সিকৃবিতে গাঁজা সেবনকালে ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক ৩
নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) গাঁজা সেবনকালে ৩ জনকে হাতেনাতে আটক করেছে শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ছাত্র। বুধবার (৪ ডিসেম্বর)। রাত দশটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ পরান হলের ১০২ নং কক্ষ থেকে গাঁজা সেবন অবস্থায় তাদেরকে আটক করা হয়। তাদের একজনকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে পারলেও বাকি দুজন সটকে পড়েন। অভিযুক্তরা হলেন হর্টিকালচার বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক, কৃষি অর্থনীতি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জনি সরকার এবং কৃষি অর্থনীতি অনুষদের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তন্ময়।
এদের মধ্যে জনি সরকার নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সিকৃবি শাখার উপ-স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদক। ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানান, রুমটিতে প্রায়ই গাঁজার আসর বসতো। ক্যাম্পাসের গাঁজা সেবনকারী চক্র এখানে যাতায়াত করতো। এর আগেও প্রভোস্ট স্যারকে এই ব্যাপারে জানানো হয়েছে। প্রভোস্ট স্যার তাদের সতর্ক করেছিলেন। এছাড়াও রুমে মাদক সেবন করতে বারণ করলে আব্দুর রাজ্জাক তার রুমমেটকে মারার হুমকি দিতেন। কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী রাসেল বলেন, কিছুদিন ধরে আমরা জানতে পেরেছি এই রুমে গাঁজা সেবন করা হয়। এর প্রেক্ষিতে আমরা প্রভোস্ট স্যারকে আগেও অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু তিনি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিতে পারেননি। আজ আমরা আবার জানতে পারি যে ঐ রুমে গাঁজা সেবন হচ্ছে। পরে আমরা গাঁজা সহ আব্দুর রাজ্জাক, জনি সরকার ও তন্ময়কে পাকড়াও করি। আজ বিকালেও প্রভোস্ট স্যার তাদের সতর্ক করেছেন এর পরেও তারা রাতে আসর বসিয়েছে।’ ঐ রুমের আবাসিক ছাত্র পারভেজ বলেন, রুমে গাঁজা সেবনে আমার সমস্যা হয়। এছাড়া রুমে গাঁজা সেবন করতে বারণ করলে আজ সে (আব্দুর রাজ্জাক)। আমাকে হল ছেড়ে চলে যেতে বলে। এছাড়া আমাকে তিন বার মারার হুমকিও দেয়। এদিকে শাহপরান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আজিজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জসিম উদ্দিন আহমেদ, ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহবায়ক ড. মোহাম্মদ কাওসার হোসেন ও কৃষি অর্থনীতি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাসুদ আলমের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে হর্টিকালচার বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক মাদক সেবনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন শাহপরান হলের প্রভোস্ট। এসময় হলে বিভিন্ন সময় গাঁজা সেবনকারী আরো ১৫ জনের কথা জানায় আব্দুর রাজ্জাক। এই ১৫ জনের মধ্যে রয়েছে কৃষি প্রযুক্তি অনুষদের মাস্টার্স শিক্ষার্থী ফারহান রাকিব, কৃষি অনুষদের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার মিশন, জাওয়াদ রাকিব, অলিক, নসীম। মাৎসবিজ্ঞান অনুষদের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আমির, তনয়, অনিক, কৃষিপ্রযুক্তি অনুষদের রাব্বি, সোহেল।
সাদি, ফিরোজ ও সৌরভ। হযরত শাহপরান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আজিজ বলেন, মাদক বহন ও সেবনের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা তিন জনকে (আব্দুর রাজ্জাক, তন্ময়, জনি সরকার)। আপাতত হল থেকে বহিষ্কার করবো। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির মাধ্যমে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর যে ১৫ জনের নাম বলা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।