মাসের পর মাস ধর্ষণ করায় বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে মামলা
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও রোড বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জুনায়েদ ষ্টোরের মালিক জুনায়েদ বোগদাদীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী এক নারী। ওই নারী ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এই মামলা দায়ের করেন।
জুনায়েদ বোগদাদী (৫২) ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের ইসলাম নগরের মসলিম উদ্দীনের ছেলে। মামলার অভিযোগে জানা যায়, ২০০৯ সালে দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার সওদাগর পট্টি গ্রামের এক ছেলের সাথে বিয়ে হয় ওই নারীর। বিয়ের পরে তাদের ঘরে দুই সন্তান জন্ম নেয়। সংসার চলাকালিন সময় ওই নারীর স্বামী বিদেশে পাড়ি জমায়। এর মধ্যে জুনায়েদ বোগদাদীর সাথে ওই নারীর পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে জুনায়েদ বোগদাদী ওই নারীকে প্রেম নিবেদন করে উত্যক্ত করে আসছিল এবং জুনায়েদ বোগদাদী ওই নারীকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরাঘুরির প্রস্তাব দেয় এবং এক সময় বিয়ের প্রস্তাব দেয়।
ওই নারী তার প্রস্তাবে রাজি না হলে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদর্শণ করতে থাকে। পরিশেষে তার প্রস্তাবে রাজি হলে প্রায় দুই বছর পূর্বে জুনায়েদ বোগদাদী ঠাকুরগাঁওয়ে অর্পিতা ম্যাসে স্ত্রীর পরিচয়ে রাখে। সেখানে থাকা অবস্থায় ওই নারীর পূর্বের স্বামীকে তালাক দিয়ে বিয়ের নাটক সাজিয়ে কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এর ১৭ দিন পরে জুনায়েদ বোগদাদী ঠাকুরগাঁও শহরের টীকাপাড়া মহল্লায় রিংকী কসমেটিক্সের মালিকের বাড়িতে স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে ভাড়া বাসায় রাখেন এবং দাম্পত্য জীবন-যাপন করতে থাকেন। এর কিছুদিন পর ওই নারী বিয়ের কাগজপত্র দেখতে চাইলে জুনায়েদ বোগদাদী বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কালক্ষেপন করতে থাকে।
সেখানে বিষয়টি জানাজানি হলে বিয়ের কাগজ দেখাতে না পেরে সেই বাসা ছেড়ে বসিরপাড়া আজিজ ভিলায় ভাড়া উঠেন। সেখানে থাকা অবস্থায় ওই নারীকে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে রাত্রী যাপন করেন এবং একাধিকবার ধর্ষণ করেন। সেখানে প্রায় বছর খানেক অবস্থান করা কালিন সময়ে বিয়ের কাগজ চাওয়া নিয়ে ঝগড়াঝাটি বাঁধলে পরে সে বাসা ছেড়ে পাশ্বেই বশির পাড়া মহল্লার আমিনুল পাশা দুলালের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন এবং প্রতিনিয়ত ধর্ষণ ও নির্যাতন করতে থাকেন। সেখানে থাকাকালীন সময়ে বাড়ির মালিক তাদের বিয়ের কাগজপত্র দেখতে চাইলে বিয়ের বিষয়টি জুনায়েদ বোগদাদী অস্বীকার করেন। পরে ওই নারী কোন উপায় না পেয়ে আদালতের আশ্রয় নেন।
এব্যাপারে টীকাপাড়া এবং বসির পাড়া মহল্লার একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায় ওই নারী এবং জুনায়েদ বোগদাদী ভাড়া বাসা নিয়ে একই সাথে বসবাস করে আসছিল। ভূক্তভোগী ওই নারী বলেন জুনায়েদ বোগদাদী আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমার সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। সে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। এখন আমার মরন ছাড়া আর কোন পথ খোলা থাকলো না। আমি এই লম্পট নারী লোভীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।
তবে জুনায়েদ বোগদাদী প্রথমে এব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজি হননি। বিষয়টি অস্বীকার করলেও এক পর্যায় বলেন সে একটা বাজে মেয়ে সে আমার দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমাকে ফাঁসায় দিয়েছে। বাদি পক্ষের আইনজীবী মো : শেখ ফরিদ বলেন জুনায়েদ বোগদাদী ওই নারীকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ছিলেন তার অনেক কিছুই প্রমান রয়েছে। বিজ্ঞ আদালত বিষয়টি মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে আমলে নিবেন।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।