মদনে ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা
বিশেষ প্রতিনিধি: মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে নেত্রকোনার মদনে ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলায় ২১১টি পরিবারকে ভূমি ও গৃহ উপহার দেওয়া হয়েছে। গৃহহীন মানুষ পেয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই, হয়েছে
স্থায়ী ঠিকানা।
জীবন মানে এসেছে পরিবর্তন। দুই শতক জমির ওপর ঘর তার পাশে খালি জায়গায় করেছে সবজি চাষ। পূরণ হচ্ছে পুষ্টির চাহিদা। কষ্টের দিনগুলোর কথা ভুলে গিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করছে সদর ইউনিয়নের মদন দক্ষিণপাড়া গ্রামের আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ৭২টি পরিবার।
রোববার(১৭ জুলাই) সদর ইউনিয়নের মদন দক্ষিণপাড়ায় গড়ে তোলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পরিদর্শনকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার একে এম লুৎফর রহমান।
জীবনটাই দুঃখ-কষ্টের মধ্যে গেছে, মানষের জমিতে ঘর করে থাকছি; বর্ষার সময় মেঘবৃষ্টিতে ভিজছি। এমন একটি ঘরে থাকতা পারাম কোনো দিন স্বপ্নেও ভাবি নাই। এই অনুভূতি মদনের অসহায় গৃহিণী আনোয়ারা বেগমের।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়া ষাটোর্ধ্ব আনোয়ারা বলেন, এখন জমিসহ পাকাঘর পাইছি। এখন নিজের জমি আছে, ঘর আছে। পুকুর আছে, বাড়ির সামনে-পেছনে ফলের গাছ, সবজি গাছ লাগানোর ব্যবস্থা আছে, মনের ইচ্ছায় সব কিছু করতে পারতাছি। শেখ হাসিনার ঘর হাইয়া খুব খুশি আমরা। আল্লাহ শেখ হাসিনারে ভালা রাকুক এমন একটি ভালা ঘরে থাইকা এ দোয়াই করি।
স্বামী একটি কাঠ মেইলে কাজ করেন। এক সময় মদন বাজারে থাকতেন আনোয়ারা। সেখান থেকেও এলাকার মানুষ তাকে উচ্ছেদ করে দেয়। স্বামীর কোনো সহায়-সম্পত্তি ও মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। শেষ বয়সে এসে অবশেষে আনোয়ারার ঠাঁই পেয়েছে মদন উপজেলার সদর ইউনিয়নের মদন দক্ষিণপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প ২-এর আওতায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে নির্মিত ঘরে। সেখানে তিনি স্বামী সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন।
দেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এমন উদ্যোগ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মুখে হাসি ফোটাতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছে এমনই অনেক আনোয়ারা- জাহানারা, শারমিন।
পরিদর্শনকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার একে এম লুৎফর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় মোট ২১১টি পরিবারকে গৃহ ও দুই শতক জমিসহ দলিল দেওয়া হয়েছে।
এখানে আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা সম্বলিত প্রতিটি দুই কক্ষের ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। তাছাড়া আমার উপজেলাকে ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণার দ্বার প্রান্তে এসে পৌঁছেছি। চলতি জুলাই মাসের ২১ তারিখ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালের মাধ্যমে এ উপজেলাকে ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন। উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ৭টি স্পটে নির্মাণ করা হয়েছে এসব গৃহহীনদের ঘর। আমরা এই কাজ করতে গিয়ে সরকারের ৪২.২ একর খাস জায়গা উদ্ধার করেছি। যেগুলো অব্যবহৃত ছিল। অপদখলে ছিল। যদি ভূমিহীন খোঁজে পাওয়া যায় এর পরেও তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে।তিনি আরও বলেন, জনপ্রতিনিধি, সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং সুধি সমাজ সবাই আমাদের এই কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং সহায়তা করেছেন।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।