সংসদ সচিবালয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান
সংবাদের আলো ডেস্ক: জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের বিদায়ের পরও জাতীয় সংসদের সচিবালয় দপ্তরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান উচ্চারিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সমিতির আহ্বায়ক এ এস এম আতাউল করিম ও সদস্য-সচিব মো. শামছুল হক স্বাক্ষরিত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে এ ক্ষোভ জানান তারা। প্রতিবাদলিপিতে জানানো হয়, সংসদ সচিবালয় কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ নামে দাবি আদায়ের জন্য গত ৯ জানুয়ারি অতিরিক্ত সচিবের (মানব সম্পদ) সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই সচিবালয়ের উপসচিব বেগম নাজমুন নাহার, তার স্বামী শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা ও সাবেক সচিবের একান্ত সচিব শেখ মনিরুল ইসলাম এবং লেজিসলেটিভ ড্রাফটসম্যান মুহাম্মদ হাসিবুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন একটি দল। সাক্ষাৎকালে তারা অতিরিক্ত সচিবের নিকট রেজিস্টার্ড কল্যাণ সমিতির বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে অসত্য তথ্য পেশ করে। সাক্ষাৎ শেষে বের হওয়ার সময় এবং প্রধান ফটকে সমবেত হয়ে প্রকাশ্যে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়। প্রতিবাদলিপিতে দাবি জানানো হয়, প্রকাশ্যে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান প্রদানকারী কর্মচারী এবং এদের প্রশ্রয় প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ বিষয়ে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সংসদের কিছু আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যায় মনিরুল ইসলাম। এরপর সেখান থেকে বের হয়ে জয় বাংলা স্লোগান দেয় তারা। পরে সিসিটিভির ফুজেট মুছে দেয় মনিরুলরা। এ বিষয়ে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়।’জয় বাংলা স্লোগান ও আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোসরদের পুনর্বাসনে শেখ মনিরুল ইসলামের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ভারপ্রাপ্ত সংসদ সচিবের পিএস হিসেবে ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর নিয়োগ পান শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা শেখ মনিরুল ইসলাম। যিনি জুলাই গণঅভ্যুথানের আগে বিগত সময়ে অবৈধ ৩টি নির্বাচনের পর ৩টি মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতির পিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির একান্ত সচিব হিসেবে ছিলেন। এ ছাড়া মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, তিনি আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপদ রাখতে ও ফ্যাসিবাদের নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তদবির বাণিজ্য করার অভিযোগও করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন শাখার গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং দুর্নীতির প্রমাণপত্র গায়েব করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। অভিযোগ রয়েছে, শেখ মনিরুলের দাপটে ৭/৮ জন সিনিয়রকে ডিঙিয়ে তার স্ত্রী নাজমুন নাহারকে সুপিরিয়র টাইপের বাসা বরাদ্দ এবং নিয়ম বহির্ভূতভাবে সিনিয়রকে ডিঙিয়ে সংসদের উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। স্বামী মনিরুলের ক্ষমতার দাপটে এসব অনিয়ম করা হয়। শেখ মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।