রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিক্ষার্থী না হয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির দায়িত্বে যারা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য (ভিসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। আজ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এর আগে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বেসরকারি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) প্রো-ভিসি ও ভারপ্রাপ্ত ভিসির দায়িত্বও পালন করছেন।

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৩০ জন বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তি এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর এ সংখ্যা ১৮ জন। এই সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী না হয়েও প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে নিয়োগ পাওয়ার নজির গড়লেন অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানসহ সাবেক একাধিক ভিসি।’

জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯১ সালে তিনি ইনস্টিটিউট অব পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট থেকে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন। তিনি কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যের ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৬ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তী সময়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয় ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা সম্পাদন করেন।

অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান ১৯৯২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি ১৯৯৪ সালে সহকারী অধ্যাপক, ১৯৯৯ সালে সহযোগী অধ্যাপক ও ২০০৫ সালে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। ২০০৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। নিয়াজ আহমদ খান ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) প্রো-ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গত ১৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি অধ্যাপক তানভীর হাসান পদত্যাগ করলে তিনি ভারপ্রাপ্ত ভিসির দায়িত্ব নেন।

স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম ভিসি ছিলেন অধ্যাপক ড. মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী। ১৩তম এই ভিসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৩ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বি.এ অনার্স এবং ১৯৪৪ সালে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর নিয়োগ পাওয়া ১৪তম ভিসি আব্দুল মতিন চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

তবে ১৫তম ভিসি অধ্যাপক ড. মুহম্মদ শামসউল হক ঢাবির শিক্ষার্থী ছিলেন না। তৎকালীন ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমান নাম: মৌলানা আজাদ কলেজ) থেকে ১৯৩১ সালে রাজনৈতিক অর্থনীতি ও রাজনৈতিক দর্শন বিভাগ হতে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৩৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।’

এছাড়া ১৬তম ভিসি ফজলুল হালিম চৌধুরী ও ১৭তম ভিসি এ কে এম সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তবে ১৮তম ভিসি অধ্যাপক এম শামসুল হকের শিক্ষাজীবন নিয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। এদিকে ১৯তম আব্দুল মান্নান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগ নিয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। আর ২০তম ভিসি মনিরুজ্জামান মিঞা রাজশাহী কলেজ থেকে স্নাতক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন।

২১তম ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ রাজশাহী কলেজ থেকে স্নাতক ও পরবর্তীতে ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। তাছাড়া ২২তম ভিসি অধ্যাপক শহিদ উদ্দিন আহমেদ শিক্ষাজীবন নিয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

২৩তম ভিসি অধ্যাপক এ. কে. আজাদ চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন বিভাগ থেকে বিএসসি ও এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ২৪তম ভিসি অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।’

২৫তম ভিসি অধ্যাপক এ. এফ. এম. ইউসুফ হায়দার হায়দার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে বিএসসি এবং এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ২৬তম ভিসি অধ্যাপক এস. এম. এ. ফায়েজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে এম.এস. ডিগ্রি লাভ করেন।

২৭তম ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ঢাকা কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতায় আরেকটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

২৮তম ভিসি অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর এবং ২৯তম ভিসি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল ভূতত্ত্ব বিভাগ থেকে বিএসসি (সম্মান’) এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।’

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়