শালা-দুলাভাইয়ের মাদক সাম্রাজ্যে অসহায় মিরপুরবাসী
ভিডিওতে দেখা যায়, একটি রুমের ভেতরে দলবল নিয়ে মরণনেশা ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করছেন মাদক সম্রাট খলিল। এসময় মাদক সেবনরত দলের অন্যান্য সদস্যের উদ্দেশ্যে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নানা পরামর্শ দিচ্ছেন দলনেতা খলিল। এলাকাবাসীর দাবি, একদিকে মিরপুরের শাহ্ আলী থানাধীন গুদারাঘাট ও আশপাশের এলাকায় মাদকের বিষাক্ত ছোবল শেষ করে দিচ্ছে তারুণ্যের শক্তি ও সম্ভাবনা। গুদারাঘাট এলাকার ওলি গলিতে ছড়িয়ে পড়েছে মরণঘাতী মাদক ইয়াবা ট্যাবলেট। মরণ নেশার বিস্তারে সমাজে একদিকে যেমন অপরাধ বাড়ছে, তেমনিভাবে তৈরি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা।
মাদকের সহজলভ্যতার কারণে ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনের অবক্ষয়, প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির অসামঞ্জস্যতা, হতাশা এবং মূল্যবোধের অভাবের সুযোগ নিয়ে মাদক তার বিষাক্ত হাত বাড়িয়ে দিয়েছে এলাকার তরুণ সমাজের প্রতি। অপরদিকে, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী খলিল ও সজিব অর্থাৎ শালা-দুলা ভাইয়ের সুবিশাল মাদক সম্রাজ্যে অসহায় হয়ে পড়েছেন স্থানীয় সাধারণ বাসিন্দারা। যতই দিন যাচ্ছে ততই এলাকায় নেশাগ্রস্থদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ নেশা ছড়িয়ে পড়ছে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে। মাদকের আগ্রাসনে এলাকার তরুণ সমাজ আজ বিপর্যস্ত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো এক ব্যাক্তি বলেন, খলিলের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জন সদস্যের সমন্বয়ে সুগঠিত এক কিশোর গ্যাং দিনরাত দাপিয়ে বেড়ায় এলাকাজুড়ে। এরাই ঘুরেফিরে ফোনে ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় নিষিদ্ধ মাদক মরণ নেশা ইয়াবা ট্যাবলেট পাঠকারী ও খুচরা বেচা-বিক্রি করেন। এলাকায় পান থেকে চুন খসলেই দলবল নিয়ে সেখানে হাজির হয়ে থানা পুলিশের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন কৌশলে ভয়ভীতি দেখিয়ে, এমনকি মারধোর করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেন খলিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার আরো এক বাসিন্দা বলেন, সোর্স নামধারী মাদক ব্যবসায়ী খলিলের নেতৃত্বেই মিরপুর-আশুলিয়া বেড়ীবাঁধের তামান্না পার্ক পর্যন্ত নিয়মিত চুরি ছিনতাই করে বেড়ায় এই কিশোর গ্যাংয়ের চিহ্নিত সদস্যরা। বিশেষ করে এই অঞ্চলে বেড়াতে আসা প্রেমিক-প্রেমিকা জুটিকে টার্গেটের মাধ্যমে তাদের জিম্মি করে সুকৌশলে তাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ও দামি জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন তারা।
স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এলাকাবাসী জানান, চিহ্নিত এ অপরাধী চক্রের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সময় এখনই। পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে নামধারী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও পুলিশের সোর্স পরিচয়ের আড়ালে চিহ্নিত মাদক সম্রাট ও কিশোর গ্যাং লিডার খলিলের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি লাভ করবে এলাকাবাসী। এ বিষয়ে শাহ্ আলী অফিসার ইনচার্জ মওদুদ হাওলাদার বলেন, আমাদের এখন কোনো সোর্স মেইনটেইন করার সুযোগ নেই। শুধু সোর্স পরিচয়েই নয়, যে কেউ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।