ভেড়ামারা প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে দেওয়া, ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নলুয়া- দলুয়া গ্রামের বাসিন্দাসহ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী।
গতকাল শনিবার ২৬ শে এপ্রিল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নলুয়া প্রাইমারি স্কুলের সামনে অবস্থিত মসজিদ আঙিনায় এই সংবাদ সম্মেলনটি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগী হোসেন শাহ, মসজিদের ইমাম মইনুদ্দিনসহ এলাকাবাসীরা।
সংবাদ সম্মেলন থেকে দাবি করা হয়, গত ২৮ শে মার্চ ২৭ রমজান তারিখে দলুয়া গ্রামের বাসিন্দা স্কুল মাস্টার আশরাফ আলীর রান্নাঘর চুলার আগুনে পুড়ে যায়। এলাকাবাসীরা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিস এবং এলাকাবাসী সমন্বিত প্রচেষ্টায় আগুন নিভানো হয়। আগুন নিভাতে গিয়ে এবং গোয়াল ঘরের গরু ছাড়াতে গিয়ে আশরাফ আলীর ছেলে বাঁধনের হাতে এবং শরীরের কিছু অংশে আগুনের ছেকা লেগে পুড়ে যায়। কিন্তু আশরাফ আলী নিজে বাদী হয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ৮জনকে আসামি করে ভেড়ামারা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এরমধ্যে ৭৫ বছরের মসজিদের ইমাম মইনুদ্দিন শাহও রয়েছে। অভিযোগ আছে, মইনুদ্দিন শাহ চুলার আগুন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলার কারনেই তাকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও আগুন ধরার বিষয়ে আশরাফ তার স্ত্রী বিলকিসকে এলাকার লোকজনের সামনে বকাঝকা করার বিষয়টিও জানা গেছে।
এ বিষয়ে আশরাফকে প্রশ্ন করা হলে আশরাফ, তার স্ত্রী এবং তার ছেলের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য লক্ষ্য করা গেছে।
যা ভেড়ামারা থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারের সাথে সুস্পষ্ট ভিন্নতা প্রকাশ করে। তাছাড়া এখান থেকে দাবি করা হয়, ২৭ শে রমজানের ইফতারি করার জন্য সবাই সে সময় ব্যস্ত। তাছাড়া এই মামলায় ভুক্তভোগী কয়েকজন আসামি মসজিদের ইমামের বাড়িতে সেদিন ইফতারের দাওয়াতে ছিলেন।
আর আশরাফের কাজই শুধুমাত্র মামলা দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে হয়রানি করা এবং শেষে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করা।
তবে সরেজমিনে আশরাফের বাড়ির আশেপাশে সহ প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, আগুন মূলত রান্নার চুলা থেকেই লেগেছে। কারণ সে সময় সকলেই ইফতারের নেওয়ায় ব্যস্ত। আশরাফ নিজেও সে সময় তার স্ত্রীকে বকাবকি করেছিল অসাবধানতার কারণে। তাছাড়াও আশরাফের পরিবারের তিন জনের তিন রকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। মামলার এজাহারে আশরাফ দুইজন এজাহারনামীয়কে দেখার কথা দাবি করলেও তার স্ত্রী এবং ছেলে সেটা দেখেনি।এমনকি গ্রাম বাসী তাদের দেখেনি।
এ বিষয়ে আশরাফ বলেন, আমার বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে আগুন ধরানো হয়েছে। আগুনে আমার ছেলের হাত এবং শরীরের অংশ চলছে যায়। পরিকল্পিতভাবে আগুন ধরানোর জন্য আমি থানায় মামলা করেছি।
ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আগুনের সম্ভাব্য কারণ হিসেবে তারা রান্নার চুলা থেকেই আগুন লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী হোসেন শাহ দাবী করে বলেন, আশরাফ বিগত ১৭ বছর আমাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জ্বালিয়েছে। এখন ফ্যাসিষ্ট দূর হয়েছে কিন্তু আশরাফের অত্যাচার থেকে গ্রামবাসী বাঁচেনি। প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি তদন্ত গ্রহণের মাধ্যমে যেন এই মামলার নিষ্পত্তি করা হয়। আদালতের কাছে আর্জি, বর্তমানে আমাদের যে ছয়জন আসামি জেলে আছে তাদেরকেও নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেওয়া হোক।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2025 সংবাদের আলো. All rights reserved.