সংবাদের আলো ডেস্ক:পদ্মাসেতু হয়ে খুলনা-ঢাকা রুটের জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো।মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় খুলনা থেকে ৫৫৩ জন যাত্রী নিয়ে ট্রেনটির ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। যেটি তিন ঘণ্টা ৪৫ মিনিট সময়ে অর্থাৎ সকাল পৌনে দশটায় ঢাকার কমলাপুর রেলষ্টেশনে পৌঁছনোর কথা। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছেন, এখন থেকে প্রতিদিন ভোর ছয়টায় খুলনা থেকে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে এবং ঢাকা থেকে রাত আটটায় ছেড়ে এসে খুলনায় পৌঁছাবে ১১টা ৪৫ মিনিটে। তবে ট্রেনটির সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে সোমবার। আনুষ্ঠানিক যাত্রাকালে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসাইন বলেন, খুলনা-ঢাকা রুটের এ ট্রেনের ভাড়া নির্ধারণ হয়েছে শোভন চেয়ার ৪৪৫ টাকা, স্নিগ্ধা (এসি চেয়ার) ৮৫১ টাকা ও এসি সিট ১০১৮ টাকা। এটি আপাতত: চলবে। তবে পরবর্তীতে ভাড়া কমবেশি হতে পারে। রেলওয়ের খুলনা স্টেশন মাস্টার(চলতি দায়িত্ব) আশিক আহমেদ বলেন, জাহানাবাদ এক্সপ্রেস খুলনা থেকে ছেড়ে নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া জংশন, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী জংশন, ভাঙ্গা জংশন হয়ে ঢাকায় পৌঁছবে। শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রথম ট্রেনে খুলনা থেকে ৫৫৩টি অর্থাৎ শতকরা ৭০ ভাগ টিকিট বিক্রি হয়েছে। ট্রেনটিতে ১১টি যাত্রীবাহী এবং একটি মালবাহী বগি রয়েছে বলেও স্টেশন মাষ্টার জানান।
রেলওয়ের সূত্র মতে, জাহানাবাদ ট্রেনটি ঢাকায় গিয়ে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস নামে সাপ্তাহিক ছুটি(সোমবার) ছাড়া প্রতিদিন ঢাকা থেকে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে বেনাপোল পৌঁছবে দুপুর আড়াইটায়। আর বিকেল তিনটা ২৫ মিনিটে বেনাপোল থেকে ছেড়ে যশোর জংশন, নড়াইল, কাশিয়ানী জংশন ও ভাঙ্গা জংশন হয়ে ঢাকায় পৌঁছবে সন্ধ্যা সাতটায় মিনিটে। ঢাকা থেকে আবার জাহানাবাদ নামে খুলনায় ছেড়ে আসবে ট্রেনটি। এ ট্রেনের মোট আসন সংখ্যা ৭৬৮টি। তবে ট্রেনের যাত্রার সময় নির্ধারণের বিষয়টি পুন:বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন খুলনার যাত্রীরা। শহিদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, খুলনা থেকে একদিকে যেমন সকাল ছয়টায় ট্রেনটি ছেড়ে যাচ্ছে এতে অনেকেই যথা সময়ে আসতে পারবেনা বলে আশংকা করা হচ্ছে। তাছাড়া রাতেও পৌনে ১২টায় পৌঁছনোর পর অনেক দূরের যাত্রীর যেতে কষ্ট হবে। এজন্য হয় ট্রেনের সময় পুন:নির্ধারণ করা উচিত অথবা ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করে দিনে একাধিক ট্রেন করা যেতে পারে। এরশাদ আলী নামের এক গণমাধ্যমকর্মী বললেন, খুলনাবাসীর জন্য এটি একটি আনন্দের খবর। তবে খুলনা-ঢাকা রুটের চেয়ে ঢাকা-বেনাপোল রুটে কম সময় কেন লাগবে এটিও গবেষণা করা দরকার। রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, খুলনা-ঢাকা-খুলনা রুটে তিনটি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে দুটি আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেস। আর একটি নকশিকাঁথা কমিউটার ট্রেন চলাচল করে। নতুন করে যুক্ত হচ্ছে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটি। এর মধ্যে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া হয়ে খুলনায় যাচ্ছে। এতে ৮ ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে।
রেলের দেওয়া সময়সূচি অনুসারে, জাহানাবাদ এক্সপ্রেস সাপ্তাহিক বন্ধের দিন (সোমবার) ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৬টায় খুলনা থেকে ছেড়ে নোয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া জংশন, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী জংশন, ভাঙ্গা জংশন হয়ে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে। আর ঢাকা থেকে রাত ৮টায় ছেড়ে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে খুলনা পৌঁছাবে। একই ট্রেন রূপসি বাংলা এক্সপ্রেস নামে ঢাকা থেকে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে বেনাপোল পৌঁছাবে দুপুর আড়াইটায়। আর বিকেল সাড়ে ৩টায় বেনাপোল থেকে ছেড়ে যশোর জংশন, নড়াইল, কাশিয়ানী জংশন ও ভাঙ্গা জংশন হয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে। অন্যদিকে চিত্রা এক্সপ্রেস বঙ্গবন্ধু সেতু হয়েই চলাচল করছে। এই ট্রেনের সময় লাগে সাড়ে ৯ ঘণ্টা। এর বাইরে বেনাপোল এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া হয়ে যশোরের বেনাপোলে যায়। এতে সময় লাগছে সাড়ে ৭ ঘণ্টা। এ ছাড়া খুলনা-ঢাকা-খুলনা রুটে কমিউটার নকশিকাঁথা ট্রেন চলাচল করছে। এটি খুলনা থেকে রাত ১১টায় ছেড়ে যশোর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, ভাঙ্গা হয়ে ঢাকায় পৌঁছায় সকাল ৯টা ১০ মিনিটে। এতে ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। ফলে নতুন ট্রেনে সময় সাশ্রয় হবে অন্তত ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। এ ছাড়া সুন্দরবন ও চিত্রা ট্রেনের চেয়ে ভাড়াও কম লাগছে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনে।