বুধবার, ২৩শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বকেয়া বেতন পাওনা এবং চাকুরী ফেরত পাওয়ার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

জাহিদুল খান সৌরভ, শেরপুর প্রতিনিধি: বকেয়া বেতন পাওনা এবং চাকুরী ফেরত পাওয়ার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে শেরপুর জেলা পরিষদ ডাক বাংলোতে একসময় অস্থায়ী ভিত্তিতে চৌকিদারি পদে চাকুরী করা রমজান আলী। বুধবার (১৬ অক্টোবর) শেরপুর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে রমজান আলী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০০৪ সালের ১৬ এপ্রিলে হতে শেরপুর জেলা পরিষদ ডাক বাংলোতে চৌকিদারি পদে চাকুরীতে আমার নিয়োগ হয়। নিয়োগ পেয়ে আমি নালিতাবাড়ী জেলা পরিষদ ডাক বাংলোতে যোগদান করি। আমি অত্যন্ত সুনাম ও সচ্চতার সাথে আমার দায়িত্ব পালন করে আসছিলাম। হঠাৎ ২০১৯ সেপ্টেম্বরে আমাকে চক্রান্ত ও হিংসামূলক ভাবে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়। মামলায় আমি যখন জেল হাজতে থাকি, তখন আমার সর্বর্মিণী ডাক বাংলো রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চালিয়ে যায়।

আমি ২২ দিন পর এসে নালিতাবাড়ী ডাক বাংলোতে রক্ষণাবেক্ষনের কাজ ফের করতে থাকি। আর মাসের পর মাস আমাকে তারা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে কাজ করিয়ে যায়। দীর্ঘদিন পরে যখন আমি জেলা পরিষদে নোটিশ দিই, আমাকে কেন বেতন- ভাতা দিচ্ছেন না। তারা আমাকে বেতন-ভাতা দেওয়া হবে, বলে আমাকে কাজ করতে বলে। আমি আমার সততার সাথে কাজ করে যাই। দীর্ঘদিন পর আবার আমি জেলা পরিষদে যাই বেতন-ভাতার জন্য। তখন নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন এ.জে.ডে. এম মোরশেদ। তিনি আমার টাকা পরিশোধ করার জন্য সপ্তাহ খানেক সময় নেন। সপ্তাহ খানেক আমি যখন জেলা পরিষদে বেতন-ভাতা উত্তোলন করতে যাই, তখন গিয়ে দেখি তিনি বদলী হয়ে গেছে। আর জানতে পারলাম, আমার বেতন-ভাতার জন্য বর্তমান নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মীকে নির্দেশ করে যায়।

কিন্তু উনি আমাকে বেতন-ভাতা কিছুই পরিশোধ করেন নাই। তখন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী আমার কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবী করেন। আমি টাকা দিতে পারি নাই বিধায় আমাকে হয়রানি করে এমনকি এখনো পর্যন্তও হয়রানি করে যাচ্ছে। এদিকে আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হলে, গত সালের ৭ জুলাই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী আমাকে উক্ত চাকুরীতে পুনঃনিয়োগের আদেশ দেন। আমি পুনরায় নিয়োগ পেয়ে নালিতাবাড়ীর জেলা পরিষদ ডাক বাংলোতে যোগদান করি। কিন্তু আমার গত ২০২৩ সালের ২১জুলাই জেবুন নাহার শাম্মী শেরপুর সদরের জেলা পরিষদ ডাক বাংলোতে বদলী করেন। আর এদিকে আমি শেরপুরে যোগদান করতে গেলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমার যোগদান পত্র গ্রহণ করেন নি। আমি কয়েকদিন অফিসে গেলেও আমার যোগদান পত্র গ্রহণ করা হয়নি। আমাকে অনুপস্থিত দেখিয়ে অন্যায় ও হিংসামূলক ভাবে কোনো প্রকার কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে তদন্ত না করে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে গত ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর হতে উক্ত পদের চাকুরী অব্যাহতি দেন।

আমি অব্যাহতি পেয়ে উচ্চ আদালতে মোকদ্দমা করি। আমাকে উচ্চ আদালত থেকে উক্ত পদে চাকুরীতে যোগদান ও গত ০৬/০৯/২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর হতে ২০২৩ সালের ৩০ মে পর্যন্ত যাবতীয় বকেয়া বেতন-ভাতাদি সহ আদেশ প্রদান করেন। উচ্চ আদালতের আদেশ মোতাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী আমাকে উক্ত পদে পুনরায় নিয়োগ দেন, আর আমাকে বদলীও করেন। এদিকে মামলাটিতে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিসহ আমার পুরো পরিবারের উপরে আক্রমণ করে এবং আমাকে চাকুরী ছেড়ে দিতে বলে। আমি চাকুরী ছাড়তে বাধ্য হই না বলে আমাকে নারী উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নিরাপত্তা প্রহরীর দায়িত্ব দেন। আমাকে উক্ত পদে যোগদান করতে দেয় নাই বিধায় আমি নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসককে অবগত করি।

তিনি আরও বলেন, আমি নালিতাবাড়ী ইউএনও  ও জেলা প্রশাসকের সুপারিশ নিয়ে আমার কর্মস্থানে যোগদান করতে যাই। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমার যোগদান পত্র গ্রহণ করেন নি এবং আমাকে অশ্লীল ভাষায় কথাবার্তা বলে ও আমাকে হুমকী-ধামকী দেয় এবং কাগজ দিয়ে ডিসির কাছে যেতে বলেন। তিনি ডিসির অনুমতি সে গ্রহণ করে না। পরে ভয়ে আমি বেড়িয়ে আসি। জেলা প্রশাসকের সুপারিশ আমার শরীরে ছুঁড়ে মারে এবং আমাকে খেসারত ভোগতে বলে, এমনকি আমাকে দেখে নেয়ার হুমকীও প্রদান করে । আমি পুনরায় সুপারিশ করলে, তিনি আমাকে আইনের ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যান। এদিকে আমার ৬টি কন্যা সন্তান নিয়ে অসহায় ভাবে দিনযাপন করছি। আমার কোনো বেতন-ভাতাদি এবং কর্মস্থলে যোগদান করতে দিচ্ছে না বিধায় আমি খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। আমি আমার চাকরি ফেরত চাই।

এবিষয়ে জানতে চাইলে শেরপুর জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী বলেন,এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।  রমজান যে চাকরী করে সেটি অস্থায়ী ভিত্তিতে। এই চাকরীর ধরন হলো কাজের বিনিময়ে টাকা। কিন্তু রমজান দীর্ঘদিন থেকে নিজ কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাই তাকে শোকজ করা হয়েছে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়