৩ বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা, জামায়াত-আ.লীগ নেতার রফাদফা


সংবাদের আলো ডেস্ক: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ষাটোর্ধ্ব রেজা নামের এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে ৩ বছরের শিশুকে ৪ দফায় ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে করা শালিসের জরিমানার ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা না দিয়েই স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মাওঃ তুহিন ফকির নামের এক জামায়াত নেতা ও সাইফুল ফকির নামের এক আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে।মাওঃ তুহিন ফকির কায়েমপুর ইউনিয়নের হলদিগর গ্রামের মৃত খালাস ফকিরের ছেলে ও হলদিগর কান্দাপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার সেই সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গারাদহ ইউনিয়ন শাখার সদস্য এবং সাইফুল ইসলাম একই গ্রামের আব্দুল মোক্তারদের ছেল এবং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের হলদিগর গ্রামের দরিদ্র চা দোকানী মাসুমের সাড়ে ৩ বছরের শিশু কন্যাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে গত (২০ মার্চ) প্রতিবেশী রেজা ফকির (৬০) এর বিরুদ্ধে শালিসে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে জামায়াত নেতা তুহিন ফকির, আওয়ামীলীগ নেতা সাইফুল ফকির সহ বেশ কয়েকজন গ্রাম প্রধান। গত ৩০ মার্চ বাকী টাকা প্রদানের পূর্ব নির্ধারিত সময়ে টাকা না দিয়েই শিশুটির পিতার কাছ থেকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার চেষ্টা করেন তুহিন ফকির।টাকা ছাড়া স্বাক্ষর না দেয়ায় তাকে বিভিন্ন রকম হুমকি দিতে থাকে এই জামায়াত নেতা। ভুক্তভোগী শিশুটির মা জানান, গত ১৪ই মার্চ প্রতিবেশী রেজা নির্জন একটি ঘরে আমার শিশু মেয়েকে অনৈতিক কাজের চেষ্টা করার সময় প্রতিবেশী এক নারী দেখে আমাকে জানায়। পরে মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় এর আগেও কয়েকবার সে একই কাজ করেছে। বিষয়টি গ্রাম প্রধানদের জানালে তারা থানায় যেতে নিষেধ করে শালিসের মাধ্যমে বিচারের কথা জানায়। পরে শিশুটিকে পৌর শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।শিশুটির পিতা দরিদ্র চা দোকানী মাসুম জানায়, জামায়াত নেতা তুহিনের সভাপতিত্বে ও আওয়ামীলীগ নেতা সাইফুল, হাসান ও রবিউলের নেতৃত্বে শালিসে রেজাকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় মেয়ের চিকিৎসা বাবদ ১০ হাজার টাকা তুহিন আমার হাতে তুলে দেয় এবং বাকী টাকা ৩০ মার্চ দিবেন বলে জানায়।
গত ৩০ মার্চ তুহিন ফকির বাড়িতে উপস্থিত হয়ে টাকা না দিয়েই স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে বলে। আমি টাকা দাবি করলে সে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলে স্বাক্ষর না দিলে সমস্যা হবে। পরে সে বিভিন্ন রকম হুমকি দিয়ে চলে যায়। তারপর থেকে তুহিন, সাইফুল সহ তাদের লোকজন আমাদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এই বিষয়ে জামায়াত নেতা ও হলদিগর কান্দাপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওঃ তুহিন ফকিরের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে তিনি জানান, এই বিষয়ে আমি আর নেই। সে বিভিন্নভাবে তার দায় এড়ানোর চেষ্টা করে। পরে শাহজাদপুর উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এরকম গর্হিত ঘটনার সালিস আমরা সমর্থন করিনা। এই ঘটনায় জামায়াতের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই বিষয়ে শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসলাম আলী বলেন, এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ কেউ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।