‘চার বছর ধরে বিয়ের সানাই বাজে না ভারতের যে গ্রামে, কারণটাও জানুন’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভোটের সময় এলেই বোঝা যায় কত অদ্ভূত সমস্যায় জর্জরিত ভারতের মানুষ। এই যেমন বিহারের পূর্ব চম্পারনের প্রত্যন্ত ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দাদের এক মহা সমস্যা, বন্যায় তাদের সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায় প্রতি বছর। তারই জেরে গত চার বছর ধরে এলাকার যুবকদের বিয়েই হচ্ছে না। আসলে বছর বছর যদি বন্যা আসে আর সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়, তবে কি আর এলাকার ছেলেদের বিয়ে হয়’? এদিকে এসেছে লোকসভার ভোট। নেতারাও গ্রামে প্রচারে যাচ্ছেন। সেই ধারাবাহিকতায় বিজেপি-কংগ্রেসসহ বিভিন্ন দলের নেতারা ভোটের জন্য যাচ্ছেন চম্পারনেও ভবানীপুরেও। তখনই স্থানীয় যুবকদের একটাই আর্জি, এবার একটা ব্যবস্থা করুন। না হলে তো আর কোনো দিন বিয়েই হবে না।
ভবানীপুর গ্রামের অন্তত ৮০টি পরিবারে কার্যত সহায় সম্বলহীন অবস্থায় গন্ডক নদীর পাড়ে চলে আসে। ২০২০ সালের বন্যা তাদের সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। মোতিহারি থেকে প্রায় ২৫ কিমি দূরে এই জায়গাটি পড়ে। ওই গ্রামের মোহম্মদ সাবির নামে এক বাসিন্দা বলেন, ভোট নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। অন্যান্য কোনো সমস্যার কথা বলব। একের পর এক বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে। আমরা কোথায় যাবো এবার! গত চার বছরে গ্রামে কোনো সানাই বাজেনি। বিয়েই হয়নি কোনো যুবকের।’ এই যেমন আমারুল খাতুন। তার এখন বিরাট চিন্তা যে, তার ২৫ বছর বয়সের ছেলের বিয়ে হবে কী করে? রীতিমতো কান্নাকাটি করছেন তিনি।
আমারুল খাতুন বলেন, ‘চার চারটে বিয়ে ভেঙে গেল। কেউ মেয়ে দিতে চায় না। নদী আমাদের সব কেড়ে নিয়েছে। এখন সেই নদীর ধারে বাস করি। আমাদের কোনো জমিজমা নেই। আমাদের নিজেদের ঘরবাড়ি কিছু নেই। আমাদের জীবন একেবারে শেষ হয়ে গেছে।’ সূত্রের খবর, ২০২০ ও ২০২১ সালে একের পর এক বন্যায় ভবানীপুরবাসী সব হারিয়ে ফেলেন। কোনোরকমে নদীর উঁচু পাড়ে এসে তারা ঘর বাঁধেন।
কিন্তু সেখানেও সমস্যা। এভাবে ঘরছাড়াদের কাছে আর কে মেয়ে বিয়ে দেবে। সেক্ষেত্রে এখন ভোট এসেছে। কিন্তু একেবারে হতাশ এলাকার বাসিন্দারা। তারা বলেন, ২০২২-২৩ সালে আর বন্যা আসেনি। কিন্তু পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ। আতঙ্ক গোটা এলাকাকে গ্রাস করেছে। তার জেরে কেউ আর মেয়ে দিতে চায় না। মোহম্মদ আব্বাস নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘একটাই দাবি আমাদের জন্য জমির ব্যবস্থা করে দিন। আমরা সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চাই।’
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।