স্টাফ রিপোর্টার: রংপুরে আঞ্চলিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় রংপুর পর্যটন মোটেল কনফারেন্স হলরুমে কৃষি মন্ত্রণালয়ের "প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফরনিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ” (পার্টনার) কর্মসূচির আঞ্চলিক কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন, কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস।
প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, কৃষি মন্ত্রনালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার। বক্তব্য রাখেন, বিএডিসির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ এনডিসি, ড. শাহ মোঃ হেলাল উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব, কৃষি মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবির, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মাহবুবুল হক পাটওয়ারী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক সরেজমিন উইং পরিচালক মোঃ তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. সাবিনা ইয়াসমিন, কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আফতাব হোসেন, পার্টনার কর্মসুচি সমন্বয়ক মোঃ মিজানুর রহমান, কর্মসুচির রংপুর অঞ্চলের সিনিয়র মনিটরিং অফিসার অশোক কুমার রায় প্রমূখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয় এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ।
উল্লেখ্য, বর্তমান কৃষিকে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য টেকসই ও নিরাপদ বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরের মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কৃষি খাতে নেওয়া হয়েছে এই কর্মসুচি। এ প্রকল্পের ব্যয় প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা। এটি কৃষির উন্নয়নে এ যাবৎ পর্যন্ত নেওয়া সবচেয়ে বড় প্রকল্প।
পার্টনার প্রকল্পটি পাঁচ বছরে বাস্তবায়ন করা হবে। ৬৪ জেলার ৪৯৫ উপজেলায় পার্টনার বাস্তবায়িত হবে জুলাই ২০২৩ থেকে ২০২৮ সালের জুন সময় সীমায়। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৯১০ কোটি টাকা। এরমধ্যে সরকারি অর্থায়ন একহাজার ১৫১ কোটি টাকা ও প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বিশ্বব্যাংক ও ইফাদ দিচ্ছে ৫ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মন্ত্রণালয়ের অধীন ৭টি সংস্থা তাদের নির্ধারিত কার্যক্ষেত্রে প্রোগ্রামটি বাস্তবায়ন করছে যেখানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর লিড এজেন্সির দায়িত্ব পালন করছে। পাশাপাশি কৃষি মন্ত্রণালয়ের আরও ৮টি সংস্থা এই প্রোগ্রামে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে কাজ করছে। এই মেগা প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে উত্তম কৃষি চর্চা সার্টিফিকেশনের মাধ্যমে ৩ লাখ হেক্টর ফল ও সবজি আবাদি জমি বৃদ্ধি, জলবায়ু অভিঘাত সহনশীল উচ্চফলনশীল নতুন ধানের ও ধান ছাড়া অন্য দানাদার ফসলের জাত উদ্ভাবনসহ মোট ৪ লাখ আবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি, উন্নত ও দক্ষ সেচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একলাখ হেক্টর নতুন আবাদি জমি সেচের আওতায় আনয়ন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দেশব্যাপী দুইকোটি ২৭ লাখ ৫৩ হাজার ৩২১টি কৃষক পরিবারকে ‘কৃষক স্মার্টকার্ড’ দেওয়ার মাধ্যমে ডিজিটাল কৃষিসেবার সম্প্রসারণ।
এছাড়া ই-ভাউচারে দেওয়া হবে ভর্তুকি, কৃষকদের জন্য তৈরি হবে কৃষক ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সিস্টেম। মোবাইল প্ল্যান্ট ক্লিনিকের মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ সেবাকে কৃষকের দোরগড়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে। ড্রিপ, স্প্রিংকলার, এডব্লিউডি ও ভূ-গর্ভস্থ সেচ নালা সহ সৌর শক্তি ব্যবহার করে সেচের পানি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পরিবর্তনের মাধ্যমে পানির অপচয় হ্রাস করা হবে।
প্রকল্পটি দেশের কৃষির খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ দেশের কৃষি সেক্টরের বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরে জাতীয় কৃষি নীতি-২০১৮ এর কর্মপরিকল্পনা (২০২০) ও উত্তম কৃষিচর্চা নীতিমালা ২০২০ বাস্তবায়নসহ এসডিজি, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ডেলটা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এই প্রকল্পের কার্যক্রমের মাধ্যমে এদেশের কৃষক, কৃষিসেবা, কৃষিসমাজ এবং কৃষি ব্যবসা সর্বোপরি বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদ রূপান্তরিত হবে স্মার্ট বাংলাদেশে।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.