মঙ্গলবার, ৪ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

দাবি আদায়ে আপনারা রাস্তায় নামেন, আমাদের ঘেরাও করেন: ফারুকী

সংবাদের আলো ডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী মনে করেন, চলচ্চিত্রের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় হওয়া উচিত। বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বাংলাদেশ ফিল্ম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত জাতীয় চলচ্চিত্র সম্মেলনে তিনি এমনটা মন্তব্য করেন। ফারুকী বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি, চলচ্চিত্রের আলাদা মন্ত্রণালয় হওয়া উচিত। ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে চলচ্চিত্রের সামগ্রিক উন্নতি করা সম্ভব নয়। আমারা সবাই জানি আমাদের সমস্যা কি, সমাধান কোথায়। তার আগে স্টেকহোল্ডারদের একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা উচিৎ, যার তত্ত্বাবধানে একটি কর্মশালা হবে; যা আমাদের চলচ্চিত্র সংস্কারে প্রথম ধাপ হবে। এছাড়া দাবি আদায়ে আপনারা রাস্তায় নামেন, আমাদের ঘেরাও করেন। আন্দোলন করে আমাদের বাধ্য করেন যাতে আমরা চলচ্চিত্র সংস্কারে তৎপর হই। ‘সংস্কারে চলচ্চিত্র, পরিবর্তনে দেশ’ প্রতিপাদ্য ধারণ করে আয়োজিত এ সম্মেলনে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিনয়শিল্পী, নির্মাতাসহ সিনেমা সংশ্লিষ্ট চার শতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে চলচ্চিত্র বিষয়ক স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় গঠনের দাবিসহ চলচ্চিত্রের সংস্কারের ১৮টি প্রস্তাব তুলে ধরে বিএফএসএ।স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। তবে আমরা চলে যাওয়ার আগে সংস্কৃতির সবকিছুকে এক ছাতার নিচে একত্রিত করে যাব এবং মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে কিছু সুপারিশ করে যাব। যাতে ভবিষ্যতে যেকোনো সরকার সঠিকভাবে কাজ করতে পারে।তিনি বলেন, যে দেশে এত মানুষ চায় চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিটা দাঁড়াক, সে দেশে যদি ইন্ডাস্ট্রি এখনও না দাঁড়ায় বা আমরা যারা নীতিনির্ধারক পর্যায়ে আছি তারা যদি ঠিকমত কাজ না করি, তাহলে এটি লজ্জার বিষয়। আমাদের সকলের জন্যই লজ্জার বিষয়। ফারুকী বলেন, আমি ঘটনাচক্রে সংস্কৃতি উপদেষ্টা। কিন্তু আসলে তো আমি একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। আমি ক্ষুদ্র সময়ের জন্য এখানে আছি, দুইদিন পরে আবার চলচ্চিত্র নির্মাণে চলে যাব। আমাকে যদি প্রশ্ন করেন জুলাই অভ্যুত্থানের পরে দেশে নানা সংস্কার চলছে। তবে চলচ্চিত্রের কোনো সংস্কারের বিষয়ে ঠিকঠাক কাজ করা হয়েছে কিনা; আমার স্বীকারোক্তি হবে, না। বাংলাদেশের মন্ত্রণালয়ের বণ্টনও সঠিকভাবে হয়নি বলে মনে করেন ফারুকী।উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয় সংস্কৃতি বা চলচ্চিত্র দেখার জন্য তৈরি হয়নি। তারপরও তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে এগুলোকে রাখা হয়েছে। পৃথিবীর সব জায়গায় চলচ্চিত্র ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে একত্রে রাখা হলেও আমাদের দেশে তা করা হয়নি। চলচ্চিত্র জগতের সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য এখন পর্যন্ত এক জায়গায় নেই। ফলে এ বিষয়ে সমন্বিত কোনো উদ্যোগও নেওয়া যাচ্ছে না। চলচ্চিত্রের সংকট সমাধানে শিল্পী-কলাকুশলী বা অংশীজনদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সংকটের সমাধান নিয়ে রাস্তায় নামেন, আমাদের ঘেরাও করে কাজ করতে বাধ্য করেন। চলচ্চিত্রের সকল অংশীজনকে নিয়ে আওয়াজ তুলে সবগুলো দাবি বাস্তবায়ন করেন। এ ছাড়া সমাধান আসবে না। এখন পর্যন্ত চলচ্চিত্র জগতে বাংলাদেশে যা হচ্ছে, তা ব্যক্তি উদ্যোগে হচ্ছে। রাষ্ট্র কখনও কিছু দিতে পারেনি। সম্মেলনে আলোচনা করেন চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্য আকরাম খান, জনপ্রিয় গীতিকার ও  নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলী, নির্মাতা রায়হান রাফী, প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল, অভিনয়শিল্পী ইমতিয়াজ বর্ষণ, জান্নাতুল ফেরদৌসি ঐশী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিডিয়া সেলের সদস্য মাশরুর আলম প্রমুখ।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়