সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, 'লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ, রংপুর'এর দ্বিতীয় নতুন ভবন এবং অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া কমপ্লেক্সের নির্মাণাধীন যাবতীয় কাজের পারিশ্রমিক হিসাবে মজুরীর অর্থ ১৪,৭২,৯৮২.০০ (চৌদ্দ লক্ষ বাহাত্তর হাজার নয়শত বিরাশি টাকা) পাওনা রয়েছে। বিগত ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ডিসেম্বর ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ও প্রাক্তন কমিটির নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বৈঠকে আলোচনার পর জানান, বিশেষ কারণে দুই দিনের জন্য চলমান ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকবে। দুই দিন পরই আবারও কাজ শুরু করা হবে।
কিন্তু পরবর্তীতে আর কোন কাজ শুরু না করে গত ১লা রমজান থেকে শুরু শ্রমিকদের পারিশ্রমিকের পাওনা মজুরির টাকা না দিয়ে দিনের পর দিন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ও বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ হয়রানি করাচ্ছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাবেক ও বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দের দু'গ্রুপের কাছেই ধর্ণা দিয়ে আমারা বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছি। সাবেক ও বর্তমান কমিটির অভ্যান্তরিণ কোন্দলে দু'পক্ষের কোনো পক্ষই শ্রমিকদের টাকার দায় নিচ্ছে না। এতে দিশেহারা হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন পাওনাদার শ্রমিকরা।
এবিষয়ে সাবেক কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী জানান, আমাদের ক্ষমতা ২০২৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল। আমাদের সময় পর্যন্ত নির্মাণ কাজের শ্রমিকদের পাওনা ব্যাতিত যাবতীয় বিল প্রদান করা হয়েছে। তবে শ্রমিকরা তাদের পাওনা টাকা আমাদের ক্ষমতাকালীন বিল ভাউচার জমা না করায় তাদের পাওনা টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। শ্রমিকদের দাবীকৃত টাকা পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি আরো বলেন, শ্রমিকরা যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন সেটি দৃশ্যমান। ভুলে হয়তো শ্রমিকরা আমাদের সময় বিল দাখিল করেননি, তা বর্তমান কমিটি যাচাই বাছাই করে তাদের দাবীকৃত পাওনা টাকা পরিশোধ করবে এটাই নিয়ম। একইভাবে একই কথা বলেন, তৎকালীন নির্মাণ কমিটির আহবায়ক এনামুল হক সোহেল ।
লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের নবাগত দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ডা. আকতারুজ্জামান বলেন, পূর্বের কমিটির কাজের দায় আমি নিতে পারিনা। পূর্বের কমিটি প্রতিষ্ঠানে যে কাজ করেছেন, তারা সমস্ত বিলের টাকা তুলে নিয়ে গিয়ে সেই টাকার দায় আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। তবে সাবেক ও বর্তমান কমিটির কোন্দলে নির্মাণ শ্রমিকরা তাদের পাওনা টাকা থেকে বঞ্চিত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, এ বিষয়টি আমলে নিয়ে ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কমিটি গত ১৯ মে আমাদের বিল প্রদানের আশ্বাসে তারিখ দেয়। যথারীতি ১৯ মে ২০২৪ তারিখে সভাপতির চেম্বারে সাক্ষাত করতে যায় শ্রমিকরা, কিন্তুসেদিন তিনি অফিসে বসেন নাই। তবে বিদ্যালয়ের হিসাব রক্ষকের মাধ্যমে জানতে পারে বর্তমান কমিটি তাদের টাকা দিবে না। এমতাবস্থায়, তারা নিরুপায় হয়ে মজুরির পাওনা টাকা আদায়ে ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তার জন্য রংপুর জেলা ও মহানগর প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও অদ্যবধি কোন প্রতিকার না পাওয়ায়। বর্তমানে অতি মানবেতর জীবন-যাপন করছে শ্রমিকরা।