সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ভূঞাপুর সাদা সোনায় ভরপুর

আখতার হোসেন খান, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: “সোনা সোনা সোনা লোকে বলে সোনা/ সোনা নয় ততো খাঁটি/ বলো যতো খাঁটি তার চেয়ে খাঁটি/ আমার বাংলাদেশের মাটি…..।” বাংলাদেশের মাটিতে সোনা ফলে এজন্যেই মাটিকে কবি সোনা বলেছেন। প্রকৃত পক্ষেই ভূঞাপুরের যমুনার মাটিকে বলা হয় সাদা সোনা।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের পুরো গাবসারা ইউনিয়নসহ ৩ টি ইউনিয়ন যমুনা বিধৌত চরাঞ্চল।

এক সময়ে নদী এপার ভাঙতো ওপার গড়তো। যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ এবং এর শক্তিশালী গাইড বাঁধ নির্মানের ফলে ভাঙা-গড়া সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। তবুও প্রতি নিয়ত যমুনা নদীতে জন্ম নিচ্ছে পলি মাটি ও বেলে মাটি। পলিতে ফলছে সোনার ফসল। আর মুক্তোর দানার মতো চিকচিকে সাদা সোনা খ্যাত বালি দিচ্ছে কোটিকোটি টাকা। তাই স্থানীয়দের ভাষায় যমুনার এই অংশকে বলা হচ্ছে স্বর্ণ ডিমের হংসী।

ভূঞাপুরের সাদা বালি দেশ বিখ্যাত। ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ভালুকা, গাজীপুর, মাণিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এর ব্যাপক চাহিদা। রাত দিন হাজার হাজার ট্রাক সাদা বালি যাচ্ছে এখান থেকে। এর মধ্যে মোটা বালি, চিকন বালি ও নৌকার বালি যাচ্ছে ঢালাই ও আস্তরের কাজে। চিকন বালি ও ভিট বালি যাচ্ছে রাস্তা নির্মাণ, গর্ত ও ঘরের মেঝে ভরাটের কাজে। মোটা বালি, নৌকার বালি ও সারিয়াকান্দীর বালি যাচ্ছে আস্তর, গাঁথনি ও ঢালাইয়ের কাজে। ঢালাইয়ের ক্ষেত্রে যমুনার নৌকার বালি, চিকন বালি ও মোটা বালিতে জামালপুর ও নেত্রকোনার লাল বালি মেশাতে হয়।

কিন্তু সারিয়াকান্দীর পিওর বালি হলে জামালপুর ও নেত্রকোনার লাল বালি ব্যবহার না করলেও চলে। কারণ সারিয়াকান্দীর বালি একটু লালচে এবং এর দানা বেশ মোটা হয়ে থাকে।

টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাড় থেকে বঙ্গবন্ধুসেতু-ভূঞাপুর আন্তজেলা মহাসড়ক ধরে উত্তর দিকে এগিয়ে গেলে ৫০০ গজ পর থেকেই প্রায় ৫ কিলোমিটার দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম গরুর হাট গোবিন্দাসী পর্যন্ত অনেক গুলো বালির ঘাট পাওয়া যাবে। যে কোনো ঘাট থেকে পছন্দের বালি নেয়া যাবে। তবে পছন্দের বালি অর্থাৎ মোটা, চিকন, নৌকার, সারিয়াকান্দী, ভিট মাটি কোন্ টি প্রয়োজন বা কি কাজে ব্যবহার করবেন তা জেনে নিতে হবে। এবং সে ঘাটে সেই বালি সংরক্ষিত আছে কি-না জেনে নিয়ে ট্রাক ঘাটে নিতে হবে।

বালি পরিবহনের জন্য ট্রাক নিয়ে যাওয়া যাবে, আবার বালির ঘাটেও ট্রাক ভাড়া পাওয়া যাবে। প্রয়োজন মতো দশ চাকার ট্রাক, জাম বডি ও হাইড্রোলিক ভাড়া নেয়া যাবে। দুরত্ব ভেদে ভাড়াও কম বেশি হয়ে থাকে। বালি ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের জানান, বালির মূল্যসহ দুরত্ব বুঝে দশ চাকার ট্রাক, জাম বডি ও হাইড্রোলিক ভাড়ার পার্থক্য হয়ে থাকে। তবে বালি কেনার সময় পছন্দের দেখে নেয় ভালো।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো মন্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো।

----- সংশ্লিষ্ট সংবাদ -----

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়