আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে চুক্তির প্রথম সপ্তাহেই গাজা ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর পুরোপুরি প্রত্যাহার এবং চুক্তির গ্যারান্টর হিসেবে রাশিয়া, চীন ও তুরস্ক চেয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষিত এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নীতিগতভাবে মেনে নিয়েও তাতে কিছু সংশোধনী দিয়েছে সংগঠনটি। হামাস তিন ধাপবিশিষ্ট যুদ্ধবিরতির একেবারে প্রথম দিকেই গাজা থেকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে। একইসাথে তারা যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধের সুস্পষ্ট ঘোষণা চাচ্ছে।' গত মাসে বাইডেন প্রশাসন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পেশ করে হামাসকে তা মেনে নিতে বলেন।তিনি বলেন, এটি ইসরায়েলি প্রস্তাব। এতে তিন ধাপে বাস্তবায়নযোগ্য চুক্তিতে প্রথম ধাপের (ছয় সপ্তাহ) পরই কেবল ইসরায়েলি পূর্ণ প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। ওয়াশিংটন বলেছে, হামাসের সংশোধনীগুলোর কিছু বাস্তবায়নযোগ্য নয়। হামাস মনে করছে, প্রথম ধাপের যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবকে কাজে লাগিয়ে বেশ কিছু বন্দীকে মুক্ত করিয়ে নেবে ইসরায়েল। এরপর তারা আবার আরও ভয়াবহভাবে হামলা করবে। তাছাড়া হামলা স্থায়ীভাবে বন্ধ করার কোনও ঘোষণা এখন পর্যন্ত ইসরায়েল দেয়নি। বরং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ ইসরায়েলি নেতারা প্রকাশ্যে হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত যুদ্ধ অব্যাহত রাখার কথা বলছেন। ফলে হামাস বিদ্যমান আকারে থাকা প্রস্তাবটি মেনে নিতে পারছে না।লেবাননের আল-আখবার আউটলেটে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, হামাস যুদ্ধবিরতির প্রথম সাত দিনের মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ সালাহউদ্দিন এবং আল-রশিদ মহাসড়ক, নেটজারিতের সেনাস্থাপনা, মিশর-গাজা সীমান্ত-সংলগ্ন ফিলাডেলফি রুট এবং রাফা ক্রসিং থেকে সকল ইসরায়েলি সৈন্য ও স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েল যদি সাত দিনের মধ্যে গাজা থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার না করে, তবে তারা বন্দী মুক্তি স্থগিত করবে।
হামাসের একটি সূত্র হারেৎজ পত্রিকাকে জানিয়েছে, হামাস এ কারণে প্রথম ধাপেই ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিচ্ছে, যাতে ইসরায়েল কোনও পর্যায়েই এ দুটি শর্ত থেকে সরে যেতে না পারে এবং পণবন্দীদের মুক্তির পর আবার যুদ্ধ শুরু করতে না পারে। এছাড়া হামাস ইসরায়েলের কারাগারে দীর্ঘ দিন ধরে আটক থাকা ১০০ ফিলিস্তিনির একটি তালিকা দিয়েছে। বন্দী বিনিময়ের আওতায় তাদেরকে মুক্তি দিতেও দাবি জানাচ্ছে হামাস। অন্যদিকে ইসরায়েল ১৫ বছরের বেশি কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কোনও বন্দীকে মুক্তি দিতে চাচ্ছে না। আবার ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই চুক্তির গ্যারান্টর হিসেবে রাশিয়া, চীন ও তুরস্ককে মেনে নিতে রাজি হচ্ছে না।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.