বৈশাখ উদযাপনে জামায়াতের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ক্যাম্প


পঙ্কজ সরকার নয়ন, গাজীপুর প্রতিনিধি: ছিলোনা আনন্দ শোভাযাত্রা, ছিলোনা কোন মিটিং কিংবা আলোচনাসভা। ছিল ব্যতিক্রমী উদ্যোগ প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলার ঐতিহ্যের অনুষ্ঠান পহেলা বৈশাখকেই বেছে নিয়েছে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। দিয়েছেন এ অঞ্চলের প্রায় কয়েক হাজার মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা। সোমবার (১৪ এপ্রিল) উপজেলার বক্তারপুরের ফুলদী জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। কালীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে , ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) এর আয়োজনে, কালীগঞ্জ পুবাইল বাড়িয়া উন্নয়ন ফোরামের ব্যবস্থাপনায়, গ্রীণ হস্পিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাব গাজীপুরের সহযোগীতায় এই সেবা প্রদান করা হয়।
জানা গেছে, মেডিকেল ক্যাম্পিংয়ে ফ্রি চিকিৎসা, ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং, ফ্রি ডায়াবেটিস টেস্ট, ফ্রি ফিজিওথেরাপি ও ডেন্টাল সেবা এবং ফ্রি ঔষধ বিতরণ করা হয়। ১১ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিরতিহীন চিকিৎসা সেবা প্রদান করবেন। বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন চিকিৎসকবৃন্দ রোগীদের পর্যবেক্ষণ করে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করেন। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা মো. শরাফত আলী বলেন, আমি হাটুর ব্যাথায় ভুগছি। নামাজ পড়তে গেলে প্রচন্ড ব্যাথা হয়। আমাদের গ্রামে ভালো কোন চিকিৎসক নেই। ভালো মানের চিকিৎসা সেবা পেতে গেলে যেতে হয় গাজীপুরে। সেখানে যাওয়া আসাটা একটু কষ্ট সাধ্য। এমন আয়োজন আরো বেশি বেশি হওয়া জরুরী।
এতে করে গ্রামের সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। অপর রোগী রোজিনা বেগম (৬৯) জানান, তিনি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। প্রতিদিন নিয়ম করে ওষুধ খেতে হয়। কিন্তু কিছুদিন ধরে ওষুধেও ভালো কাজ করছেনা। আজকে এই সুযোগে তিনি তার রোগ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পেয়ে উপকৃত হয়েছেন। চিকিৎসকের ব্যবহারে তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট। এনডিএফ সভাপতি অধ্যাপক ডা. আমজাদ হোসেন বলেন, পহেলা বৈশাখ আমাদের বাঙালী জীবনের সাথে দারুণভাবে জড়িত। কিন্তু এই দিবসটিকে আমরা কার্যকর উপায়ে ব্যবহার করতে পারিনি। সেই জায়গা থেকে চেষ্টা করেছি গ্রামের প্রান্তিক পর্যায়ের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য কিছু করার। আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস যদি সুবিধা বঞ্চিতদের উপকারে আসে তাহলেই আমাদের চেষ্টা সফল।
জামায়াত মনোনীত গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী খায়রুল হাসান বলেন, মানুষের কল্যাণে আসে এমন সকল কাজে জামায়তে ইসলামী সবার আগে থাকবে। আমরা নিকট অতীতেও দেখেছি পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে রাজনৈতীক নানান প্রেক্ষাপট তৈরী হতে। আমরা চেষ্টা করেছি সকল মত ও পথকে পাশ কাটিয়ে মানুষের কল্যাণে আসে এমন কিছু কাজ হাতে নিতে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের এই বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ক্ষুদ্র চেষ্টা। কয়েক হাজার উপকারভোগীর সম্মেলন ঘটতে দেখেছি আজকের এই আয়োজনে। এর ধারাবাহিকতা আমরা বজায় রাখার চেষ্টা করবো। আবারো বলতে চাই জামায়াতে ইসলামী সুস্থ সংস্কৃতি বিকাশে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।