উপহার হিসেবে পাওয়া সম্পদের উপর ৩০ শতাংশ কর দিতে হবে
সংবাদের আলো ডেস্ক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর আইনে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছে, যার ফলে স্বামী-স্ত্রী, পিতা-মাতা ও সন্তান ছাড়া যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উপহার বা দান হিসেবে পাওয়া সম্পদের উপর ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হবে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উপহার বা দান হিসেবে যেকোনো পরিমাণ সম্পদ গ্রহণ করলে নিয়মিত হারে আয়কর দিতে হবে, যা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। অর্থ আইনে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর’) এ পরিবর্তনের ফলে স্বামী-স্ত্রী, পিতা-মাতা ও সন্তান ছাড়া দানকারী এবং দানগ্রহীতা উভয়কেই কর দিতে হবে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একজন কর্মকর্তা বলেন, এতদিন অবৈধ আয়কে বৈধ করার যে সুযোগ ছিল, সেটি বন্ধ করার পাশাপাশি কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ বন্ধ করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। যদিও এটি বাস্তবায়ন সহজ হবে না বলেও মত দিয়েছেন তারা। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উপহার বা দান হিসেবে যেকোনো পরিমাণ সম্পদ গ্রহণ করলে নিয়মিত হারে আয়কর-৩০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে-দিতে হবে। তবে স্বামী, স্ত্রী, পিতা, মাতা ও সন্তানের মধ্যে কেউ দান করলে সেক্ষেত্রে কর দিতে হবে না।
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালক স্নেহাশিষ বড়ুয়া বলেন, ‘উপহার কর আইন ১৯৯০ অনুযায়ী, দানকারীর জন্য করছাড় পাওয়ার একটি তালিকা রয়েছে। কাজেই দানকারী দানকর প্রদান থেকে অব্যাহতি পেলেও আয়কর আইন ২০২৩-এর আওতায় তাকে কর দিতে হবে। দানকর আইনের ২ (৬) ধারা অনুযায়ী, ‘দান’ বলতে এক ব্যক্তি কর্তৃক অন্য কোনো ব্যক্তিকে স্বেচ্ছায় অর্থ বা অর্থমূল্যের প্রতিলাভ ছাড়া কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর বোঝাবে। বর্তমান আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি কর্তৃক কোনো আর্থিক বছরে করা ২০ হাজার টাকা মূল্যের দানের ওপর কোনো দানকর ধার্য হবে না।প্রস্তাবিত আইনে শুধু দানকারীই এই কর থেকে অব্যাহতি পাবেন। দানকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কর দিতে হবে, যা দানের পরিমাণের ২০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। তবে পুত্র-কন্যা, পিতা-মাতা এবং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দান করা হলে এসব উপহারের ওপরও কোনো কর দিতে হবে না। প্রস্তাবিত অর্থ আইন অনুসারে, ভাইবোন, তৃতীয় পক্ষ এবং প্রতিষ্ঠানসহ যারা দান পাবেন, তাদের সবাইকে করের আওতায় আনা হবে। এর ফলে যিনি দান করবেন তাকে কর পরিশোধ করতে হবে; একইসঙ্গে যিনি দান গ্রহণ করবেন, তাকেও নিয়মিত হারে আয়কর দিতে হবে।
নতুন বাজেটে আনা প্রস্তাব অনুযায়ী, আয়করের সর্বোচ্চ হার ৩০ শতাংশ। ফলে বড় অঙ্কের দান বা অনুদান করা হলে উভয় পক্ষের ওপর স্বাভাবিকভাবেই করের হারও বেশি হবে। প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম বলেন, ‘দানের সঙ্গে দুর্নীতির একটি সম্পর্ক আছে। সাধারণত দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত আয় দানের মাধ্যমে বৈধ করার চেষ্টা করা হয়। বর্তমানে যিনি দান করছেন, শুধু তাকেই কর দিতে হয়। তবে নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, যিনি দান গ্রহণ করবেন, তাকেও কর দিতে হবে।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।