মন্ত্রীর আত্নীয় পরিচয়ে ঘুষ নেন ডিজি তাজুল
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: বীজ উৎপাদন কেন্দ্র (বীউ) বিএডিসি শিবগঞ্জ ঠাকুরগাঁওয়ের উপপরিচালক তাজুল ইসলাম ভূঁঞা আসার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির বীজের নিম্নমান ও আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে বীজ নেওয়ার স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। কোন নিয়ম আর নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে টাকা দিলেই বীজ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বিরুদ্ধে। নিয়মানুযায়ী বিএডিসি তার চুক্তিবদ্ধ চাষীদের বিএডিসির মনোগ্রাম যুক্ত বস্তা সরবরাহ করার নিয়ম থাকলে সে নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন তাজুল ইসলাম।এতে বীজের গুণগত মান হুমকির মুখে পড়ে৷ কতিপয় ব্যবসায়ীকে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়ার জন্য বিএডিসির বস্তায় বীজ না নিয়ে এসে বে-সরকারী বস্তায় বীজ নিয়ে আসা হয়। এতে করে ব্যবসায়ীরা হাট থেকে গম কিনে সরাসরি অফিসে প্রদান করে থাকেন। এর বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বীজ নেন তিনি।
অন্যদিকে বস্তা পরিবর্তনের খরচের প্রয়োজন হয় না। প্রতি ৫০ কেজি গম বীজে ও ৫০ কেজি ধান বীজের বস্তায় নিয়ম বহিঃভুত ভাবে বস্তা প্রতি ১ কেজি ঢলতা নেওয়া হয়। যা বিভিন্ন নামে বিল করে তার টাকাও আত্মসাৎ করা হয় এ কর্মকর্তার যোগসাজশে। ঢাকা থেকে বীজ সংগ্রহের টার্গেট থেকে কিছু অংশ গোপন করে বাকিটুকু উপ-সহকারী পরিচালকদের মাধ্যমে প্রকৃত চাষীদের মাঝে ভাগ করে দেয়।পরবর্তীতে ব্যবসায়ীদের মাঝে টাকার বিনিময়ে গোপনকৃত অংশটির বীজ সংগ্রহ করে। এতে প্রকৃত চাষীরা বৈষম্যের স্বীকার হয় সেই সাথে স্কীমের বাইরে থেকে বীজ সংগ্রহের ফলে বীজের গুণগতমাণ নষ্ট হয় এবং দেশের উৎপাদন ব্যাহত হয়। ঠাকুরগাও শহরে বসবাস করেন তাজুল ইসলাম।
অফিসের বেতনভুক্ত দু’ তিনজন জন শ্রমিককে পর্যায়ক্রমে তার বাসায় নিয়ে এসে বাধ্যতামূলক ভাবে কাজ করানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও অফিসের কাজে নিয়োজিত দৈনিক হাজিরা ভূক্ত শ্রমিকদের অতিরিক্ত সময় কাজ করিয়ে কম বেতন প্রদান করেন তিনি। ফলে ২০২২ সালে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। তার দূর্নীতির গোমড় ফাঁস হলে গত ২৩ মে ২০২২ সালে তাকে বগুড়ায় বদলি করে দেওয়া হয়। কিন্তু তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের প্রভাব খাটিয়ে তার বদলি স্থগিত করানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, ছোট থেকে বড় সব ধরনের ইস্যুতে সাবেক কৃষিমন্ত্রীর নাম ভাঙাতেন তিনি।
বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে মন্ত্রীর সাথে ছবি তোলে সেগুলো প্রচার করতেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এমনকি মন্ত্রীকে উপহার দেয়ার কথা বলেও বেশ কয়েকবার উপঢৌকন গ্রহন করেছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন চাষী বলেন, আমাদের তালিকাভুক্ত বেশ কয়েকটি স্কিম রয়েছে সেগুলোতে আবাদ হয়না।অথচ সেগুলোতে স্কীম হিসেবে দেখানো হয়েছে। অনেক চাষী বাজার থেকে বীজ কিনে দেয়।
সে গুলো তিনি জানার পরও টাকা নিয়ে।সেই বীজ গুলো গ্রহণ করে থাকেন। যিনি উনাকে টাকা দেবেন তারই বীজ উনি নেবেন। টাকা ছাড়া উনি আর কিছু হবেননা৷ এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-পরিচালক তাজুল ইসলাম বলেন,মন্ত্রী আমার আত্নীয় হোন৷ সেই সুবাদে তার সাথে ছবি তুলেছি। আর বাকী প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তিনি৷
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।