শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে বাড়ি ফিরলেন ‘মৃত’ ব্যক্তি!
সংবাদের আলো ডেস্ক: ভারতীয় হিন্দু পূরাণে মৃত ব্যক্তিদের নিয়ে নানা ধরনের উপকথা রয়েছে। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, মৃত ব্যক্তির আত্মা ঘোরাফেরা করে এবং মাঝেমধ্যে আত্মারা প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখাও করতে আসেন। তবে, এবার বাস্তবে ঘটেছে তেমনই এক ঘটনা। নিজের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে ফিরে এসেছেন এক ‘মৃত’ ব্যক্তি! ভারতীয় সংবাদ ও গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এক মৃত ব্যক্তির শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঠিক সেই সময়েই সেখানে হাজির হন ওই ‘মৃত’ ব্যক্তি। তবে, তিনি আত্মারূপে নয়; ফিরেছেন সশরীরেই। অর্থাৎ জীবিত অবস্থায়। এতে হকচকিয়ে গেছেন পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনা নিয়ে নেট দুনিয়াতেও তুমুল চর্চা।
জানা গেছে, ৪৩ বছরের বৃজেশ সুতহার গুজরাটের নরোদা এলাকার বাসিন্দা। পরিবারের দাবি, গেলো ২৭ অক্টোবর নিজের বাড়ি থেকেই আচমকা উধাও হয়ে যান তিনি। এরপর তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেন। কিন্তু, তাতে কোনও লাভ হয়নি। পরে পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় তাকে খোঁজ করেও সন্ধান পাননি। এমনকি পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়রি করেন পরিবারের সদস্যরা। বৃজেশ নিখোঁজ হওয়ার দুই সপ্তাহ পর কাছেই একটি সেতুর কাছে একটি মরদেহ উদ্ধার করা। এ সময় তার পরিবারের সদস্যদেরও অবহিত করা হয়। কিন্তু, পরিবারের সদস্যদের পক্ষে দেহ শনাক্ত করা সহজ ছিল না। কারণ, সেটি একেবারে পচে গিয়েছিল। কিন্তু, সেই দেহের গড়নের সঙ্গে বৃজেশের দৈহিক গড়নের মিল ছিল।
তাই পরিবারের সদস্যরা ধরে নেন, সেটি তারই লাশ। এরপর নিয়ম মেনেই সেই লাশটি দাহ করা হয়। চলে নানা শোক আয়োজন। কিন্তু শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দিন সেখানে এসে হাজির হন বৃজেশ স্বয়ং। প্রথমে ভয় পেলেও পরে তার পরিবারের সদস্যরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন এবং সকলেই এই ঘটনায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। তবে এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের জেলা থেকে অনেকেই বৃজেশকে দেখতে ছুটে আসেন। জানা গেছে, মধ্যবয়সী বৃজেশ বেশ কিছু দিন ধরেই হতাশায় ভুগছিলেন। তার প্রধান কারণ ছিল, আর্থিক অনটন। বেশ কিছু জায়গায় অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি। কিন্তু, তার কোনও সুফল পাচ্ছিলেন না। তা নিয়েই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি।
বৃজেশের এক আত্মীয় জানান, আর্থিক কারণে তিনি দীর্ঘদিন অবসাদে ভুগছিলেন। সে কারণে হয়তো তিনি বাড়ি ছেড়ে গিয়েছেন। বৃজেশ ফিরে আসায় আনন্দে বিহ্বল হয়ে তার মা বলেন, আমরা ওকে সব জায়গায় খুঁজেছি। পরে পুলিশ মরদেহ দেখালেও সেটি ঠিকমতো চেনা যায়নি। ফলে শ্রাদ্ধ-শান্তিও করে ফেলেছি। তবে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসায় পরিবার, আত্মীয়স্বজন খুশি হলেও বিপাকে পড়েছে পুলিশ। এখন প্রশ্ন হল,তাহলে ব্রিজেশ ভেবে কার লাশ দাহ করা হয়েছিল? এই নিয়েই নতুন করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। গত মাসে নিখোঁজ হওয়ার পর ব্রিজেশই বা কোথায় ছিলেন তাও এখনও জানা যায়নি।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।