সাবেক পৌর মেয়র জহিরের বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকার প্রকল্প আত্মসাতের অভিযোগ


বান্দরবান প্রতিনিধি: বান্দরবানের লামা পৌরসভার সাবেক মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম বিরুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচীর বরাদ্দের প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের খাদ্যশস্য আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও জালিয়াতি, ভুয়া প্রকল্প কর্মসূচীর বরাদ্দে থাকা ২ কোটি টাকার আত্মসাত ঘটনায় সমালোচনার ঝড় বইছে লামায়। গত ৫ আগস্ট থেকে সাবেক এই পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম পলাতক থাকার পর একের পর এক এসব প্রকল্প আত্মসাতের অভিযোগ বের হয়ে আসছে। এবার সাবেক এই পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকার মূল্যের খাদ্যশস্য আত্মসাৎ এর অভিযোগ এনে দুদক এ তদন্ত আবেদন করেছেন শাহাদাত হোসেন নামের এক নাগরিক। অভিযোগকারী শাহাদাত হোসেন বলেন, আমি পৌর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকা অবস্থায় মেয়র তার দলবল নিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সাধারণ মানুষের হয়ে আমি গত ১৯ তারিখে দুদকে একটি অভিযোগ করেছি। অভিযোগ ভিত্তিতে জানা যায়,’পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পার্বত্য জেলা সমুহে পুণর্বাসন কর্মসূচীর আওতায় বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচীর অধিনে গম ও চাল বরাদ্দ প্রদান করে আসছেন। সূত্রে বর্ণিত ১নং স্মারক মূলে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ১০ টি উন্নয়ন প্রকল্পের বিপরীতে ৫০ মেঃটন চাল এবং ৫০ মেঃটন গম মোট ১০০ মে.টন, ২নং স্মারক মূলে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ২০টি উন্নয়ন প্রকল্পের বিপরীতে ১৫০ মেঃটন চাল এবং ৫০ মোটন গম মোট ২০০ মেঃটন এবং ৩নং স্মারক মূলে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পের বিপরীতে ৮০ মেঃটন চাল এবং ২০ মেঃটন গম মোট ১০০ মেঃটন খদ্যশস্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। উপরে বর্নিত ৩টি স্মারক মুলে সর্বমোট ৪০০ মেঃটন খাদ্যশস্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। পার্বত্য জেলা সমূহের দুর্যোগ মোকাবেলায় এবং বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজে ব্যবহারের জন্য বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচীর খাত হতে এ সকল খাদ্যশস্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
বরাদ্দ পত্রের নির্দেশনা মোতাবেক এলাকার সামষ্টিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ও সমাজের বৃহৎ জনগোষ্ঠির স্বার্থ বিবেচনায় প্রকল্প স্থান নির্ধারণসহ প্রকল্প পরিকল্পনা রূপরেখা ও বাস্তবায়ন বাধ্যতামুলক। অভিযুক্ত ব্যক্তি লামা পৌরসভার মেয়র হওয়ার সুবাধে বরাদ্দকৃত সমুদয় খাদ্যশস্য ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছে। সরকারি খাদ্যগুদাম হতে সূত্রোক্ত বরাদ্দপত্রের আলোকে ভূয়া প্রকল্পের বিপরীতে খাদ্যশস্য উত্তোলন করে কালো বাজারে বিক্রি করে নিজে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছে। খাদ্যশস্যআত্মাসাৎ করায় সরকারের এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য একদিকে ব্যাহত হয়েছে, অন্যদিকে সরকারি খাদ্যশস্য দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ হয়েছে। সূত্রোক্ত বরাদ্দের বিপরীতে গৃহীত প্রকল্পের ভূয়া মাষ্টার রোল সমন্বয় করা হয়েছে। বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য ব্যবহারে বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচী বাস্তবায়ন সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষিত হয়েছে। সামাজের বৃহত্তর জনগোষ্টির স্বার্থে বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য ব্যবহার করা হয় নাই। পৌরসভায় মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্যের উপর বরাদ্দ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ হওয়ায় নিজেই প্রকল্প গ্রহণ, কাগজে কলমে বাস্তবায়ন কমিটিতে নিজস্ব অনুগত লোক মনোনয়ন, স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে খাদ্যগুদাম হতে খাদ্যশস্য উত্তোলন, খদ্যশস্য কালোবাজারে বিক্রয় ও ভূয়া মাস্টাররোল সমন্বয় করে মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প বাস্তাবায়নের ভূয়া অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলে সুযোগ পেয়েছে।
একইভাবে মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের ভূয়া অগ্রগতির প্রতিবেদন দাখিল করেছে। ৩টি স্মারকের বরাদ্দপত্রের ৪০০ মেঃটন খাদ্যশস্য বিক্রি করে মেয়র জহিরুল ইসলাম সরকারের ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। গৃহীত প্রকল্প এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন/ তদন্ত করলে আত্মসাতের সত্যতার তথ্য বেরিয়ে আসবে। এ ব্যাপারে সাবেক মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলামকে একাধিক বার কল দেওয়া হলেও তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।