তারেক রহমান মাত্র ৪ বছর বয়সে ৯ মাস কারাবরণ করেছিলেন: রফিকুল ইসলাম জামাল


মোঃ মাহিন খান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল বলেছেন, “রাজনীতি করতে হলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের আদর্শ ও ত্যাগের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে।” শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে রাজাপুর উপজেলা যুবদলের আয়োজনে শুক্তাগড় মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, “আমরা নিজেদের ত্যাগী দাবি করি, তবে জিয়া পরিবার যে আত্মত্যাগ করেছে, তার তুলনায় আমাদের ত্যাগ সামান্যই। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লাখো মানুষ প্রাণ দিয়েছে, অনেকে পরিবার হারিয়েছেন। আজও গণতন্ত্রের লড়াইয়ে অনেক নেতা-কর্মী গুম হয়েছেন, নিখোঁজ হয়েছেন, পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়েছে। তারা কোনো প্রতিদান চায়নি, তারা চেয়েছে একটি মুক্ত, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।”
রফিকুল ইসলাম জামাল আরও বলেন, “১৯৭১ সালে যখন শেখ মুজিবুর রহমান দেশত্যাগ করেছিলেন, তখন খালেদা জিয়াকে সন্তানসহ পাক বাহিনীর হাতে বন্দি হতে হয়েছিল। চার বছর বয়সে তারেক রহমানও সেই সময় ৯ মাস কারাবন্দি ছিলেন। আমাদের ত্যাগ যদি পরিমাপ করি, তবে মনে রাখতে হবে—আমাদের নেতৃত্বের ইতিহাস আরও গভীর এবং বেদনাঘন।” তিনি বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কখনো ব্যক্তিস্বার্থে কিছু চাননি। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর যখন তাকে প্লট বা বাড়ির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশই আমার বাড়ি’। সেই মহান দৃষ্টিভঙ্গির উত্তরাধিকার আমাদের ধারণ করতে হবে।” সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আরও বলেন, “খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরাতে শত ষড়যন্ত্র হয়েছে। তিনি কখনো আপস করেননি, দেশের মানুষের অধিকার রক্ষায় জেল-জুলুম সহ্য করেছেন।
তারেক রহমানও মায়ের চিকিৎসার সময় পাশে থাকতে পারেননি, ভাইয়ের জানাজায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। এত কষ্ট সহ্য করেও তিনি দেশের মানুষের জন্য ৩১ দফা কর্মসূচি প্রস্তুত করেছেন।” তিনি কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “ব্যক্তিগত লাভ-লোকসানের হিসাব নয়, কার আদর্শের রাজনীতি করছি—সেটি হৃদয়ে ধারণ করতে হবে।” সভায় উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. মাসুম বিল্লাহ পারভেজের সভাপতিত্বে ও যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক সুমনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব সৈয়দ নাজমুল হক। তিনি বলেন, “যুবদল বিএনপির প্রাণ। আমাদেরকে দেশপ্রেম, সাহসিকতা ও ত্যাগের শক্তি নিয়ে সংগঠনকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) মাহবুবুল হক নান্নু এবং রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তালুকদার আবুল কালাম আজাদ। তারা বলেন, “গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে যুবদলকে আরও ঐক্যবদ্ধ ও সক্রিয় হতে হবে।” সভাস্থল ছিল ‘গণতন্ত্র মুক্তি চাই’, ‘ভোটের অধিকার চাই’, ‘তারেক রহমানের নেতৃত্বে এগিয়ে চলবো’ স্লোগানে মুখরিত। উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের শতাধিক নেতাকর্মী। অনুষ্ঠান শেষে শুক্তাগড় ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী রিফাত হোসেন বলেন, “আমরা গণতন্ত্রের জন্য যেকোনো ত্যাগ করতে প্রস্তুত। কেন্দ্রীয় নেতাদের সাহসী আহ্বান আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে।” আরেক তরুণ কর্মী মাসুম হাওলাদার বলেন, “আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমাদের একটাই দাবি—স্বাধীন বিচারব্যবস্থা এবং ভোটাধিকার নিশ্চিত করা।”
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।