রবিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহিদের কন্যা লামিয়ার আত্মহত্যা

সংবাদের আলো ডেস্ক: ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহিদ পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার জসিম উদ্দিনের মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৯টায় রাজধানীর শেখেরটেক ৬ নম্বর রোডের বি/৭০ নম্বর বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটে। ‎নিহতের নাম- লামিয়া আক্তার (১৭)। প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাওয়ার কথা ছিলো। শনিবার মার্কেটে গিয়ে কিছু কাপড় কিনেছে। রাত ৮টায় নিহতের মা ছোট মেয়েকে বাসার পাশেই মাদরাসায় দিয়ে আসতে যায়। এ সুযোগেই রাত ৯টার দিকে রুমের ভেতর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে আসে। নিহতের মামা জানান, আমি দোকানে বসা ছিলাম। হঠাৎ করে আমার গ্রামের বাড়ি থেকে ফোন করে বলে আমার ভাগ্নি মারা গেছে। আমি দৌড়ে হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাগ্নি মরদেহ হাসপাতালে পড়ে আছে।

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আমার বোন স্বামী হারা হলো। এখন মেয়েকে হারিয়েছে। আমার ভাগ্নির ধর্ষকরা জামিনে এসে গেছে। এখন আমার ভাগ্নি চলে গেছে। আমরা কার কাছে বিচার চাইবো। কে বিচার করবে আমাদের। ‎প্রতিবেশী এক নারী জানান, সন্ধ্যার পর মা-মেয়ে মিলে কাপড় কিনে এসেছে। আগামীকাল বিকেলে লঞ্চে করে বাড়িতে যাবে। শনিবার রাতে ছোট মেয়েকে নিয়ে মাদরাসায় যাওয়ার পর বড় মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। হয়তো কেউ তাকে ফোনে এমন কোন হুমকি-ধমকি দিছে। যার কারণে সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। আমরা এ হত্যার বিচার কার কাছে আর চাই। এ বিষয়ে আদাবর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম জাকারিয়া জানান, এ ঘটনায় আমরা হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নে শহিদের ওই কিশোরী মেয়েকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় তার পরেরদিনই অভিযুক্ত একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় যারা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তারা জামিন পেয়েছে। এছাড়া যারা চিহ্নিত অপরাধী তারাও ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই হতাশার মধ্যে ছিলেন ভুক্তভোগী কিশোরী। ধারণা করা হচ্ছে, ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তারকৃতরা জামিন পেয়েছে এমন সংবাদে মর্মাহত হয়েই আত্মহত্যা করেছেন এই কিশোরী। পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন মেয়েটি তার বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা হয়।

পথে নলদোয়ানী এলাকা থেকে সাকিব ও সিফাত নামে দুজন তাকে অনুসরণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা মুখ চেপে ধরে পাশের জলিল মুন্সির ভিটা বাগানে নিয়ে যান। সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয় এবং ঘটনার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় দুজনের নাম উল্লেখ করে দুমকি থানায় মামলা করেছিলেন ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়