সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভারতীয় সব ব্র্যান্ডের লবণ ও চিনিতে পাওয়া গেছে প্লাস্টিক কণা

সংবাদের আলো ডেস্ক: সম্প্রতি একটি পরীক্ষায় ভারতের সব নামী ব্র্যান্ডের লবণ ও চিনির প্যাকেটে কিংবা খোলা লবণ এবং চিনিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি পরিমাণে প্লাস্টিক কণা পাওয়া গেছে আয়োডিনযুক্ত লবণগুলোতে। লবণগুলোতে বিভিন্ন রঙের পাতলা তন্তু আকারে প্লাস্টিক কণাগুলো ছিল।জানা গেছে,পরিবেশ গবেষণা সংক্রান্ত সংগঠন ‘টক্সিক লিঙ্ক’ পাঁচ ধরনের চিনি ও দশ ধরনের লবণ নিয়ে সমীক্ষা করেছিল।

মঙ্গলবার প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ্য করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘লবণ এবং চিনিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই গবেষণাটি পরিচালনা করেছে ‘টক্সিকস লিংক’ নামে একটি গবেষণা সংস্থা। এ ক্ষেত্রে সংস্থাটি ভারতের বাজারে পাওয়া যায় এমন—সাধারণ লবণ, রক সল্ট, সি সল্ট এবং খোলা লবণসহ অন্তত ১০ ধরনের লবণ পরীক্ষা করেছে। আর অনলাইন এবং স্থানীয় বাজারগুলো থেকে সংগ্রহ করা ৫ ধরনের চিনি নিয়ে পরীক্ষা করে তারা।

টক্সিকস লিংকের গবেষণায় বেরিয়ে আসে পরীক্ষা করা সবগুলো লবণ এবং চিনিতেই মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার উপস্থিতি ছিল। এসব মাইক্রোপ্লাস্টিক উপাদান পরীক্ষা করা লবণ ও চিনিতে ফাইবার, পেলেট, ফিল্মস এবং ফ্র্যাগমেন্টস রূপে বিরাজ করছিল। প্লাস্টিক কণাগুলোর আকার শূন্য দশমিক এক মিলিমিটার থেকে ৫ মিলিমিটার পর্যন্ত।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সবচেয়ে বেশি পরিমাণে প্লাস্টিক কণা পাওয়া গেছে আয়োডিনযুক্ত লবণগুলোতে। লবণগুলোতে বিভিন্ন রঙের পাতলা তন্তু আকারে প্লাস্টিক কণাগুলো ছিল।

টক্সিকস লিংক সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক রবি আগারওয়াল বলেছেন, আমাদের গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল মাইক্রোপ্লাস্টিকের বিদ্যমান বৈজ্ঞানিক ডাটাবেসে অবদান রাখা, যেন বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক-চুক্তি একটি টেকসই পদ্ধতিতে এই সমস্যাটির সমাধান করতে পারে।

টক্সিকস লিংকের সহযোগী পরিচালক সতীশ সিনহা বলেছেন, আমাদের গবেষণায় সব লবণ এবং চিনির নমুনায় যথেষ্ট পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে এবং মানব স্বাস্থ্যের ওপর মাইক্রোপ্লাস্টিকের দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যের প্রভাব সম্পর্কে জরুরি ও ব্যাপক গবেষণার আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লবণের নমুনায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের ঘনত্ব প্রতি কিলোগ্রামে ৬.৭১ থেকে ৮৯.১৫ টুকরো পর্যন্ত। অন্যদিকে চিনির নমুনাগুলোতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের ঘনত্ব প্রতি কিলোগ্রামে ১১.৮৫ থেকে ৬৮.২৫ টুকরা পর্যন্ত ছিল।

বিশ্বজুড়ে মাইক্রোপ্লাস্টিক এখন একটি ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের নাম। কারণ এই প্লাস্টিক স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ উভয়েরই ক্ষতি করতে পারে। প্লাস্টিকের এই ক্ষুদ্র কণাগুলো খাদ্য, পানি ও বাতাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

সাম্প্রতিক গবেষণায় ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড, এমনকি মায়ের দুধ এবং অনাগত শিশুর অঙ্গেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----