলে । ধান কাটা-মাড়াই পর্যন্ত এমন আবহাওয়া থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। কৃষি অফিসের তথ্যমতে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ১১ হাজার ৭ শত ৪০হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে।

উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন বদলগাছি সদর ইউনিয়ন, আধাইপুর ইউনিয়ন , কোলা ইউনিয়ন, পাহাড়পুর ইউনিয়ন, বিলাশবাড়ী ইউনিয়ন, মথুরাপুর ইউনিয়ন, মিঠাপুর ইউনিয়ন ও বালুভরা ইউনিয়ন এ ছাড়াও জেলার প্রতিটি উপজেলায় বোরো ধানের চাষ করা হয়ে থাকে। এবারে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। ধান রোপনের শুরু থেকেই অনুকূল আবহাওয়া ও সঠিক পরিচর্যায় এবারের ধান মাঠে দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। বেশ কিছু এলাকায় আগাম জাতের ধান পাকতেও শুরু করেছে । অধিকাংশ এলাকার মাঠ জুড়ে সোনালী রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে বোরো ধানের শীষ। আর এ সোনালী শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন।

উপজেলার ভান্ডার পুর গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন ও বালুভরা ইউনিয়নের সাজ্জাদ হোসেন বলেন এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমরা বোরো ধনের বাম্পার ফলন পাব। আর কয়েকটা দিন যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে কৃষকদের স্বপ্নের সোনালী ধান সুন্দরভাবে ঘরে উঠবে বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামের খোরশেদ আলম বলেন আমরা বোরো ধানের মধ্যে জিরাসাইল কাটারি ও আটাশ ধানের আবাদ সর্বাধিক পরিমাণ জমিতে করে থাকি। কিছু কিছু জমিতে নতুন অন্য জাতের ধানের চাষও করা হয়েছে।

শুরু থেকেই আবহাওয়া ভালো থাকায় ধানের শীষগুলো দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে এবারে বাম্পার ফলন হবে বলে আমরা আশাবাদী। বদলগাছী সদর ইউনিয়নের জব্বার আলী বলেন, উপজেলার বিভিন্ন মাঠে আগাম রোপণকৃত ধান ২ থেকে ৪ দিনের মধ্যে কাটামাড়াই শুরু হবে। কাটামাড়াই পুরোদমে শুরু হতে আরো এক সপ্তাহ লাগতে পারে। মথুরাপুর ইউনিয়নের সৌরভ হোসেন বলে, আমরা এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ঝড়ো আবহাওয়া ও শিলাবৃষ্টির শঙ্কা মাথায় নিয়ে আমরা মাঠে রয়েছেন। স্বপ্নের ধান কেটে ঘরে তুলতে পারলে বাম্পার ফলন পাব বলে আশা করছি । বদলগাছী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাবাব ফারহান বলেন, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।

অল্প খরচে অধিক ফলনের জন্য আমরা কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করেছি। বিশেষ করে বোরো ধান রোপনের শুরু থেকেই আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায় কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করেছেন। বিশেষ করে অধিক ফলেন জন্য পরিমাণ মতো সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং সার্বিক পরিচর্যায় কৃষকদের সব সময় আমরা পরামর্শ দিয়ে আসছি। এবার বদলগাছী উপজেলার কোথাও মাঝড়া পোকার আক্রমণ নেই। এবং উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে আরো বলেন বিঘা প্রতি জিরা ,আটাশ ও কাটারি ধান ২৪ থেকে ২৬.২৭ মন হারে আসবে ও মোটা জাতের ধান আরো বেশি ফলনশীল হবে।

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ভরপুর কাটামাড়াই শুরু হবে সুন্দরভাবে ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য কৃষকদের সবরকম পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়