ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় “রেমাল” আঘাত হানতে পারে যেখানে
সংবাদের আলো ডেস্ক: ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, চলতি মাসের শেষের দিকেই পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আছড়ে পড়তে পারে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। তারা বলছে, ২৫ মে-র পর যেকোনো সময় আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। তবে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হওয়ার আগ পর্যন্ত এর গতিবিধি ও প্রভাব সম্পর্কে এখনই কিছু জানাতে পারেনি বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়ার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মে মাসের স্মৃতি মোটেও সুখের নয়। ২০০৯ সালের ২৫ মে সুন্দরবন তছনছ করেছিল আইলা। ২০২০ সালের ২০ মে আছড়ে পড়েছিল আম্ফান। এবার মে মাসের শেষে ফের প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ যা মে মাসের শেষের দিকে উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, ‘সাধারণত মে ও জুন মাসে বঙ্গোপসাগরে সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়ে থাকে।
এটা বর্ষাপূর্ব ও বর্ষা-পরবর্তী সময়ে হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা আশঙ্কা করছি, ২০ তারিখের পরবর্তী সময়ে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে।’ সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী ২৪ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের বেশিরভাগ জেলায় বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।’ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত যদি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও উত্তর-সংলগ্ন আন্দামান সাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয় এবং উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে যায়, তাহলে সেটির সম্ভাব্য গন্তব্য হবে মিয়ানমার এবং সংলগ্ন বাংলাদেশ, যা পশ্চিমবঙ্গ থেকে অনেকটাই দূরে। ফলে পশ্চিমবঙ্গের ওপর ঘূর্ণিঝড়ের তেমন প্রভাব পড়বে না। কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমেরিকান ও ইউরোপীয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বিশ্লেষণ করে আশঙ্কা করা হচ্ছে-ঘূর্ণিঝড় রেমাল মে মাসের ২১ ও ২২ তারিখের মধ্যে লঘুচাপের শক্তি অর্জন করতে পারে।
মে মাসের ২২ ও ২৩ তারিখের মধ্যে নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপের শক্তি অর্জন করার সম্ভাবনা রয়েছে এবং মে মাসের ২৪ তারিখে পূর্ণঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি অর্জন করতে পারে।” তিনি বলেন,’ঘূর্ণিঝড় রেমাল যদি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্যের মধ্যবর্তী উপকূলে আঘাত করে, তবে স্থাল ভাগে আঘাতের সম্ভাব্য সময় হবে ২৫ মে সন্ধ্যার পর থেকে ২৬ মে সন্ধ্যার মধ্যে। পক্ষান্তরে, ঘূর্ণিঝড়টি যদি বাংলাদেশের বরিশাল ও খুলনা বিভাগ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মধ্যবর্তী স্থানের উপকূল দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করে, তবে সম্ভব্য সময় হবে ২৬ মে দুপুর ১২টার পর থেকে ২৭ মে সন্ধ্যার মধ্যে।”
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বাংলাদেশে উপরে বৃষ্টিপাত শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে ২৪ মে থেকে, যা ২৮ মে পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের উপর মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ২৫, ২৬ ও ২৭ মে। অপেক্ষাকৃত হালকা পরিমাণে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে মে মাসের ২৪ ও ২৮ তারিখে। মে মাসের ২৩ তারিখ থেকেই সমুদ্র উত্তাল শুরু হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’এর নামকরণ করেছে ওমান। আরবিতে এর অর্থ বালি। এই নামে ফিলিস্তিনের গাজা থেকে ১ দশমিক ৭ কিলোমিটার দূরে একটি শহরও রয়েছে।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।