ফ্রান্সে নির্বাচনে বামপন্থিদের অবিশ্বাস্য জয়
সংবাদের আলো ডেস্ক: ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফায় জয় পাওয়া কট্টর ডানপন্থি দল ন্যাশনাল র্যালিকে হারিয়েছে দ্বিতীয় দফা ভোটে অবিশ্বাস্যভাবে জয় পেয়েছে বামপন্থি জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি)। তবে দ্বিতীয় দফা ভোটেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো দলই।বামপন্থি এনএফপি জোট ৫৭৭ আসনের পার্লামেন্টে ১৮২টি আসন দখল করেছে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থি জোট এনসেম্বল পেয়েছে ১৬৮টি। আর উগ্র ডানপন্থি দল ন্যাশনাল র্যালি (আরএন) ১৪৩টি আসন পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ম্যাক্রোঁ নিউ পপুলার ফ্রন্টকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন বলে আভাস পাওয়া গেছে।কিন্তু দেশটির ৫৭৭ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় ২৮৯ আসন পায়নি কোনো দলই।ফলে ফ্রান্সে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।রবিবার (৩০ জুন) প্রথম দফার ভোটে মেরিন লে পেনের ন্যাশনাল র্যালি জয় পাওয়ার পর, দ্বিতীয় দফার ভোটে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার আশায় ছিলেন। কিন্তু তা হয়নি। বরং দুই ধাপ নেমে তৃতীয় অবস্থানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।প্রথম দফার পর ন্যাশনাল র্যালির (আরএন) সংখ্যাগরিষ্ঠতা আটকানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। পরে ম্যাক্রোঁ ও বামপন্থি এনএফপি জোটের মধ্যে আপস হয় ‘টুগেদার ব্লক’ হয়ে কাজ করার।
আরএনের বিপক্ষে পড়া ভোটগুলো যেন সবার মধ্যে ভাগ হয়ে না যায় সেজন্য দ্বিতীয় দফার নির্বাচন থেকে দুই শতাধিক প্রার্থী নিজেদের প্রত্যাহার করে নেন। বামজোট ও ম্যাক্রোঁর দলের এই কৌশলেই তৃতীয় স্থানে ছিটকে পড়ে আরএন।তবে ফ্রান্সের বর্তমান বাস্তবতায় তিনটি দলের কেউই এককভাবে সরকার গঠন করতে পারবে না এবং এজন্য তাদের অন্যদের সমর্থনের প্রয়োজন হবে। নির্বাচন-পরবর্তী জোট গঠনে ফ্রান্স সাধারণত অভ্যস্ত নয়। যা জার্মানি বা নেদারল্যান্ডসের মতো উত্তর ইউরোপীয় সংসদীয় গণতন্ত্রে হয়ে থাকে।
এদিকে ম্যাক্রোঁর দলের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন সেজার্ন বলেছেন, তিনি মূলধারার দলগুলোর সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। কিন্তু জিন-লুক মেলেনচনের কট্টর-বাম ফ্রান্স আনবোড (এলএফআই) দলের সঙ্গে তিনি কোনো চুক্তি করতে চান না। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এডুয়ার্ড ফিলিপও কট্টর-বাম দলের সঙ্গে কোনো চুক্তি করতে রাজি নন।ফ্রান্সটির সংবিধান অনুযায়ী যদি কোনো চুক্তি না হয় তবে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ নতুন সংসদীয় নির্বাচন ডাকতে পারবেন না। সংবিধান অনুসারে তিনি কোনো দলকে সরকার গঠন করতে আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন। তবে তিনি যাকেই বাছাই করেন না কেন, তাকে জাতীয় পরিষদে আস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে হবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ আইন প্রণেতাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।