বিশেষ প্রতিনিধি: ভাষা আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের স্মরণে পালিত হবে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। শহীদ মিনারের বেদিতে ফুল দিতে ঢল নামবে অগণিত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য নেত্রকোনার মদন উপজেলায় ১২১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৫ প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনার নির্মাণ আজও করা হয়নি। ১৯৫২ সালে মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য জীবন বিলিয়ে দেওয়ার ৭২ বছর পরও শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও মাধ্যমিক অফিস সূত্রে জানা গেছে, অর্থ বরাদ্দ না থাকা সহ নানা কারণে দীর্ঘদিনেও এসব স্থাপনা নির্মাণ করা যায়নি।তবে বাঁশ বা কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান শিক্ষার্থীরা।
উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মদন উপজেলায় মোট ৯৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে ২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। বাকি ৭১ টি বিদ্যালয়ে নির্মাণ করা হয়নি শহীদ মিনার। অপরদিকে, উপজেলায় ১৬টি উ”চ বিদ্যালয়ের মধ্যে ১০ টি, ৩ টি কলেজের মধ্যে ২টি,মাদ্রাসা ৮টির মধ্যে কোনটিতেই নেই শহীদ মিনার।
এসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ না দেওয়া হয় না। তবে কোনো কোনো বিদ্যালয়,কলেজ শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের কাছ থেকে বরাদ্দ বা দাতাদের অনুদান সংগ্রহ করে কিংবা বিদ্যালয়ের মেরামত ও আনুষঙ্গিক খাতের টাকা বাঁচিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। তবে বেশির ভাগ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে তা করা সম্ভব হয় না।
এ সম্পর্কে মদন উপজেলার সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির সদস্য সচিব মোতাহার আলম চৌধুরী বলেন,স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, এটি আমাদের জন্য লজ্জাজনক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনুমোদনের শর্তের মধ্যে শহীদ মিনার নির্মাণ বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত।
মদন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন তালুকদার বলেন, এখনো প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই,বিষয়টি খুবই লজ্জার ব্যাপার। ভাবতে অবাক লাগে, যে জাতি ভাষার জন্য রক্ত দেয়, সেই জাতির দেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। তাই নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ও একুশের চেতনায় উজ্জীবিত করতে প্রতিটি বিদ্যালয়েই শহীদ মিনারসহ এ ধরনের স্মারক থাকা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
জোবাইদা রহমান মহিলা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমান জানান, এর আগে শহীদ মিনার নির্মাণে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি,এখন শহীদ মিনার নির্মাণে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অচিরেই এর বাস্তবায়ন হবে।
বাগজান কুঠুরিকোনা মডেল উ”চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান জানান, ১৮ বছর যাবত আমরা বাশঁ দিয়ে অ¯’ায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরি করে ফুল দিয়ে আসছি। আমরা চেষ্টা করছি ¯’ায়ী একটি শহীদ মিনার তৈরি করার।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকিকুর রেজা জানান, অধিদপ্তর থেকে তথ্য চেয়েছে কোন কোন প্রাথমিক প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। আমরা তথ্য দিয়েছি। এ ব্যাপারে কোন বরাদ্দ না থাকায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হ”েছ না।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল বারী জানান,তিনটি কলেজের মধ্যে ১টি,১৬টি মাধ্যমিকের মধ্যে ১০ শহীদ মিনার রয়েছে। ৮ মাদ্রাসার মধ্যে একটিতেও নেই। আমি বলেছি এ ব্যাপারে কোন বরাদ্দ না পেলেও আপনার প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন খাত থেকে শহীদ মিনার তৈরি করবেন। এত গুলো প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই খুবই কষ্টের ব্যাপার।
মহান শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম মিয়া বলেন, অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকার কারণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদানের কিছুটা সমস্যা হ”েছ। তবে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্টানকে অবহিত করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব।
তোফাজ্জল হোসেন
মোবাইল : ০১৭২১-৯৯২৮৫৮
তারিখ ২২-০২-২০২বিশেষ প্রতিনিধি: ভাষা আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের স্মরণে পালিত হল মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। শহীদ মিনারের বেদিতে ফুল দিতে ঢল নামে অগণিত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য নেত্রকোনার মদন উপজেলায় ১২১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৫ প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনার নির্মাণ আজও করা হয়নি। ১৯৫২ সালে মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য জীবন বিলিয়ে দেওয়ার ৭২ বছর পরও শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও মাধ্যমিক অফিস সূত্রে জানা গেছে, অর্থ বরাদ্দ না থাকা সহ নানা কারণে দীর্ঘদিনেও এসব স্থাপনা নির্মাণ করা যায়নি।তবে বাঁশ বা কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান শিক্ষার্থীরা।
উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মদন উপজেলায় মোট ৯৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে ২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। বাকি ৭১ টি বিদ্যালয়ে নির্মাণ করা হয়নি শহীদ মিনার। অপরদিকে, উপজেলায় ১৬টি উ”চ বিদ্যালয়ের মধ্যে ১০ টি, ৩ টি কলেজের মধ্যে ২টি,মাদ্রাসা ৮টির মধ্যে কোনটিতেই নেই শহীদ মিনার।
এসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ না দেওয়া হয় না। তবে কোনো কোনো বিদ্যালয়,কলেজ শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের কাছ থেকে বরাদ্দ বা দাতাদের অনুদান সংগ্রহ করে কিংবা বিদ্যালয়ের মেরামত ও আনুষঙ্গিক খাতের টাকা বাঁচিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। তবে বেশির ভাগ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে তা করা সম্ভব হয় না।
এ সম্পর্কে মদন উপজেলার সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির সদস্য সচিব মোতাহার আলম চৌধুরী বলেন,স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, এটি আমাদের জন্য লজ্জাজনক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনুমোদনের শর্তের মধ্যে শহীদ মিনার নির্মাণ বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত।
মদন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন তালুকদার বলেন, এখনো প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই,বিষয়টি খুবই লজ্জার ব্যাপার। ভাবতে অবাক লাগে, যে জাতি ভাষার জন্য রক্ত দেয়, সেই জাতির দেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। তাই নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ও একুশের চেতনায় উজ্জীবিত করতে প্রতিটি বিদ্যালয়েই শহীদ মিনারসহ এ ধরনের স্মারক থাকা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
জোবাইদা রহমান মহিলা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমান জানান, এর আগে শহীদ মিনার নির্মাণে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি,এখন শহীদ মিনার নির্মাণে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অচিরেই এর বাস্তবায়ন হবে।
বাগজান কুঠুরিকোনা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান জানান, ১৮ বছর যাবত আমরা বাশঁ দিয়ে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরি করে ফুল দিয়ে আসছি। আমরা চেষ্টা করছি স্থায়ী একটি শহীদ মিনার তৈরি করার।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকিকুর রেজা জানান, অধিদপ্তর থেকে তথ্য চেয়েছে কোন কোন প্রাথমিক প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। আমরা তথ্য দিয়েছি। এ ব্যাপারে কোন বরাদ্দ না থাকায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল বারী জানান,তিনটি কলেজের মধ্যে ১টি,১৬টি মাধ্যমিকের মধ্যে ১০ শহীদ মিনার রয়েছে। ৮ মাদ্রাসার মধ্যে একটিতেও নেই। আমি বলেছি এ ব্যাপারে কোন বরাদ্দ না পেলেও আপনার প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন খাত থেকে শহীদ মিনার তৈরি করবেন। এত গুলো প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই খুবই কষ্টের ব্যাপার।
মহান শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম মিয়া বলেন, অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকার কারণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদানের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্টানকে অবহিত করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব।