সিরাজগঞ্জে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিককে ফাঁসাতে ট্রাকচালককে হত্যা


সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ট্রাকচালক রাশেদুল হত্যার রহস্য উদঘাট করা হয়েছে। স্ত্রীর পরকীয়াপ্রেমিককে ফাঁসাতে তাঁকে গলা কেটে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। গতকাল দুপুরে গ্রেপ্তার করা আসামি সেলিম হোসেন হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরামুল হোসাইন।
ইকরামুল হোসাইন বলেন, আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর আসামি সেলিম হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বাড়ি উপজেলার আশানবাড়ি গ্রামে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নিজ গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবরহৃত একটি ছুরি, একটি মোবাইল ফোনসেট, একটি মানিব্যাগ, একটি জাতীয় পরিচয় পত্র, ক্লেমন ও স্পিরিটের বোতল উদ্ধার করা হয়।
ডিবি পুলিশ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মো. সেলিম হোসেনের স্ত্রী শেরজা খাতুনের পরকীয়ায় জড়িয়ে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর এলাকার আউয়াল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে যায়। কিন্তু সেলিমের সঙ্গে তাঁর তালাক হয়নি। সে কারণে সেলিম আউয়ালের উপর প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, নিহত ট্রাকচালক রাশেদুল ইসলামের সঙ্গে সেলিমের ভালো সম্পর্ক ছিল এবং তাদের মধ্যে সারা দিনে এক-দুইবার দেখা হতো। সেলিম ঘরের মধ্যে কাগজপত্র খুঁজতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী শেরজার ভ্যানেটি ব্যাগে আউয়ালের একটি মানিব্যাগ দেখতে পায়। সেই মানিব্যাগে একটি মোবাইল ফোনের সিমের কাগজ, ছবি (যা শেরজা ও আউয়ালের) এবং আউয়ালের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ছিল। পরে মানিব্যাগটি সেলিম তার কাছে রেখে দেন। প্রায় এক মাস আগে তার মাথায় চিন্তা আসে যে, ট্রাকচালক রাশেদুলকে হত্যা করে মানিব্যাগটি মৃত দেহের পাশে রেখে দিলে পুলিশ সেই মানিব্যাগের ভেতর থেকে জিনিসপত্র দেখে আউয়ালকে সন্দেহ করবে এবং আউয়াল তার স্ত্রী শেরজার সঙ্গে সংসার করতে পারবে না। তাই তিনি ট্রাকচালক রাশেদুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিবি পুলিশ আরও জানায়, পরিকল্পনা অনুয়ায়ী গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় রাশেদুলকে মদ খাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যান সেলিম। সঙ্গে স্পিরিটের বোতলে ঘুমের ওষুধ ও কোমড়ে ছুরি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাশেদুলকে স্থানীয় শুকুর ঘোষের ধানক্ষেতের পূর্ব কিনারে নিয়ে ঘুমের ওষুধ মেশানো স্পিরিটের বোতল খেতে দেন এবং তিনি ক্লেমনের বোতল নিয়ে মদ খান। কিছুক্ষণ পর রাশেদুল অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এ সময় সেলিম তাঁর কোমড়ে থাকা ছুরি বের করে রাশেদুলকে জবাই করে হত্যা করে বাড়ি চলে যান।
নিহত রাশেদুল ইসলাম (৪০) কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুরেরমৃত মজিবর রহমানের ছেলে। বর্তমানে তিনি তাড়াশ পশ্চিম ওয়াবদা বাঁধ এলাকায় বসবাস করতেন।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।