বৃহস্পতিবার, ২রা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ভূঞাপুরে ১৪ লাখ টাকা চুক্তিতে নিষিদ্ধ গাইড বই

আখতার হোসেন খান, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: ভূঞাপুরে ১৪ লাখ টাকা চুক্তিতে নিষিদ্ধ গাইড বই পাঠ্যভুক্ত করেছে ভূঞাপুর মাদরাসা শিক্ষক সমিতি। ফলে অতিরিক্ত ১৪ লাখ টাকার বোঝা বইতে হচ্ছে অভিভাবকদের। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর মাদরাসা শিক্ষক সমিতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বোর্ড বই আসার আগেই গাইড বই বাজারজাত করতে কোম্পানীর সাথে চুক্তি করেছে। । ১৪ লাখ চুক্তি অনুযায়ী প্রথম শ্রেণী হতে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছে গাইড বই বিক্রি করতে বাজারজাত করবে আল ফাতাহ পাবলিকেশন্স। এতে বাজারমূল্য থেকে বেশি দামে শিক্ষার্থীদের সহায়ক বই বা গাইড বই কিনতে হবে। বাংলাদেশ জামিয়াতুল মোদার্রেছীন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা শাখার কর্মকর্তারা কোম্পানীর কাছ থেকে এই টাকা গ্রহণ করেছেন। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, ভূঞাপুর উপজেলা মাদরাসা শিক্ষক সমিতি শিক্ষার্থীদের হাতে গাইড বই তুলে দিতে আল ফাতাহ পাবলিকেশন্সের সাথে চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী গাইড বই কোম্পানীটি গত ১১ ডিসেম্বর ভূঞাপুর স্কাউট অফিসে মাদরাসা শিক্ষক সমিতির নেতাদের হাতে ১৪ লাখ টাকা তুলে দেয়। পরে সেই টাকা থেকে ৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা সমিতির সোনালী ব্যাংকের হিসাব নম্বরে (৬০০৩০০২১৬৯৪০৭) জমা দেয়। এর আগের বছর মাদরাসা সমিতি লেকচার পাবলিকেশন্সের সাথে গাইড বই বাজারজাত করতে ৭ লাখ টাকায় চুক্তি করেছিল। চুক্তি অনুযায়ী কোম্পানীটি ২ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্র্তিতে শিক্ষার্থীরা গাইড বই না কেনায় বাকি ৫ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেনি কোম্পানীটি। ফলে নতুন বছরে লেকচার কোম্পানীর সাথে দর কষাকষি না হওয়ায় সমিতির নেতারা আল ফাতাহ পাবলিকেশন্সের সাথে চুক্তি করে। আল ফাতাহ পাবলিকেশন্সের ভূঞাপুর প্রতিনিধি নাহিদ ইসলাম বলেন, গাইড বই বাজারজাতের বিষয়ে মাদরাসা সমিতির শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানতে পারেন। মোবাইলে এই বিষয়ে কিছু বলার নেই। লেকচার পাবলিকেশন্সের ভূঞাপুর প্রতিনিধি রিপন জানান, গত বছরের চুক্তি হয়েছিল ঠিকই কিন্তু এবছর কেন চুক্তি করেনি সেটা শিক্ষক সমিতির নেতারাই বলতে পারবেন। এই বিষয়ে মোবাইলে বলা সম্ভব না, আপনিতো বুঝেন বিষয়টি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মাদরাসা শিক্ষকরা বলেন, বোর্ড বই এখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসেনি। সেইখানে আগেই গাইড বই বাজারে আনতে এবং শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে মোটা অঙ্কের টাকা নেয়া হয়েছে। শিক্ষকদের দেয়া ওই টাকা গাইড বইয়ের মূল্যে যুক্ত হয়ে কোম্পানী বই বাজারে ছাড়বে। এতে বেশি দামে গাইড বই কিনতে হবে শিক্ষার্থীদের।বাংলাদেশ জামিয়াতুল মোদার্রেছীন ভূঞাপুর শাখার সাধারন সম্পাদক ও বিলচাপড়া দাখিল মাদরাসার সুপার মাজহারুল ইসলাম তালুকদারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই বিষয়ে মোবাইলে বলা যাবে না। সামনাসামনি কথা বলবোনি। বাংলাদেশ জামিয়াতুল মোদার্রেছীন ভূঞাপুর শাখার সভাপতি ও দাখিল মাদরাসার সুপার আফসার উদ্দিন বলেন, কোন কোম্পানীর সাথে চুক্তি হয়নি। মাদরাসার কিছু শিক্ষক ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। সমিতির হিসাব নম্বরে একদিনে ৯ লক্ষ ৫০ টাকা জমা হল কিভাবে প্রশ্নে তিনি বলেন, শিক্ষকদের কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা জমা হয়েছে। ভূঞাপুর ফাযিল মাদরাসার সুপার আব্দুস সোবহান বলেন, আল ফাতাহ গাইড বই কোম্পানীর কাছ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা নেয়া হয়েছে। সেখান থেকে সমিতির হিসাব নম্বরে ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দেয়া হয়েছে। বাকি টাকা কি হয়েছে সেটা সমিতির নেতারাই জানেন। ঘটনাটি উপজেলাজুড়ে আলোচিত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. পপি খাতুন বলেন, গাইড বই কোম্পানীর সাথে মাদরাসা সমিতি যদি টাকার বিনিময়ে চুক্তি করে থাকে তাহলে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়