বৃহস্পতিবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বিয়ের রাতে মনির কাণ্ডে মর্মাহত স্বামী, স্ত্রী-শ্যালিকা সম্পর্কে বিস্ফোরক চিরকুট

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাভারের আশুলিয়ায় ভাড়া বাসা থেকে দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় স্বামীর শার্টের পকেট থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। এতে স্ত্রীর বড় বোনকে দায়ী করে নিজের কষ্টের কথা লিখেছেন স্বামী। সোমবার (২০ মে) আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ধনাইদ ইয়ারপুর ইউসুফ মার্কেট এলাকার মো. ফজলুল করিমের বাড়া বাসায় ওই ঘটনা ঘটে। পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর স্বামী আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। মৃতরা হলেন-মৃত রুহুল আমিন হাওলাদার (৪০) পটুয়াখালীর লোহালিয়া ইউনিয়নের কুড়িপাইকা গ্রামের হাকিম আলী হাওলাদারের ছেলে এবং মনি বেগম (২৭) বরগুনার আমতলী উপজেলার মো. সোবহান মৃধার মেয়ে। রুহুল আমিন পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী ও মনি বেগম গৃহিণী। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নরসিংহপুরের ইউসুফ মার্কেট এলাকায় রেহানা আক্তার নামের এক নারীর বাসায় ভাড়া থাকতেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও মনি বেগম দম্পতি।

দুপুরের দিকে রেহানা বাসা থেকে ভাড়াটেদের কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় জানালা দিয়ে বাসার ভেতরে উঁকি দেন। এ সময় তিনি খাটের ওপর মনিকে পড়ে থাকতে এবং রুহুল আমিনকে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে আশুলিয়া থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ দুটি উদ্ধার করে। বাড়ির মালিক ফজলুল করিমের স্ত্রী রেহানা আক্তার জানান, আলীমুদ্দিন মার্কেটে আমাদের কাপড়ের দোকান আছে। রুহুল আমিনেরও দোকান পাশাপাশি। সবাই রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে বাসায় চলে আসে। রোববার দিবাগত রাত ১১টা থেকে ১২টার দিকে তারা বাসায় চলে আসে। আমার স্বামী ঘরে আসার পর ঘরে তালা দিয়ে দেই আমি ওরাও দরজা বন্ধ করে দেয়। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন তারা সকালে ১১টায় ঘুম থেকে উঠে। সোমবার হঠাৎ ঘুম থেকে উঠতে দেরি হতে দেখে আমি বাহির থেকে ডাকাডাকি করি।

কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে বাসার জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখি পা দেখা যাচ্ছে। পরে আবারও ডাকাডাকি করলেও তারা যখন শুনেনি তখন ফের উঁকি দিয়ে দেখি রুহুল আমিন ঝুলন্ত অবস্থায়। নুরজাহান নামে আরেকজন জানান, আমরা একই সঙ্গে চাকরি করেছি। চাকরি করার সময় নিহত মনির বিয়ে হয় রুহুল আমিনের সঙ্গে। আমরা মনির স্বামীকে দেখেছি। আমি জানুয়ারি মাসে চাকরি ছেড়ে দেই, তারপর আর ওদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। চিরকুটে রুহুল আমিন লিখেছেন,বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। আমি মো. রুহুল আমিন অতি কষ্টের সঙ্গে জানাই থানা-পটুয়াখালী ও জেলা পটুয়াখালী। আমতলি নিবাসী ও বাওনা গ্রাম মো. ছোবাহান মৃধার ছোট মেয়ে মনিরার সঙ্গে আমার বিবাহ হয়। বিবাহের বয়স ৭ মাস। বিয়ের রাত থেকে মনিরার ফোনে ফোন আসতে থাকে। এই নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়।

একপর্যায়ে জানতে পারি ডিসার সুয়েটারে মনিরা ও তার বড় বোন ফাহিমা চাকরি অবস্থায় বিভিন্ন ছেলের সঙ্গে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয় দুই বোন। আমি বাঁধা দিলে তার বোন ফাহিমা বাসায় ডেকে নিয়ে আমাকে ভয় দেখায় যে এই নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তোকে মেরে ফেলব। ফাহিমার স্বামীও জেনে ফাহিমাকে ছেড়ে দিয়েছে। তারা অনৈতিক কাজ করে টাকা কামাই করে, চাকরি তাদের শো। আমাকে ভয় দেখিয়ে ইউসুফ মার্কেট কাপড়ের দোকান দিতে বাধ্য করায় সেখানে আমার ছয় লাখ টাকা নষ্ট করে। আর আমাকে ভয় দেখিয়ে দুই বোন অনৈতিক কাজ করে পরে আমি জানতে পারি মনিরার আরও দুইটা বিয়ে হয়েছে সেখান থেকে মনিরার ছাড়াছাড়ি হয়। তা আমার কাছে গোপন রাখে, পরে আমি জানতে পারি।

ফাহিমার কাছে আমি ২,৫০,০০০ টাকা ধার হিসেবে পাওনা আছি। টাকা চাইতে গেলে আমাকে বাসায় ডেকে নিয়ে অপমান করে এবং তার বোনকে আটকিয়ে রাখে। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী ফাহিমা, ফাহিমা। আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি’) এএফএম সায়েদ বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, স্ত্রীকে হত্যা করেই আত্মহত্যা করেছেন স্বামী। স্বামীর বুক পকেট থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়