শনিবার, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

তালাকের জেরে স্ত্রীর শরীরে স্বামীর এসিড নিক্ষেপ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি: নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় স্বামীকে তালাক দেওয়ার ঘটনার জেরে এক গৃহিণীর শরীরে দাহ্য পদার্থ (এসিড) নিক্ষেপ করে দগ্ধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। দগ্ধ ওই গৃহিণীর নাম হাফসা আক্তার(৩২)। শুক্রবার (৫ জুলাই) রাত ৯ টার দিকে উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মণজাত গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হাফসা আক্তার ব্রাহ্মণজাত গ্রামের মৃত বজলুর রহমানের মেয়ে।
ঘটনার পর পর দগ্ধ ওই নারীকে প্রথমে স্থানীয় কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার ডা. এএসএম শরীফুজ্জামান তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ঘটনার খবর পেয়ে কেন্দুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
দগ্ধ হওয়া নারীর স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে উপজেলার মাসকা গ্রামের মৃত জুবেদ আলীর ছেলে হুমায়ূন কবীরের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় হাফসা আক্তারের। বিয়ের কিছুদিন পর হাফসা জানতে পারেন তার স্বামী শারীরিকভাবে অক্ষম। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। কলহের জেরে প্রায় সময়ই হাফসাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার নির্যাতন করতো স্বামী হুমায়ূন। স্বামীকে চিকিৎসা করার তাগাদা দিলেই হাফসার ওপর স্বামীর অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যেতো। এ অবস্থায় গত ঈদ উল আজহার পরদিন বাবার বাড়িতে চলে আসেন হাফসা এবং স্বামীকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) স্থানীয় কাজীর মাধ্যমে হাফসা তার স্বামী হুমায়ূনকে তালাক দেন। তালাক দেওয়ার জেরেই শুক্রবার রাত পৌণে ৮টার দিকে হাফসা রাতের খাবার খেতে বসলে ঘরের বেড়ার ফাঁক দিয়ে তার স্বামী হুমায়ূন এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠে। পরে চোখ, মুখ, গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থান দগ্ধ হওয়া হাফসা আক্তারকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বজনরা। দগ্ধ হাফসা আক্তার বলেন, আমার স্বামী বেশ কিছুদিন যাবত আমার শরীরে এসিড নিক্ষেপ করা এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। আমি তাকে তালাক দেওয়ার পর সে তাই করেছে।
আমি এর ন্যায় বিচার চাই। স্থানীয় উপজেলা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কল্যাণী হাসান জানায়, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি। তিনি আরো জানান, এমন জঘন্যতম ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।  এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক পিপিএম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়া মাত্র আইননানুক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়