সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ইজতেমায় যাওয়ার পথে যাত্রীবাহী নৌকায় ডাকাতি

সংবাদের আলো ডেস্ক:কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদে রৌমারী-চিলমারী নৌপথে ইজতেমার উদ্দেশে যাওয়া একটি যাত্রীবাহী নৌকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও বিভিন্ন মালামাল লুট করেছে। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে চিলমারী উপজেলার অষ্টমীরচর ইউনিয়নের ২০০ বিঘার চরের কাছে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। প্রায় ২১ বছর পর আবার নদীতে ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জানা গেছে, দুটি ডিঙি নৌকায় করে ১৬-১৭ জনের একটি ডাকাত দল এসে যাত্রীবাহী নৌকার গতিরোধ করে অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা কেড়ে নেয়। নৌকার মাঝি ও ভুক্তভোগী যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা সেতুর পূর্বপাড়ে ফজলুল করীম জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসায় তিন দিনব্যাপী ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে অংশ নিতে সকালে রৌমারী থেকে চরমোনাই অনুসারীরা নৌকায় করে রওনা দেন। নৌকায় ১৮ জন যাত্রী ছিলেন।নৌকাটি চিলমারী উপজেলায় নদীর মাঝপথে পৌঁছালে দুটি ডিঙি নৌকায় করে ১৬-১৭ জনের ডাকাত দল নৌকাটি ঘিরে ফেলে। এরপর “পিস্তল” ও দেশি অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে প্রত্যেকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে নদীতে ফেলে দেয়। নৌকার একটি শ্যালো ইঞ্জিন ভাঙচুর করে হ্যান্ডেল নদীতে ফেলে দেয়। নৌকায় থাকা এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ময়জুদ্দি বলেন, “আমি পেঁয়াজের ব্যবসা করি। ইজতেমায় অংশ নেওয়ার পর পেঁয়াজ কিনে ফিরছিলাম। আমার সঙ্গে থাকা পেঁয়াজ কেনার এক লাখ ৮০,৭০০ টাকা ডাকাতরা নিয়ে গেছে। আমারে মারধর করছে। সব যাত্রীর টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।” ডাকাতির বর্ণনা দিয়ে ময়জুদ্দি বলেন, “একজনের মুখ ঢাকা ছিল। বাকিদের মুখ খোলা ছিল। কিন্তু আমরা চিনতে পারি নাই। লোকগুলো মনে হয় বাইরের দূরের লোক। তাদের হাতে অস্ত্র ছিল। তারা প্রথমে মোবাইল আর শ্যালোর হ্যান্ডেল নিয়া নদীতে ফেলায় দেয়। কয়েকজনকে মারধর করে। আমরা জীবন বাঁচাইতে কিছু করতে পারি নাই।”নৌকার মাঝি সবুর মিয়া বলেন, “নৌকায় ১৮ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে একজন নারী। সবাই কুড়িগ্রামে ইজতেমায় অংশ নিতে যাচ্ছিলেন। পথে দুটি নৌকায় করে ১৬-১৭ জনের ডাকাত দল হামলা করে। সবার হাতে অস্ত্র ছিল। তাদের হাতে পিস্তল, ফালা, রামদাসহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। প্রথমে তারা মোবাইল আর ইঞ্জিনের হ্যান্ডেল কেড়ে নিয়ে নদীতে ফেলে দেয়। কয়েকজন যাত্রীকে মারধরও করে। সবার কাছে থাকা টাকা-পয়সা কেড়ে নেয়। আমার কাছে থাকা ২৫ হাজার টাকা, ২৫ লিটার ডিজেল এবং দুইটা হ্যান্ডেল ও পলিথিন নিয়ে তারা চলে গেছে।”

সবুর আরও বলেন, “ঘটনার পরে আরেকটা নৌকা থেকে হ্যান্ডেল নিয়ে নৌকায় থাকা আরেকটা ইঞ্জিন স্টার্ট দিয়ে রৌমারীতে ফিরে এসেছি।” পুলিশে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে মাঝি সবুর ও যাত্রী মইজুদ্দি বলেন, “এর আগে ২০০০ সালের দিকে নৌ-ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তখন পুলিশে অভিযোগ দিলেও কোনো লাভ হয়নি। শুধু শুধু কোর্টে গিয়ে উল্টা হয়রানির শিকার হয়েছি। এজন্য আর পুলিশে অভিযোগ দেইনি।” এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢুষমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশাহেদ খান বলেন, “খবর শোনার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের কাছে খোঁজখবর নিয়েছি। কিন্তু স্থানীয়রা কেউ কিছু বলতে পারছে না।” রৌমারী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা সহকারী উপ-পরির্দশক (এএসআই) এরশাদ আলম বলেন, “খোঁজ নিয়ে ডাকাতির ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। তবে বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি। কেউ অভিযোগ দেয়নি।”

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়