প্রিন্ট এর তারিখঃ জানুয়ারী ৩১, ২০২৫, ৪:১০ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জানুয়ারি ৩০, ২০২৫, ৭:২৬ অপরাহ্ণ
ভূঞাপুরে ৩৫ বছরেও শেষ হয়নি বিআরএস ভূমি জরিপ
আখতার হোসেন খান, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে একটি মৌজায় ১৭ টি সিটের বিআরএস জরিপ কাজ শেষ হয়নি ৩৫ বছরেও। কবে শেষ হবে এর সদত্তোর পাওয়া যায়নি কোন দপ্তরে। জরিপ সম্পন্ন না হওয়াতে মৌজাটিতে বন্ধ আছে জমি বেচা-কেনা, খাজনা খারিজ। ফলে চরম ভোগান্তিতে এ এলাকার মানুষ। জানা গেছে, সারা দেশের ন্যায় এ উপজেলায় ১৯৯৩ সালে বিআরএস জরিপের কাজ শুরু করে ভূমি মন্ত্রণালয়। তারই ধারাবাহিকতায় গাবসারা মৌজায় ১৯৯৮ সালে নকশার কিস্তার কাজ শেষ করে ডিপি খতিয়ান তৈরী করে এবং মাঠ পরচা বিতরণ করে ভূমি মালিকদের মধ্যে। কিন্তু পরচায় জমির পরিমাণ মিল থাকলেও নকশায় জমির পরিমাণ কোন মিল পাওয়া যায়নি। খতিয়ানে জমির পরিমাণ এবং নকশায় জমির পরিমান কোন মিল না থাকায় জমির মালিকগণ নকশার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেন। তদন্তে দেখা যায় এ মৌজায় ১৬টি সিটের নকশা ভেঙ্গে ১৭ টি সিট তৈরী করা হয়েছে। এতে অধিকাংশ প্লটের জমির পরিমাণ কম বেশি হয়েছে। সে সময় নকশার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও পরবর্তীতে বিচারিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাধানের আশর্^াস দেন দায়িত্বরত কর্মকর্তাগণ। ২০০০ সালে শুরু হয় ৩০ ধারা বিচার কার্যক্রম। এতে অধিকাংশ খতিয়ানে মামলা হয়।
৩০ ধারা শেষ করে ৩১ ধারা শুরু করলে মামলার জট সে রকমই থেকে যায়। সাধারণত ৩০ ও ৩১ ধারায় সকল বিচার কার্য শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু মামলা শেষ তো হয়ইনি ক্রমশ জটিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। দেয়া হলো পারমিশন (বিশেষ আদেশে) কেসের সুযোগ। পরবর্তীতে ১৭টি সিটে প্রায় ৯ হাজার ৫শ খতিয়ানের মধ্যে প্রায় ৮হাজার ৮শ পারমিশন (বিশেষ আদেশে) মামলা হয়। এ নিয়ে সৃষ্টি হয় নানা ধূ¤্রজাল। তার মানে কোন ভাবেই মামলার জট শেষ হচ্ছিল না। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষে নজরে আসলে ২০০৬ সালে নকশাগুলো যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয় জরিপ অধিদপ্তরের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের কাছে। সেখানে নকশায় ধরা পরে মারাত্বক রদবদল। পরচায় জমির ধারাবাহিকতা মিল থাকলেও আধিকাংশ দাগেই জমির পরিমাণ মিল নেই। যার ফলে বার বার মামলা করে সমাধান খুঁজছিল ভুক্তভোগিরা। পরবর্তীতে কোন সমাধান না করতে পেরে স্থগিত করে দেয় জরিপ কার্যক্রম। এর পর থেকেই নানা বিপদে পড়তে হচ্ছে এ এলাকার ভূমি মালিকদের। ক্রমান্নয়ে বন্ধ হয়ে যায় খাজনা খারিচ, ব্যাংক ঋণ সহ নানা কার্যক্রম। হাল নাগাদ খাজনা পরিশোধ রশিদ ও খারিজ বাধ্যতামূল হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় জমি বেচা-কেনা। ফলে বিপদগ্রস্থ হয়ে পড়েন এলাকার মানুষ।
অনেক দরিদ্র পরিবার নানা সমস্যায় জমি বিক্রি করতে চাইলেও বিক্রি করতে পারছে না। সম্প্রতি অনলাইন ভিক্তিক খাজনা খারিজ হওয়ায় জটিলতা আরো বেড়েছে। এ মৌজার বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদ বলেন, ্ওই সময় অদক্ষ সার্ভেয়ার (আমিন) দিয়ে নকশা করার কারণে এ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে প্রায় ২৫ বছর যাবৎ বিপদে ফেলে রাখছে এ এলাকার মানুষের। দিন যাচ্ছে আরো জটিলতা বাড়ছে। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই। টাঙ্গাইল জোলান সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার এস এস রফিকুল ইসলাম জানান, এ বিষয়টি নিয়ে জরিপ অধিদপ্তরে মতাততের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। জরিপ বাতিলও হতে পারে আবার নকশার পূর্ণকিস্তারও হতে পারে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের যে নিদের্শনা আসবে সেই মোতাবেক কাজ করতে হবে।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2025 সংবাদের আলো. All rights reserved.