পরিত্যক্ত সবজি থেকে পলিথিন তৈরি করলো ক্ষুদে বিজ্ঞানী
সংবাদের আলো ডেস্ক: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ক্ষুদে বিজ্ঞানী সাজ্জাদুল ইসলাম কলা গাছের তন্তুকে বিশেষায়িত করে প্লাস্টিক, কার্বন ও সিলিকন পণ্যের বিকল্প ব্যবহারযোগ্য পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরির ফর্মুলা আবিস্কার করেছে। একই সঙ্গে সে পঁচা বা অব্যবহৃত সবজীর শেতসার থেকে তৈরি করেছে পঁচনযোগ্য পলিথিন। তার দাবি এটি পরিবেশবান্ধব এবং অনেকটা সাশ্রয়ী। পলিথিনের জন্য সে ব্যবহার করেছে বাজারের পরিত্যাক্ত সবজি থেকে সংগ্রহকৃত শেতসার, অ্যাসিটিক এসিড ও গ্লিসারল। মোট দ্রবনের ২৫ শতাংশ গ্লিসারল ২৫ শতাংশ এসিটিক এসিড ও ২৫/৩০ শতাংশ পানি ও বাকিটা সবজির শেতসার। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ফল ও সবজি অপচয় হয়।
এ অপচয়কৃত শস্য থেকে প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহারযোগ্য পণ্য তৈরি করা হলে দেশের অর্থনীতিতে আসতে পারে বড় পরিবর্তন এবং কমে আসবে পরিবেশ দূষণ। আর কলাগাছ যেহেতু একবার ফল দেয়ার পর কেটে ফেলে দিতে হয়। তাই কৃষককে অল্প মূল্য দিয়ে তা সংগ্রহ করে এটা দিয়ে প্লাস্টিক, কার্বন ও সিলিকন পণ্যের বিকল্প ব্যবহারযোগ্য পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরি করা সম্ভব হবে।’ ইতোপূর্বে সাজ্জাদুল ‘বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা-২০২৪’ এ মৌলভীবাজার জেলা পর্যায়ে বছরের সেরা মেধাবী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। সে জানায়, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সে তার গবেষণা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।’ সাজ্জাদুলের বাবা একজন দরিদ্র কৃষক। তার বাবার পক্ষে তার গবেষণার খরচ চালানো সম্ভব নয়।
তাই তার এ কাজের উৎসাহ অর্থনৈতিক কারণে সামনের দিকে এগুচ্ছে না। এ মেধাবী ক্ষুদে বিজ্ঞানীকে সরকার কিংবা হৃদয়বান কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পৃষ্ঠপোষকতা করলে তার দ্বারা ভালো কিছু আবিস্কার আশা করেন তার শিক্ষকরা।’ শ্রীমঙ্গল সরকারী কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক বিজন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, যেহেতু এর প্রধান কাঁচামাল কলাগাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় এবং কলাগাছ সহজলভ্য তাই এটির ব্যবহারে গ্লাস ফাইবার ও কার্বন ফাইবারের প্রয়োগ কমবে।
এতে পরিবেশের উপর অপছনশীল প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার কমবে। সাজ্জাদুল ইসলাম জানায়, কলাগাছের তন্তু থেকে তৈরি এই কঠিন যৌগ তৈরি করতে তার সর্বোচ্চ ৬৫ ভাগ তন্তু দিলে এর মধ্যে রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রণ হবে। সে জানায়, তার তৈরি টাইলসের ওজন পায় ৩০০ গ্রাম। যার মধ্যে ২০০ গ্রাম কলাগাছের তন্তু ও হাইডোঅক্সাইড ৬০ গ্রাম ও রেজিন ৪০ গ্রাম। সে জানায় রেজিন ব্যবহার করে দীর্ঘ সময় ধরে যেন এটি না পঁচে এবং হাইডোঅক্সাইড রেজিনের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী অবস্থান প্রদান করে। সাজ্জাদুল শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের মহাজেরাবাদ গ্রামে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করেন।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।