সেই মোতালেব এবার কলম ছাড়াও খেয়েছেন লোহার সুচ-কুঞ্চী
উজ্জ্বল অধিকারী: গত বছর পেটের তীব্র ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোতালেব। ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসকরা একে একে তার পেট থেকে বের করেন ২৩টি কলম। তখন মোতালেব কথা দিয়েছিলেন আর কখনো কলম খাবেন না তিনি। সেই কথা রাখেননি মোতালেব। এবার খেয়েছেন কলম ছাড়াও লোহার লম্বা সুচ, প্লাস্টিকের ঘড়ি ও বাঁশের কুঞ্চী। বলছি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুরপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন মোতালেব (৩৬) এর কথা। ২০০০ সালে এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হন মোতালেব । এরপর থেকেই তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন।
চিকিৎসকরা আবারও দুইটি ধাপে তার পেট থেকে বের করেছেন তাঁতের কাজে ব্যবহৃত তিনটি লোহার লম্বা সুচ, একটি লম্বা বাঁশের কুঞ্চী, একটি প্লাস্টিকের ঘড়ির মতো বস্তু ও একটি কলম। গত সোমবার (৩রা জুন ও ৪ জুন মঙ্গলবার এই দুই দফায় এন্ডোস্কোপি সার্জারির মাধ্যমে তার পেট থেকে এগুলো বের করেন সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একদল দক্ষ চিকিৎসক। তবে এতো ধারালো বস্তু কীভাবে গিলেছেন মোতালেব! তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকেরা। মোতালেবের মা জানান , আমার ছেলে এলোমেলো ঘুরে বেরায় । ও যে আবারও কলম খাওয়া শুরু করেছে তা জানা ছিল না। গত মাসে হঠাৎ করে আবারও পেটের ব্যথা শুরু হলে হাসপাতালে নিয়ে আসি।
ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন আবারও কলম খেয়েছে মোতালেব। ওর চিকিৎসা করার মতো সামর্থ্য আমার নেই। সরকারি সহায়তা পেলে ছেলেকে ভালভাবে চিকিৎসা করাতে পারতাম। সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনসালটেন্ট এবং এন্ডোস্কোপি বিশেষজ্ঞ সার্জন ডা. মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, মোতালেব পিকা সিনড্রোম নামে মানসিক রোগে আক্রান্ত। এটি একটি ব্যতিক্রমী রোগ। যে কারণে তিনি কলম জাতীয় যা পাচ্ছেন কুড়িয়ে খাচ্ছেন।
এবারও কলম তো খেয়েছেনই সঙ্গে খেয়েছেন তিনটি লোহার লম্বা সুচ, একটি লম্বা বাঁশের কুঞ্চী ও একটি প্লাস্টিকের ঘড়ি জাতীয় বস্তু। এতো ধারালো বস্তু কীভাবে গিলেছেন তা চিন্তা করাও কষ্টসাধ্য ব্যাপার। প্রসঙ্গত, এর আগে গত বছরের মে মাসে পেটের তীব্র ব্যথা নিয়ে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা এন্ডোস্কোপি করে পেটের ভেতরে বেশ কয়েকটি কলম শনাক্ত করেন। পরে ডাক্তারদের প্রচেষ্টায় দুই দফা এন্ডোস্কোপি সার্জারির মাধ্যমে পেটের ভেতর থেকে একে একে বের করা হয় ২৩টি কলম।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।