ভুয়া পরিচয়ে সরকারি দপ্তরসহ দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠানে অভিযান, গ্রেপ্তার ৩
সংবাদের আলো ডেস্ক: দুদকের ভুয়া পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে কথিত ‘দুর্নীতি নিবারণ সহায়ক সংস্থা’ নামের একটি প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচা দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন কথিত ‘দুর্নীতি নিবারণ সহায়ক সংস্থার’ নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম সম্রাট, সংস্থার পরিচালক (অপারেশন) মো. রায়হান ওরফে সৈয়দ রায়হান ও নেত্রকোনার সাইফুল ইসলাম। বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, ভুয়া পরিচয়দানকারী ব্যক্তিদের আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে প্রতারকচক্রের দুই সদস্য। পরে তাদের স্বীকারোক্তি রেকর্ড করে অজ্ঞাতপরিচয় আট আসামিসহ ১৪ জনের নামে পল্টন থানায় একটি প্রতারণার মামলা করা হয়। দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, সরকারি কর্মচারী না হয়েও পরস্পর যোগসাজশে সরকারি কর্মচারীর ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রতারণার আশ্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরসহ দুই শতাধিক বেসরকারি স্থানে আইনবহির্ভূত অভিযান পরিচালনা করেন।জরিমানা ধার্য ও আদায়, চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক মীমাংসা নামে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ এবং ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা, বিকৃত ও মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার করেন। আসামিরা দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ৩৮৫/৪১৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৫০৬/৩৪ ধারা এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩-এর ২৪/২৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত আসামিগণ ভুয়া দুদক পরিচয় দিয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে কমিশনের নির্দেশিত হয়ে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। আসামি মো. রায়হান ওরফে সৈয়দ রায়হান এর নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র ‘দুর্নীতি নিবারণ সহায়ক সংস্থা’ (ঠিকানা: ৮৫ নয়া পল্টন (৪র্থ তলা), নামীয় দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুরূপ প্রতিষ্ঠান তৈরি করে দুদকের সহযোগী বাহিনী পরিচয় প্রদান করে প্রতারণা করে থাকেন।দুদকের অনুরূপ তাদের নিজস্ব লোগো সংবলিত ইউনিফর্ম, ছবিযুক্ত আইডি কার্ড পরিধানপূর্বক বিভিন্ন সরকারি দপ্তরসহ দুই শতাধিক বেসরকারি স্থানে আইন বহির্ভূত অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ/ভুক্তভোগী জনগণের কাছ থেকে চাঁদা দাবি অন্যথায় দুদকে অভিযোগ দেওয়া এবং অভিযান পরিচালনাকালে বিনা অনুমতিতে ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম Syed Rayhan, syed rayhan official, এবং ইউটিউব আইডি। (১) আইনের চোখ/ Syed Rayhan, বিকৃত তথ্য প্রচার করে ক্ষতিগ্রস্ত করার হুমকি প্রদান ও ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। এজাহারে আরো বলা হয়, গত ১১ নভেম্বর হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুদকের ছদ্মবেশ ধারণ করে অভিযান পরিচালনা করে কর্তব্যরত সরকারি কর্মচারীদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মো. সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজনকে তাৎক্ষণিক বিচারের নামে আইনবহির্ভূতভাবে জন প্রতি ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন এবং তা আত্মসাৎ করেন। এখন পর্যন্ত চক্রটি সর্বমোট ১৫৩টি স্থানে অভিযান পরিচালনাসহ সর্বমোট দুই শতাধিক স্থানে প্রকাশ্যে বিচারের নামে চাঁদাবাজি করেছে। দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে ১৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নগদ ও বাকিতে প্রায় ৫ লাখের বেশি টাকা চাঁদাবাজি করার কথা স্বীকার করেছেন।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।