যেকোনো সময় মন্ত্রিসভায় রদবদল, থাকছে চমক
সংবাদের আলো ডেস্ক: চলমান পরিস্থিতিতে যেকোনো সময়ে মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল হতে পারে। এ নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা এবং ঘনিষ্ঠদের সাথে মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে কথা বলছেন। সেই সুবাদে মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদলের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সরকার। তবে এই রদবদল কখন হবে সে সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
এবারের মন্ত্রিসভার রদবদলে থাকছে চমক। এই রদবদলে ১৪ দলের শরিকদেরকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে- এটা মোটামুটি নিশ্চিত। আরও দু একজন রাজনৈতিক মুখকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসা হতে পারে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র আভাস দিয়েছে।
অন্য একটি সূত্র অবশ্য জানিয়েছে, সরকার সমস্ত পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ মন্ত্রিসভার রদবদল করবে।
তবে দলের বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, মন্ত্রিসভার এই রদবদলে এবারও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে। সেবার আওয়ামী লীগ তার মহাজোটের সকল শরিকদেরকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলো। এর আগে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠন করেছিলো। আর ২০০৯ সালে মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টি থেকে জিএম কাদের, দিলীপ বড়ুয়াকে মন্ত্রী করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে হাসানুল হক ইনু এবং রাশেদ খান মেননও মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন।
২০১৪ সালের নির্বাচনের পরও আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ ভাবে সরকার গঠন করে। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে আওয়ামী লীগ একলা চলো নীতি অনুসরণ করছে। সেই নীতির কারণে ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগের একক মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে এবং ২০২৪ সালের পর থেকে ১৪ দল অনেকটা অপাঙ্ক্তেয় হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এবার শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির এবং বিএনপি সরকার উৎখাতের যে সহিংস তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছিল সেখান থেকে সরকারের উপলব্ধি হচ্ছে যে একলা চলার নীতি এখন পরিত্যাগ করতে হবে। আর এই কারণেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। ১৪ দলের শরিকদের থেকে অন্তত তিন থেকে চারজন মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্র আভাস দিয়েছে।
১৪ দলের শরিকদের মধ্যে থেকে রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, দিলীপ বড়ুয়া এবং ফজলে হোসেন বাদশার মন্ত্রী হওয়ার গুঞ্জন রয়েছে। এছাড়া শিরীন আখতারও মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে। এছাড়াও আওয়ামী লীগের যারা এই সংকটের সময় মাঠে কাজ করছেন, সারাক্ষণ কর্মীদেরকে অভয় দিয়েছেন এবং দলীয় কর্মকাণ্ডে নিবেদিত প্রাণ ছিলেন, তাদেরকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ও এস এম কামাল মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একটি সূত্র বলছে, দু একজন মন্ত্রীকে বাদ দেওয়ার বিষয়টিও আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে এই রাজনৈতিক সংকটে রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করাটাই যৌক্তিক হবে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। মন্ত্রিসভায় বড় চমক হিসেবে আসতে পারেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা আমির হোসেন আমু।
একাধিক সূত্র বলছে, আমির হোসেন আমু মন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বা মন্ত্রী হতে পারেন এমন একটি গুঞ্জন বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মন্ত্রিসভায় বেশ কয়েকটি দপ্তরের পরিবর্তনের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় গুলোতে পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। আওয়ামী লীগের উপদেষ্ট মণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমুকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হতে পারে এমন একটি গুঞ্জন আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক মহলে ছড়িয়ে পড়েছে। সূত্র: নিউজনাও২৪.কম
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।