মঙ্গলবার, ১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

মান্দায় রাতারাতি উধাও দুই এনজিও, গ্রাহকদের বিক্ষোভ

আল আমিন স্বাধীন, মান্দা (নওগাঁ ) প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় সহস্রাধিক গ্রাহকের অন্তত ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছে সমতা ও নেসডো নামের দুই বেসরকারি সংস্থা। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় থাকা সংস্থা দুটির ১০টি শাখা হঠাৎ করেই উধাও হয়ে যায়। নিরুপায় গ্রাহকেরা সঞ্চয় ও আমানতের টাকা ফেরতের দাবিতে আজ সোমবার উপজেলা সদরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এর পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ আলম মিয়ার কাছে একটি স্মারকলিপি দেন গ্রাহকেরা। সংস্থা দুটির পরিচালকের নাম শাহিনুর রহমান। তিনি নওগাঁ সদর উপজেলার খলিশাকুড়ি গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে। জানা গেছে সমবায় দপ্তর থেকে নিবন্ধন নিয়ে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণের পাশাপাশি সঞ্চয়, ডিপিএস ও এফডিআরের নামে আমানত সংগ্রহ করে আসছিল সংস্থা দুটির কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীরা। গ্রাহকের অভিযোগ, প্রায় ৫বছর আগে মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর, দেলুয়াবাড়ি, সাবাইহাট, সতিহাট, চৌবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় শাখা খুলে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ শুরু করে সমতা ও নেসডো নামের দুটি এনজিও। এর পর সঞ্চয়ের পাশাপাশি বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে ব্যাংকের আদলে আমানত সংগ্রহ করে গ্রাহকের কাছ থেকে। দেলুয়াবাড়ি বাজার শাখার গ্রাহক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘প্রায় ৫বছর আগে দেলুয়াবাড়ি বাজারে একই কার্যালয়ে সমতা ও নেসডোর কার্যক্রম শুরু করা হয়। ২ বছর আগে আমি এ শাখায় সদস্য হই। প্রতিমাসে এক লাখ টাকার বিপরীতে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা মুনাফার লোভ দেখিয়ে আমানত সংগ্রহ করে সংস্থার লোকজন। শুরুর দিকে আমানতের বিপরীতে মুনাফার টাকা সঠিকভাবে দিয়ে আসছিল সংস্থাটি। কিন্তু কয়েক মাস ধরে টালবাহানা শুরু করে। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে কার্যালয় তালাবদ্ধ করে এর লোকজন উধাও হয়ে যান।’ এনজিও নেসডোর আমানতকারী গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমি এনজিও নেসডোতে ৪ লাখ টাকার এফডিআর করেছিলাম। প্রতিমাসে আমাকে ৮ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু কয়েক মাস ধরে সংস্থার লোকজন টালবাহানা শুরু করলে গ্রাহকেরা আমানতের টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিতে থাকে। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে সটকে পড়ে তারা।’ নেসডোর গ্রাহক হালিমা বিবি বলেন, ‘আমি রাজধানী ঢাকার একটি বাসায় কাজ করি। সেখান থেকে পাওয়া বেতনের টাকা একটু একটু করে নেসডোতে জমা করেছিলাম। বর্তমানে আমার আমানত ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। অনেক কষ্টের এ টাকা ফেরত না পেলে এই বৃদ্ধ বয়সে আমাকে আত্মহত্যা করতে হবে।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেলুয়াবাড়ি বাজার শাখা থেকে অন্তত তিন শতাধিক গ্রাহকের সঞ্চয়, ডিপিএস ও আমানতের প্রায় ৪ কোটি টাকা নিয়ে গেছে সংস্থা দুটি কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীরা। এ বিষয়ে এনজিও দুটির পরিচালক শাহিনুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। জানতে চাইলে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ আলম মিয়া বলেন, ঘটনাটি দু:খজনক। গ্রাহকদের অসচেতনতার কারণে অহরহ এ ধরণের ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়