সংবাদের আলো ডেস্ক: কুয়াশার চাদর মাড়িয়ে চলে এসেছে শীতকাল। এই ঋতুতে উৎসব অনুষ্ঠানের পালা চলতেই থাকে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে ত্বক ও চুলের নানা ধরনের সমস্যা। শীতে বাতাসে আর্দ্রতা কমে যাওয়ার কারণে চুল নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে।
এ সময় চুলের যত্ন নিতে হলে কিছু টিপস মেনে চলতে পারেন:
টুপি বা স্কার্ফ দিয়ে আপনার মাথা ঢেকে রাখুন:
শীতে টুপি ও স্কার্ফ দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন। ঠান্ডা বাতাস থেকে আপনার চুল রক্ষায় প্রথমে সিল্ক বা সাটিন স্কার্ফ দিয়ে এবং এর পরে তুলা বা পশমি কাপড় দিয়ে মাথা ঢাকুন। সে ক্ষেত্রে সিল্ক বা সাটিন হলো আপনার সেরা বিকল্প। কারণ সরাসরি তুলা বা পশমি কাপড় দিয়ে ঢাকলে চুলে ঘর্ষণ লাগতে পারে; এতে চুলের ডগা ফেটে যেতে পারে, এমনকি চুল ভেঙে যেতে পারে।
চুল পরিষ্কারের খুব সাধারণ একটি উপায় শ্যাম্পু করা। চুলের ধরন বুঝে শ্যাম্পু করতে হবে। অনেকে চুল না ভিজিয়েই সরাসরি শ্যাম্পু মাথায় দিয়ে দেন, এটা ঠিক নয়। শ্যাম্পু করার আগে চুল পানিতে ভিজিয়ে নিতে হবে।
ভেজা চুলে শ্যাম্পু ভালো কাজ করে। আর শ্যাম্পু করার সময় চুলের গোড়ার দিক থেকে শুরু করতে হবে। অনেকের ধারণা, প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে চুল বেশি পরিষ্কার থাকে। এটি ভুল।এতে চুলের আরো ক্ষতি হয়। সবচেয়ে ভালো হয় সপ্তাহে দুই বা তিন দিন চুল শ্যাম্পু করা। তবে প্রতিদিন যদি শ্যাম্পু করার প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করাই ভালো।
চুল শুকাতে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার না করা:
শুধু শীত নয়, স্ট্রেইটনার, হেয়ার ড্রায়ার ও চুলের স্টাইলিংয়ের অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম চুলের ক্ষতি করে সব সময়। এগুলোর ব্যবহারে আপনার মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে এবং খুশকি জন্ম দিতে করে। তাই শীতে এগুলোর ব্যবহারে সাবধান হতে হবে।
গরম পানি দিয়ে চুল না ধোয়া:
গরম পানি আপনার চুলের আর্দ্রতা ছিনিয়ে নিতে পারে, এটি চুলকে ভঙ্গুর করে তোলে এবং ভেঙে পড়ার প্রবণতা তৈরি করতে পারে। তাই গরম পানি দিয়ে চুল ধোয়া উচিত নয়।
তেলের বদলে ক্রিম:
শীতকালে তেল ব্যবহার করলে চুলে ধুলাবালি বেশি জমে। চুলে দ্রুত ময়লা জন্মে। তাই তেলের বদলে হেয়ার ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। যত কম পারা যায় চুলে হাত কম দেবেন, এতে চুল কম ময়লা হবে। চুল যত কম ময়লা হবে ধোয়ার প্রয়োজনীয়তা তত কম হবে।
এই ঋতুতে আপনার মাথার ত্বকে সাদা বা হলুদ রঙের ছত্রাক দেখতে পাবেন, এগুলো আপনার কাঁধে ঝড়ে পড়তেও পারে। শীতকালে প্রায়ই খুশকি হওয়ার অভিযোগ শোনা যায়। আর ছত্রাকের সংক্রমণ বা মাথার শুষ্ক ত্বক খুশকি সৃষ্টির প্রধান কারণ হতে পারে।তাই শীতে এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন যাতে স্যালিসিলিক অ্যাসিড, জিংক পাইরিথিওন, কেটোকোনাজল ও সেলেনিয়াম সালফাইডের মতো সক্রিয় রাসায়নিক রয়েছে; যেগুলো মাথার ত্বকের ছত্রাক ও খুশকি প্রতিরোধ করবে।
শ্যাম্পুর বিকল্প:
চুলে শ্যাম্পু করতে না চাইলে ১০-১৫টি গ্রিন-টি ব্যাগ পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। চুল পরিষ্কারের পাশাপাশি ঝরঝরে থাকবে। সপ্তাহে এক দিন সোডা দিয়েও চুল পরিষ্কার করতে পারেন। চুল ভেজানোর পর সোডা মেখে পাঁচ-সাত মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল নরম হয়, খুশকি দূর হয়। শীতকালে খুশকির সমস্যা বেড়ে যায়। তাই চুল ধোয়ার সময় এক মগ পানিতে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে মাথায় দিতে পারেন। এতে খুশকির সমস্যা দূর হবে।
অনেকে শীতে শ্যাম্পু করা একটা ঝামেলা মনে করেন। সে ক্ষেত্রে চুল পরিষ্কার রাখতে কিছু উপায় অবলম্বন করতে পারেন। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল ভালো করে আঁচড়ে নিন। গোসলের সময় অবশ্যই চুল পর্যাপ্ত পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। চুল পরিষ্কারে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে হবে। গরম পানি চুলের জন্য ক্ষতিকর।
রুক্ষতা দূর করতে মধু:
মধু ঘরোয়া টোটকায় খুবই উপকারী একটি উপাদান। চুল নিষ্প্রাণ হয়ে গেলে চুলের গোড়ায় মধু দিয়ে, একটি তোয়াল গরম পানিতে ভিজিয়ে মাথায় বেঁধে কিছুক্ষণ রেখে চুল ধুয়ে নিলে চুলের রুক্ষতা কমে। চুল মসৃণ ও সুন্দর হয়।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.