সংবাদের আলো ডেস্ক: আজ সোমবার, ১০ জুন। বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় আজ প্রকাশিত কিছু খবরগুলোর মধ্যে গুরুত্ব পেয়েছে কোরবানির পশু, ঋণে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বাজেটের সবচেয়ে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসাবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্র’সহ অন্যান্য খবরগুলোর গুরুত্ব পেয়েছে। সেসব খবর থেকে কিছু আলোচিত খবরের কিছু অংশ তুলে ধরা হলো: (১) নয়া দিগন্তর: ৯ মাসে অর্ধেক বাজেটও বাস্তবায়ন করা যায়নি বাজেট প্রসঙ্গে এই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) সংশোধিত বাজেটের মাত্র ৪৬ শতাংশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। যদি সংশোধিত বাজেটের পুরো বাস্তবায়ন করতে হয় তবে তিন মাসে ৮৩ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা খরচ করতে হবে, যা অসম্ভব বলে ধরে নেয়া যায়।
বাজেট উপাত্ত অনুযায়ী, সংশোধিত বাজেটে সার্বিক ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে দুই লাখ ৩৬ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ৯ মাসে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা (এটি জিডিপির দশমিক নয় শতাংশ)। আবার চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল চার লাখ ১০ হাজার টাকা কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। অথচ অর্থ বিভাগের হিসাব মতে, বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে এনবিআরের আওতাধীন রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৪৯ হাজার ৪০৭ কোটি টাকায়। যা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার ৬০ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
(২) প্রথম আলো: খুনের পর আওয়ামী লীগ নেতার ফোনে ছবি পাঠানো হয় এমপি আনার হত্যা রহস্য নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতায় খুনের পর সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের ছবি পাঠানো হয় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা কাজী কামালের মুঠোফোনে। প্রথমে তার ওপর চেতনানাশক প্রয়োগ করা হয়। এরপর বালিশচাপা দেওয়া হয়। পরে তাঁর পোশাক খুলে ছবি তোলেন খুনিরা। সেই ছবি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাঠানো হয়। চরমপন্থী নেতা শিমুল ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা কামালের কাছে ওই ছবি পাঠিয়েছেন বলে সূত্রের বরাতে প্রথম আলো জানিয়েছে। খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজে যুক্ত ছিলেন শিমুল। তিনি অপরাধ স্বীকার করে ঢাকার আদালতে গত সপ্তাহে জবানবন্দি দিয়েছেন।
আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে ঝিনাইদহের আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামালের নাম এসেছে। এদিকে সংসদ সদস্য খুনের ঘটনায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা কাজী কামালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল রোববার আদালতের মাধ্যমে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি। (৩) কালের কণ্ঠ: এবার চাহিদার চেয়ে পশু বেশি কোরবানির পশু নিয়ে প্রধান এই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, চলতি বছরে চাহিদা রয়েছে এক কোটি সাত লাখ কোরবানির পশুর। কিন্তু সারা দেশে এক কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। ফলে চাহিদার চেয়ে ২২ লাখ ৭৮ হাজার অতিরিক্ত গবাদি পশু প্রস্তুত রয়েছে। চাহিদা অনুসারে বিক্রি না হলে সংখ্যাটা আরো বাড়তে পারে। এবারে বেশিসংখ্যক কোরবানির পশু প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। পশু পালনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবার পশুর দাম কিছুটা বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কৃষি অর্থনীতিবিদদের মতে, হিট স্ট্রোকে হাজার হাজার গরু-ছাগল, মহিষ ও ভেড়া অসুস্থ হয়েছে। এতে বাড়তি খরচ হয়েছে। এতে পশুগুলোর ওজনও কমেছে। পশুখাদ্যের উৎপাদন খরচ ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে অর্থনৈতিকভাবে মধ্যবিত্ত শ্রেণি চাপে থাকায় পশু বিক্রি কম হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। এ নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা রয়েছে খামারিদের মধ্যে। প্রতিবছরের মতো এবার অনলাইনে বেচাকেনায় জোর দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরে অনলাইনে বেচাকেনা ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। (৪) সমকাল: রাত নামলেই সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে চোরাই গরুর পাল কোরবানির পশু চোরাই পথে আনা নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে সীমান্তের কাঁটাতার, নদী আর পাহাড় সবকিছু একাকার করে ভিনদেশের গরু মিশে যাচ্ছে কোরবানির হাটে।
এর পেছনে স্থানীয় রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি সন্ত্রাসী ও প্রশাসনের কিছু ব্যক্তি জড়িত থাকায় চোরাচালান চক্রটি বেশ শক্তপোক্ত ও অপ্রতিরোধ্য বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। মূলত বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের কালাচান্দিয়ায় রাতের আঁধারে সীমান্ত দিয়ে গরুর পাল বাংলাদেশের ঢুকতে দেখা গিয়েছে। সীমান্ত ডিঙ্গিয়ে কিছুদূর এগোতে প্রস্তুত ট্রাক। এসব ট্রাকে করে গরু তুলে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে। শুধু বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি নয় কোরবানীর ঈদ সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন সীমান্তে চোরাই পথে গরু আনছে বড় একটি চক্র। এতে সরকার হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব। কোরবানির সময় ভারত মিয়ানমার থেকে গরু আসবে না, সরকারের এমন ঘোষণায় আশায় বুক বেঁধেছিলেন খামারিরা।
এখন সীমান্ত দিয়ে দেদারসে গরু ঢোকায় লোকসানের শঙ্কায় নিরাশ তারা। যদিও প্রশাসনের দাবি ভারত ও মিয়ানমার থেকে গবাদি পশুর অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নেওয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। এদিকে গরু পাচারের কারণে সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন খামারের পশুর শরীরে নানা রোগ ছড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ খামারিদের। এসব পশুর কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা না হওয়ায় এতে দেশের প্রাণিসম্পদ খাতে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। (৫) যুগান্তর: ঘোষিত পদক্ষেপে লক্ষ্য অর্জন নিয়ে শঙ্কা এদিকে বাজেট বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এবারের বাজেটের সবচেয়ে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসাবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
নতুন অর্থবছরে ৬ দশমিক ৫ শতাংশের ঘরে মূল্যস্ফীতি নামিয়ে আনতে প্রস্তাবিত (২০২৪-২৫) বাজেটে তিনটি পদক্ষেপের ঘোষণা দেন তিনি। এগুলো হচ্ছে-ঘাটতি বাজেট কমিয়ে আনা, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ এবং সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচি অব্যাহত রাখা। এছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চার দশমিক ছয় শতাংশ ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি ধরে প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা দিয়েছেন। চলতি বাজেটে ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে সাত দশমিক ৫৪ শতাংশ। অর্থনীতিবিদদের মতে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ।