মঙ্গলবার, ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

সিরাজগঞ্জে বেড়ানোর কথা বলে মোবাইলে ডেকে নিয়ে ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ, আটক ২

উজ্জ্বল অধিকারী: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা ও এনায়েতপুর থানার খুকনী ইউনিয়নের খুকনী পশ্চিম পাড়া গ্রামের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী (১৪) কে বেড়ানোর কথা বলে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে খুকনী উত্তরপাড়া গ্রামের লম্পট কাপড় ব্যবসায়ী হামজালা হোসেন (২৮) একটি আবাসিক বাড়ির ভাড়া কক্ষে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। নির্যাতনের শিকার শিশু মেয়েটি আশংকাজনক অবস্থায় সিরাজগঞ্জ শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি  হয়ে হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। সে খুকনী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী ও খুকনী পশ্চিম পাড়া গ্রামের মেয়ে। লম্পট ধর্ষক হামজালা খুকনী উত্তর পাড়া গ্রামের সিদ্দিক মুন্সির ছেলে।
গত ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এনায়েতপুর থানা পুলিশ বাড়ির মালেক মোতালেব মন্ডল (৫০) ও তার ছেলে আনিক মন্ডল (১৮) কে আটক করেছে। পুলিশ ও এলাকাবাসি জানায়, দেড়মাস আগে লম্পট কাপড় ব্যবসায়ী হামজালার মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। এরই সূত্রধরে হামজালে মেয়েটিকে প্রেমের ফাদে ফেলে বিয়ের প্রলোভনে এনায়েতপুর স্পার বাঁধে বেড়ানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার সকালে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে আগে থেকে ভাড়া করে রাখা এনায়েতপুর হাটখোলার উত্তরের মোতালেব মন্ডলের আবাসিক বাড়ির ভাড়া কক্ষে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এতে মেয়েটি অতিরিক্ত নির্যাতনের শিকার হয়ে তার গোপনাঙ্গ ফেটে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় বাড়ির কাছে নিয়ে ফেলে রেখে লম্পট হামজালা পালিয়ে যায়। পরিবারের লোকজন তাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে বাড়ি নিয়ে যায়। এরপর সেবা সুস্থতায় তার কিছুটা জ্ঞান ফিরে এলে সে তার বাড়ির লোকজনকে বিষয়টি খুলে বলে। এদিকে তার রক্তক্ষরণ কিছুতেই বন্ধ না হলে তাকে প্রথমে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তারপর বেলকুচি ও সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিলে তারা ফেরত দেয়। এরপর তার অবস্থার আরও অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম. মনসর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। এদিকে তার অবস্থা গুরুতর হওয়া সে এখন হাসপাতাল বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
এলাকাবাসী আরও জানায়, মোতালেব মন্ডল ও তার ছেলে অনিক মন্ডল প্রায় ২/৩ বছর ধরে তার আবাসিক বাড়ির কক্ষ এ অনৈতিক কাজের জন্য ঘন্টা চুক্তিতে ভাড়া দিয়ে অঢেল অবৈধ অর্থের মালিক বনে গেছেন। তারা আরও জানায়, মোতালেব ও তার ছেলে অনিক হাসপাতাল ও স্পারবাধ এলাকায় সকাল থেকে গভিররাত পর্যন্ত ঘোরাফেরা করতে থাকে।  উঠতি বয়সি তরুণ তরুণী ও কিশোর কিশোরীদের জুটিবেঁধে ঘোরাফেরা করতে দেখলে তাদের ঘরভাড়া দেয়ার প্রস্তাব দেয়। তারাও এ সুযোগ পেয়ে লুফে নেয়। ফলে মোতালেব ও তার ছেলে ওই এলাকায় এজন্য বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে। দূর দূরাত্ত থেকেও ছেলেরা তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে মেয়ে নিয়ে তার বাড়িতে চলে আসে।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা জানান, মেয়ের এ অবস্থা জানার পর একাধিক হাসপাতাল ঘুরে ফেরত আসার পর ওইদিন রাত ১২ টার দিকে শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করি। তারা ভর্তি করে না নিলে আমার মেয়েকে বাঁচানো যেতো না। তার শরীর থেকে অন্তত ৮ ব্যাগ রক্ত ঝড়েছে। পাশন্ড লম্পট হামজালা আমার অবুঝ শিশু মেয়েকে নির্দয় ভাবে নির্যাতন করেছে। এনঘটনায় মামলা করতে আমি এখন হাসপাতাল থেকে এনায়েতপুর থানায় যাচ্ছি। তিনি এ সময় কান্না জড়িত কন্ঠে তার মেয়ে নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার চান ও লম্পট হামজালার ফাঁসি দাবি করেন।
এ বিষয়ে এনায়েতপুর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটির খোজখবর নিয়েছি। এছাড়া তার সুচিকিৎসার বিষয়ে হাসপাতাল কতৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। এ বিষয়ে মামলা করতে মেয়েটির বাবাকে ডেকে পাঠিয়েছি। তিনি এলে মামলা নেওয়া হবে। এছাড়া  মূলহোতা হামজালা সহ তারা ৯ ভাই এ ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা যায়নি তবে তাদের গ্রেপ্তারে আমাদের চেষ্টা অব্যহত আছে। তিনি আরও বলেন এ ঘটনায় বাড়ির মালিক মোতালেব মন্ডল ও তার ছেলে অনিককে আটক করা হয়েছে। তবে মোতালেবকে গ্রেপ্তার দেখানো হলেও তার ছেলে ছাত্র হওয়ায় তার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়