মোহনগঞ্জে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে স্বামীসহ গ্রেপ্তার ৩
নেত্রকোনা প্রতিনিধি: নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে রেহানা আক্তার (২১) এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় স্বামী-ভাসুরসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার(৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এরআগে শুক্রবার সন্ধ্যায় পৌরশহরের কাজিহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী রেহানা আক্তার উপজেলার কাজিহাটি গ্রামের এড. সাহিত্য মুরসালিনের দ্বিতীয় স্ত্রী।
রেহানা আক্তার ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার দক্ষিণ কোলাপাড়া গ্রামের তোফাজ্জাল হোসেনের মেয়ে। গত আট মাস আগে জানুয়ারী মাস এড. সাহিত্য মুরসালিনের সাথে বিয়ে হয় রেহানার। মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নিহত গৃহবধূ রেহানার স্বামী কাজিহাটি গ্রামের মৃত ওয়ালি আহম্মেদের ছেলে এড. সাহিত্য মুরসালিন (৪০), তার বড় ভাই হারুন অর রশিদ (৪৩) ও হারুনের স্ত্রী নাজমা আক্তার(৩০)।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহনগঞ্জ থানার এসআই জসিম উদ্দিন জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রেহানাকে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় স্বামীর পরিবারের লোকজন। চিকিৎসক রেহানাকে মৃত ঘোষণা করার পর সাড়ে আটটার দিকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রেহানার গলায় ফাঁসির দাগ রয়েছে। তবে একটি হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এসআই জসিম উদ্দিন আরও জানান, এ ঘটনায় রেহানার বাবা তোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে শনিবার সকালে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এতে রেহানার স্বামী এড. সাহিত্য মুরসালিন, তার মা রাজিয়া আক্তার, মুরসালিনের ভাই ফারুক আহমেদ, হারুন অর রশিদ ও হারুনের স্ত্রী নাজমাসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়। মামলার পরপরই অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যরা পালিয়ে যায়। তবে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর নাজমুল হুদা লিটন জানান, হাসপাতালে নেওয়ার পর আমরা খবর পেয়েছি। মুসালিন ঢাকায় থাকে এবং সেখানে আইনজীবী পেশায় জড়িত। তাঁর প্রথম স্ত্রী ঢাকায় থাকে। রেহানা তাঁর (মুরসালিন) দ্বিতীয় স্ত্রী। ঘটনা হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানি না। ময়নাতদন্তের পর সেটা জানা যাবে। তবে রেহানার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর শনিবার সকালে মুরসালিন ঢাকা থেকে এলাকায় এসেছে।
নেত্রকোনার স্থানীয় সেচ্ছাসেবী নাইমুর রহমান দূর্জয় জানায়, আমরা সকাল থেকে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে লাশ নিয়ে অপেক্ষা করছি কিন্তু ময়নাতদন্তের জন্য নিয়োজিত লোকোবল হাসপাতালে না থাকায় লাশ ময়না তদন্ত করা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে আগামীকাল রবিবার সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে মিনিটে ময়নাতদন্ত করা হবে। কিন্তু হাসপাতালে লাশ রাখার রেফ্রিজারেটর নষ্ট থাকায় আমরা বাহির থেকে বরফ কিনে এনে লাশ হাসপাতালে ফিজিং করে রেখেছি।
রেহানা আক্তারের বাবা তোফাজ্জাল হোসেন জানান, আমি আমার মেয়ে হত্যার সঠিক বিচার চাই। এছাড়া নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল থেকে দ্রুতই লাশটি ময়নাতদন্ত শেষে আমাদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার হোক, যাতে কাল ফেনী নিয়ে দাফনের ব্যবস্তা করা যায়।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।