সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু
উজ্জ্বল অধিকারী: ৪র্থ ধাপ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে বলরামপুর বাজারে মারামারির ঘটনায় এক পর্যায়ে মাসুদ রানা মাস্টার নামে স্কুল শিক্ষককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (৫ জুন) রাত্রী ১০টার দিকে কামারখন্দ উপজেলার বলরামপুর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে । এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাজমা খাতুন বাদী হয়ে কামারখন্দ থানায় ১৩ জন’কে উল্লেখ্য করে একটি হত্যা মামলার অভিযোগ দায়ের করছে।
নিহত মাসুদ মাস্টার রায়দৌলতপুর দক্ষিণপাড়া মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে মাসুদ রানা (৪৬)। মাসুদ শেলবরিষা বি.ইউ.কে উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (গণিত) ছিলেন। মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, মাসুদ রানা বিজয়ী প্রার্থীর মিছিল শেষ করে বলরামপুর বাজারের অপি জুয়েলার্সে দোকানে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। পরবর্তীতে আসামিগণ পূর্ব পরিকল্পিকভাবে এসে মাসুদ রানা’কে দোকান থেকে বের করে গালিগালাজ করতে থাকে।
এক পর্যায়ে একা পেয়ে এলোপাতাড়িভাবে কিলঘুষি মারতে থাকে। মাসুদ রানা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তখনি সে মাটিতে লুটিয়ে পরে।পরে তাকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রায় রাত্রী ১২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মাসুদ রানা’র ছোট ভাই সোহেল রানা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে নিজ এলাকার বলরামপুর বাজারে যাওয়ার পর স্থানীয় কয়েকজন একই এলাকার শিশির আকন্দ, প্রিন্স ও আমার ভাইয়ের উপর হামলা করে। আমার ভাই আগে থেকে ওপেন হার্ড সার্জারি করা থাকায় তার বুকে আঘাত পাওয়ার কারণে সে ওইখানে রাস্তার উপর পরে যায়।
শিশির আকন্দ জানান, আমরা চশমা মার্কার নির্বাচন করতাম আর ওরা তালা মার্কার নির্বাচন করতো। পরে গতকাল পূর্বশত্রুতার জের ধরে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের উপর এলোপাতাড়ি মারধর করে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি লুৎফর রহমানের লোকজন। মাসুদ মাস্টারকে বুকে আঘাত করলে সে ওইখানেই রাস্তার উপর পরে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী অপি জুয়েলার্সের মালিক রিপন সরকার জানান, আমার দোকানে আগে থেকেই মাসুদ মাস্টার সহ শিশির ও প্রিন্স বসে ছিল। পরে রাসেল রুবেল সহ কয়েকজন এসে তাদের দোকান থেকে বাইরে নিয়ে নির্বাচনে হারা জেতা নিয়ে ঝগড়ার এক পর্যায়ে শিশিরকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে মাসুদ মাস্টার ঘটনা থামাতে গেলে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়। তারপর সবাই চলে যাওয়ার ১০-১৫ মিনিট পর মাসুদ মাস্টার অসুস্থ হয়ে পরে। আমরা কয়েকজন তাকে পানি দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করি। সম্ভব না হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু তাহের জানান, মারামারির ঘটনার শেষ পর্যায়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে সরিয়ে দেই । পরে মাসুদ মাস্টার অসুস্থ হলে তাকে সহযোগিতা করে হাসপাতালে পাঠাই । তবে থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে আসামি লুৎফর রহমানের এ ঘটনায় জড়িত থাকার কোন প্রকার সত্যতা নেই।
এ বিষয়ে কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম জানান, লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রির্পোট ও বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তপূর্বক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।