সংবাদের আলো ডেস্ক: বিশ্বকাপের ভারত-পাকিস্তান লড়াই মানেই যেনো আলাদা উত্তেজনা। সারা বিশ্বের ক্রিকেট প্রেমীদের আগ্রহের কমতি থাকে না এই ম্যাচকে ঘিরে। দুই দেশের রাজনৈতিক উত্তাপকেও ছড়িয়ে যায় এ ম্যাচের তীব্রতা। চলতি নবম টি-২০ বিশ্বকাপের গ্রুপ এ’র ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয়েছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল। ম্যাচটিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ছুঁড়ে দেওয়া ১২০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জয়ের পথেই ছিল বাবর আজমের দল। কিন্তু লো স্কোরিং ম্যাচে ৬ রানের নাটকীয় জয় ছিনিয়ে নিয়েছে ভারত। এরপর থেকেই পাকিস্তান ক্রিকেটের দিকে আঙুল তুলছেন অনেকেই। নেটিজেনদের অভিযোগ, ম্যাচটিতে ‘ফিক্সিং’ হয়েছে। নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ১৯ ওভারে ১১৯ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে সাত উইকেটে ১১৩ রানের বেশি করতে পারেনি পাকিস্তান।এই হারের পর থেকেই নেটিজেনদের তোপের মুখে পড়েছে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। রোববার মোহাম্মদ আমির ও নাসিম শাহদের আগুনে বোলিংয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ভারতীয় ব্যাটাররা। এক পর্যায়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ১১৯ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পর পাকিস্তানের জয় নিয়ে নিশ্চিত ছিল ক্রিকেটপ্রেমীরা। লক্ষ্য তাড়ায় পাকিস্তানের শুরুটাও ছিল দুর্দান্ত। তবে ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিংয়ের কারণে ধীরে ধীরে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় মেন ইন গ্রিনরা।' ম্যাচটিতে টপ অর্ডারদের ব্যর্থতা দৃষ্টিগোচর হলেও মিডল অর্ডার নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। ইনিংসের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসে অতিরিক্ত বল নষ্ট করেছেন ইমাদ ওয়াসিম। ২৩ বলে ৬৫.২১ গড়ে ১৫ রান করে সাজঘরে ফিরেছন এই ব্যাটার।
তার এমন ধীর গতির ইনিংসের কারণেই ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে যায় দলটি। ম্যাচ শেষে তো ইমাদকে রীতিমতো কাঠগড়ায় তুলেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক সেলিম মালিক। তিনি ইমাদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত বল নষ্টের অভিযোগ এনে বলেন, ওর (ইমাদ) ইনিংস দেখলেই বোঝা যাবে যে ও ইচ্ছাকৃতভাবে বল নষ্ট করছিল। ওর ব্যাটিংয়ের জন্য রান তাড়া করা আরও কঠিন হয়ে যায়।’ ইমাদ ওয়াসিমের বিরুদ্ধে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তুলে আইসিসিকে বিষয়টি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন নাজিব উল্লাহ নামের এক পাকিস্তানি সমর্থক। মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্ম এক্সে (সাবেক টুইটার) তিনি লিখেছেন, ‘ম্যাচটিতে ইমাদের অভাবটা কি শুধু আমিই বা অন্য কেউ লক্ষ্য করেছে? আইসিসি, অনুগ্রহ করে সম্ভাব্য ম্যাচ ফিক্সিংয়ের তদন্ত শুরু করুন।
এমনকি ভাষ্যকাররাও তার তাড়াহুড়োর অভাবকে উপেক্ষা করতে পারেননি।’ ইমাদকে আক্রমণ করে আরেক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘new fixer in the town।’ অর্থাৎ তিনি বুঝাতে চাইছেন ‘শহরে নতুন ফিক্সার’। সম্ভাব্য ম্যাচ ফিক্সিংয়ের তদন্তের দাবি জানিয়ে জোনাথন ইয়ারউড নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচে ফিক্সিংয়ের জন্য তদন্ত প্রয়োজন।’ পাকিস্তানের ব্যাটিং ইনিংসের ১৪-১৭ ওভার তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি। ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচটির ফলাফল নিয়ে করা একটি সংবাদের মন্তব্যে শফিক ইসলাম নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘আমার মনে (হয়) ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ফিক্সিং হয়েছে।এদিকে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের দিকে ফিক্সিংয়ের অভিযোগের ঘটনা নতুন কিছু নয়। এর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ গড়াপেটার সঙ্গে নাম জড়িয়েছিলেন সালমান বাট, মোহাম্মদ আমির ও পেসার আসিফ। গতকালের লো স্কোরিং ম্যাচে পাকিস্তানের শোচনীয় পরাজয়ের পর একই প্রশ্ন ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে উঁকি দিচ্ছে। ইতোপূর্বে ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে শাস্তি পাওয়ায় হয়তো ব্যাপারটি আরো বেশি জোরালোভাবে সামনে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনদের তোলা অভিযোগ পিসিবি ও আইসিসি কতটা আমলে নেয়, এখন সেটিই দেখার বিষয়। যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনো পিসিবি কিংবা বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির কেউই মন্তব্য করেনি।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2024 সংবাদের আলো. All rights reserved.