যমুনাসেতুর পরিত্যক্ত রেলপথটি হোক সিএনজি অটোরিক্সার
আখতার হোসেন খান, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: উত্তর বঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত যমুনা রেলওয়ে সেতু পরীক্ষা মূলক ট্রেন চলেছে ২৬ নভেম্বর। জানুয়ারিতে যমুনা রেলওয়ে সেতু উদ্বোধন হলে মূল যমুনাসেতুর ওপর রেলপথটি পরিত্যক্ত হবে। পরিত্যক্ত রেলপথটি ৩ চাকার যান বাহন চলাচলের জন্য অনুমতি এবং উপযোগি করা হলে স্থানীয় জনসাধারণের ভোগান্তি কমবে, কমবে খরচ প্রসারিত হবে ব্যবসা-বাণিজ্য । যমুনাসেতুর পরিত্যক্ত রেলপথটি হতে পারে ৩ চাকার যান বাহনের। এমনটি দাবী এলাকাবাসীর। যমুনাসেতুতে ৩ চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ থাকায় স্থানীয়দের অপরিসীম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জানুয়ারিতে চালু হতে যাচ্ছে যমুনা রেলওয়ে সেতু। রেল সেতুটি চালু হলে যমুনা সেতুর ওপর রেলপথটি পরিত্যক্ত হবে। এই পরিত্যাক্ত রেলপথ দিয়ে সিএনজি অটো রিক্সা যাতায়াতের অনুমতি এবং উপযোগী করা হলে স্থানীয় জনগণ ব্যাপক ভাবে উপকৃত হবে। উন্নয়ন হবে ব্যবসা-বাণিজ্যের। ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও মাণিকগঞ্জের সাথে সিরাজগঞ্জ, বেলকুচি শাহজাদপুর, নাটোর ও রাজশাহী তথা উত্তরাঞ্চলের সাথে যারা স্বল্প পূজির ব্যবসা করেন তারা অল্প খরচে সিএনজি অটো রিক্সা ভাড়া করে সহজেই প্রমত্তা যমুনা নদী পার হতে পারবে। নচেৎ তাদেরকে অল্প পণ্যর জন্য বেশি টাকায় ট্রাক ভাড়া করতে হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয়দের যমুনাসেতু পূর্বপাড় থেকে সয়দাবাদ ৬ কিলোমিটার নদী পার হতে দূরপাল্লার গাড়িতে প্রতিজন যাত্রীকে ১০০ থেকে ২০০ টাকা গুণতে হয়। ঈদ বা পূজা পার্বণে তো দূরপাল্লার গাড়িতে লোকাল যাত্রী তোলাই হয় না। তখন প্রতিজন যাত্রীকে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা ভাড়ায় মোটর বাইকে পাড় হতে হয়। সিএনজি চলার অনুমতি দেয়া হলে যমুনাসেতু পূর্বপাড় থেকে সয়দাবাদ যেতে ১০ থেকে ১৫ টাকা ভাড়া লাগবে। এছাড়া দূরপাল্লার গাড়িতে ওঠতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। সে সময়টাও বেচে যাবে। স্থানীয় আবু বকর মিয়া বলেন, ৫ কিলোমিটার সেতু পার হইতে উত্তর বঙ্গের গাড়ির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তাও আবার ১/২ শ টাকা ভাড়া দিতে হয়। সিএনজি বা অটো রিক্সা চলতে দিলে আমরা ১০/১৫ টাকায়ই যমুনাসেতু পার হইতে পারবো। এলেঙ্গা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী রফিক জানায়, আমাদের চলন বিলের মাছ আনতে সিরাজগঞ্জে যাতায়াত করতে হয়। মাছ তো এক ট্রাক আনা সম্ভব না। তবু বেশি টাকা দিয়ে ট্রাক ভাড়া করে মাছ আনতে হয়। সিএনজি বা অটো রিক্সা চলাচলের অনুমতি দেওয়া হলে আমাদের খরচ কম হবে। এতে মাছের দামও কমে যাবে। আরো একটি কাজ হবে এদিকে মাছের ঘাটতি দেখা দিলে সিএনজি যোগে সকাল বিকাল মাছ আনা যাবে। সবজি ব্যবসায়ী মনসুর আলী জানান, যমুনাসেতুতে সিএনজি চলাচলা করলে আমরা ক্ষুদ্র শাকসবজি ব্যবসায়ী যারা সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চলের সবজি এনে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করি তারা কম দামেই সবজি দিতে পারবো। যমুনাসেতুতে পরিত্যক্ত রেলপথটি সিএনজি চলাচলের বিষয়টি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সুবিবেচনা করলে স্থানীয় জনগণের সেতু পারাপারের ভোগান্তি এবং অর্থের অপচয় কমবে । এমনটিই জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এব্যাপারে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল বলেন, পরিত্যক্ত রেলপথটি ৩ চাকার যান বাহন চলাচলের বিষয়টি কেউ কখনো জানায়নি। যমুনাসেতুর ওপরে চার লেনের জন্য রাস্তা ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্থ হওয়া দরকার। কিন্তু রেলপথ সংযোগ দেয়ার ফলে প্রশস্ত ১ ফিট কম আছে। অর্থাৎ ৬ দশমিক ৩ মিটার আছে। এছাড়া রেল পথটি যমুনা রেলওয়ে সেতুতে স্থানানন্তরের পর ডিভাইডার সরিয়ে রাস্তা প্রশস্থ করার জন্য ২০২৩ সালে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।