শুক্রবার, ২৫শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

১৫ আগষ্টের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক খুনিদের ধরে এনে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবী বুলবুলের

                            ১৫ আগষ্টের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক খুনিদের ধরে এনে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবী বুলবুলের - সংবাদের আলো

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতি‌নি‌ধিঃ ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল করেছে মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ । শুক্রবার (১৯শে আগষ্ট) বিকেল ৫ টায় উপ‌জেলার দোবিলা বাজারে, মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরমোহাম্মদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এম আতিকুল ইসলাম বুলবুল।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের হত্যাকারীদের মধ্যে যাদের বিচার বাঁকী আছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার কার্যক্রম সম্পুর্ন করার দাবি জানান।

তি‌নি আরও ব‌লেন, ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫ সালের এই দিনে ইতিহাসের নৃশংস ও মর্মস্পর্শী এক নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা হারি‌য়ে‌ছি হাজার বছ‌রের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী স্বা‌ধীন ব‌াংলার স্থপ‌তি ই‌তিহা‌সের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

আপনারা জা‌নেন, বীরত্ব, ত্যাগ, দৃঢ়প্রত্যয়, নেতৃত্বগুণ—একজন রাজনীতিক হিসেবে এর সব কটির সম্মিলন জাতি দেখেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে, যা সহজেই তাঁকে স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতার মর্যাদায় আসীন করেন। ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও বাঙ্গালীর হৃদয় থে‌কে তাঁ‌কে মু‌ছে ফেল‌তে পা‌রে‌নি।

বঙ্গবন্ধু তাঁর ক‌র্ম দি‌য়ে স্থান নিয়েছেন বাঙ্গালীর হৃদয়ের ম‌নি‌কোঠায়। তাই মৃত‌্যুর ৪৭ বছর প‌রেও বাঙ্গালী আজ গভীর শো‌কে শোকাহত। জা‌তি আজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে মহান নেতাকে ।
তি‌নি বি‌ভি‌ষিকাময় সেই দি‌নের আ‌লোকপাত কর‌তে গি‌য়ে ব‌লেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু ছাড়াও সেই রাতে তাঁর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে তাঁর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা কর্নেল জামিলউদ্দিন আহমেদ, এসবির কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনাসদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে নিষ্ঠুর ভা‌বে হত্যা করা হয়।

ওই কালরাতেই ঘাত‌কের আরেকটি দল বঙ্গবন্ধুর ভাগনে যুবলীগের নেতা শেখ ফজলুল হক মনির বাসায় হামলা চালিয়ে তাঁকে এবং তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকেও হত্যা করে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও তাঁর কন্যা বেবি, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় আবদুল নঈম খানকেও হত্যা করা হয়।
মহান আল্লাহর অ‌শেষ কৃপায় ওই সময় বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে অবস্থান করায় প্রা‌নে বেঁচে যান।

ঘাত‌কেরা শুধু হত‌্যা ক‌রেই ক্ষ‌্যান্ত হন‌নি, কুচ‌ক্রিমহল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিচারের পথ রুদ্ধ করে‌ছিল। এমনকি খুনিদের দেশের বাইরে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃতও করা হয়। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন জন‌নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর খুনিদের বিচার শুরু হয়। একই সঙ্গে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ও এই দিনে সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়। শুরু হয় ঘাতক‌দের বিচার।

১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। পরে উচ্চ আদালত ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এখন পর্যন্ত ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। একজন বিদেশে মারা গেছেন। পাঁচজন পলাতক র‌য়ে‌ছে। দ্রুততম সম‌য়ে পলাতক খু‌নি‌দের দে‌শে এ‌নে সাজা কার্যক্রমের দা‌বি ক‌রেন এ জনপ‌দের অগ্নীপুরুষ এই জননেতা।

তি‌নি ব‌লেন, জাতীয় শোক দিবস আমা‌দের শোক ও শ্রদ্ধায় স্বরন কর‌তে হ‌বে । এ মাস বাংলা‌দে‌শের অ‌ভিভাবক হারাবার মাস ! এ মাস আমা‌দের জনক হারাবার মাস। তাই এ মা‌সে কোন রকম আ‌মোদ ফু‌র্তি, কেরাম,দাবা, খে‌লে কিংবা নে‌চে গে‌য়ে হা‌সিঠাট্টার ম‌ধ্যে ব‌্যয় করা স‌মি‌চিন নয়।

এ মা‌সে সরকারি, বেসরকা‌রি ও দলীয়ভা‌বে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়। সেগু‌লো শ্রদ্ধাভ‌রে পালন কর‌তে হ‌বে।
তি‌নি ব‌লেন, দেশ আজ দুর্বার গ‌তি‌তে এগি‌য়ে যা‌চ্ছে। আমা‌দের প্রানপ্রীয় নেত্রী, বঙ্গবন্ধুর জেষ্ঠ কন‌্যা মাদার অফ হিউম‌্যা‌নি‌টি খ‌্যাত নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনার দৃঢ় নেতৃ‌ত্বে দেশে আজ উন্নয়ন দৃশ‌্যমান। এ উন্নয়নের ধারা‌কে অব‌্যাহত রাখ‌তে আপনারা জন‌নেত্রী শেখ হা‌সিনার হাত‌কে শ‌ক্তিশা‌লি করুন।

অন‌্যা‌ন্যের ম‌ধ্যে বক্তব্য রাখেন তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক কিসমত আলী দুলু , সদস্য কামরুজ্জামান রাজু, মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন , মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এরশাদ আদিব সহ বি‌ভিন্ন ওয়ার্ড পর্যা‌য়ের সহস্রা‌ধিক মু‌জিব প্রেমি জনতা।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়