সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাবেক এমপির শুল্কমুক্ত পাজেরো গাড়ি থেকে ৪৪২ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করেছে র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-১২) সদস্যরা। এ সময় সুজন হোসেন (২৯) নামে একজন মাদক ব্যাবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের গোলচত্বর এলাকা থেকে সাবেক এক সংসদ সদস্যের শুল্কমুক্ত পাজেরো গাড়িসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার সুজন চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানার এখলাছপুর গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে। এসময় মাদকদ্রব্য পরিবহনে ব্যবহৃত একটি পাজেরো জীপগাড়ি, ফেন্সিডিল ক্রয়-বিক্রয়ের কাজে ব্যবহৃত ১টি মোবাইল ফোন, ০২টি সিম কার্ড এবং নগদ ৫ হাজার ২৩২ টাকা জব্দ করা হয়।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে র‍্যাব-১২ হেডকোয়ার্টারে এক প্রেস কনফারেন্সে একথা জানান র‍্যাব-১২ অধিনায়ক মো. মারুফ হোসেন।
তিনি বলেন, বগুড়া হতে ঢাকাগামী একজন সাবেক প্রয়াত এক বিশেষ রাজনৈতিক দলের সংসদ সদস্যের শুল্কমুক্ত পাজেরো জীপ গাড়িতে করে ৪৪২ বোতল ফেন্সিডিল নিয়ে যাচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল দুপুর ২টার দিকে র‍্যাব-১২ এর একটি আভিযানিক দল সিরাজগঞ্জ জেলার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানাধীন গোলচত্বর মহাসড়কের পাঁকা রাস্তার উপর চেকপোস্ট বসায়। চেকপোস্ট চলাকালীন একটি পাজেরো জীপগাড়ি (যার রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ঢাকা মেট্রো-ঘ-০২-২৯১৫) আসতে দেখে গাড়িটি কে সংকেত দিয়ে থামানো হয়।

এসময় গাড়িতে থাকা আসামিকে আটক করা হয়। এসময় আটক করা ব্যক্তিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বীকার করে যে, পাজেরো গাড়ির পেছনে তেলের ট্যাংকির ভেতরে ফেন্সিডিল লুকানো আছে।
র‍্যাব-১২ অধিনায়ক মারুফ হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মাদক ব্যবসায়ী জিজ্ঞাসাবাদে জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ লোকচক্ষুর আড়ালে বড় বড় মাদকের চালান সিরাজগঞ্জ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে আসছিল। গ্রেপ্তারকৃত মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সিরাজগঞ্জ জেলার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা গ্রেপ্তারকৃতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, তিনি ছাড়াও তার সঙ্গে আরও ব্যাক্তি জড়িত আছেন। এছাড়াও যে সাবেক সংসদ সদস্যের গাড়িটিতে মাদক পাচার হচ্ছিল সেই ব্যাক্তি মারা গেছেন। তিনি বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের এমপি ছিলেন। গাড়িটি মাদিক ব্যাবসায়ীর কাছে কীভাবে আসলো এবং কারা কারা এর সাথে জড়িত তা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, এ ধরণের মাদক উদ্ধার অভিযান সচল রেখে মাদকমুক্ত সোনার বাংলা গঠনে র‍্যাব-১২ বদ্ধপরিকর। র‍্যাব-১২ কে তথ্য দিন মাদক, অস্ত্রধারী ও জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে অংশ নিন।

প্রেস কনফারেন্সে আরও উপস্থিত ছিলেন, র‍্যাব-১২ এএ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ্যাডজুটেন্ট) মো. গোলাম ফারুক, সহকারী পুলিশ সুপার (অপস অফিসার) মো. উসমান গণি প্রমুখ। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন ইলেকট্রনিক, অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।