রৌমারীতে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিনে মুসলিমরা
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের গয়টা পাড়া গ্রামে মুসলমানরাই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর যীশু খ্রিস্টানের জন্মদিন স্বরনে ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন পালন করেছেন। শিশু নারি পুরুষরা সমবেত প্রার্থনায় খ্রিস্টান উপাসালয়ে (গির্জা) মিলিত হয়ে আগামী দিনের সুখের জন্য বিশেষ প্রার্থনা ও আলোচনা করেন ভক্তরা। বুধবার ২৫ ডিসেম্বর উপজেলার গয়টা পাড়া গ্রামে সকাল থেকে সারাদিন ব্যাপী উৎসব শেষে এলাকার শিশু বাচ্চাদেরকে উপহার হিসাবে খাদ্য দ্রব্যসহ বিভিন্ন ধরণের উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। গয়টা পাড়া হাউজ চার্চ অব বাংলাদেশ শৌলমারী। তোমরা যারা ক্লান্ত ও বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছ, তোমরা সবাই আমার কাছে এসো, আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব এই প্রতিপাদ্যের উপর এলাকার অবুঝ, অশিক্ষিত দরিদ্র মুসলমানদেরকে নিয়ে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রায় ৩ ঘন্টাব্যাপী ১০০ থেকে দেড়শত মহিলা শিশু ও পুরুষদেরকে নিয়ে আলোচনা করা হয়। এসময় গির্জা প্রতিষ্টাতা হাজ্বি জয়নাল আবেদীন ও তার ছেলে সাদ্দাম হোসেন আলোচনায় উল্লেখ করেন, হযরত বিবি হাওয়া ও আদম (আঃ) এর জীবনী নিয়ে এক পর্যায়ে ইসা (আঃ) আল্লাহর ছেলে বলে উল্লেখ করেন। তারা আরো বলেন, যিশু খৃষ্ট ছাড়া কেউ বেহেস্তে যেতে পারবে না। এমন উৎভট কথা বলে তাদেরকে ভুলিয়ে ভালিয়ে এসব কথা বলে। তাদেরকে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীতে ধাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে । আলোচনা শেষে শিশুদেরকে বিস্কুট, খেলনাসহ বিভিন্ন ধরনের উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন। এলাকার অবুঝ অশিক্ষিত মহিলাদেরকে বড়দিন উৎসব সম্পর্কে বললে তারা বলেন, এটা তো মুসলমানদের একটি বড়দিন। এখানে ভালো ভালো শিক্ষা দেয়। আমাদের শুনতে ভালো লাগে। তাই আমরা প্রায় প্রতি রবিবার করে এ আলোচনা শুনতে আসি। চার্চ পালক শফিয়ার রহমান মন্টু বলেন, আমি দীর্ঘ তিন বছর যাবত চার্চের পালক হিসেব দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমাদের যীশু খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হিসাবে গ্রহন করেছি। আমাদের এ ধর্ম ভালো লাগে। আজ যীশু খ্রিস্টান জন্মদিন স্বরনে বড়দিন হিসাবে এলাকার শিশু, মহিলা পুরুষ নিয়ে দিনটি উৎসব হিসাবে পালন করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হাজ্বি জয়নাল আবেদীন বলেন, ২৫ ডিসেম্বর যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন স্বরনে আজ উৎসব হিসেবে পালন করা হচ্ছে। আমি এ ধর্ম গ্রহন করেছি এবং আমি নিজেই প্রচার করি। এ ধর্ম আমার ভালো লাগে। কোরাআনও পড়ি কিতাবুল মোকাদ্দেস ও বাইবেলও পড়ি। আমরা বেশ কয়েকটি আয়াতে পেয়েছি ইসামসিহ তিনি নাযাতদাতা। আরো কিছু আয়াতে পেয়েছি, ইসামসিহ ছাড়া আল্লাহর কাছে কেউ যেতে পারবে না। আমরা ১০ টি পরিবারের প্রায় ৮০ জন মানুষ এর সাথে জরিত রয়েছি। শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, গতকাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার গির্জাটি দেখার বিষয়ে মোবাইলে কথা বলেছিল। আজ বড়দিন হিসাবে একটু দেখতে গিয়েছিলাম। অফিসার ইনচার্জ লুৎফর রহমান বলেন, বড়দিনের উৎসব পালন উপলক্ষে সাবির্ক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এসআই খালেকুল বাদশাহসহ দুই কনষ্ট্রবল ও গ্রাম পুলিশ শাহজাহান, হোসেন আলী ও জহির উদ্দিন দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী আনিসুল ইসলাম বলেন, রৌমারীতে গির্জা রয়েছে জানতাম না। তাই গতকাল মঙ্গলবার দেখতে গিয়েছিলাম।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।