সংবাদের আলো ডেস্ক: ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে এক বাংলাদেশি তরুণীর মৃতদেহ পাওয়া গেছে। দেশটির পুলিশ বলছে, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে শুক্রবার সকালে কালকেরে হ্রদের তলদেশে মৃত অবস্থায় পাওয়া ওই তরুণীর বয়স ২৮ বছর। তার নাম নাজমা, তিনি কালকেরেতে একটি অভিজাত আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে পরিচারিকা হিসেবে কাজ করতেন। সন্দেহ করা হচ্ছে, তাকে যৌন নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে। অভিযুক্তরা পাথর দিয়ে তার মাথা থেঁতলে তাকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। নাজমা কালকেরের বাসিন্দা। তার স্বামী সুমন বিবিএমপির একজন পৌরকর্মী। তারা ছয় বছর ধরে বেঙ্গালুরু শহরে বসবাস করছিলেন। এই দম্পতির ঘরে তিন সন্তানও আছে। নাজমা গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন, তখন তার ওপর এই হামলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ওই অ্যাপার্টমেন্টে কাজ শেষে বের হওয়ার পরই তিনি নিখোঁজ হন। নাজমা তার স্বামীকে ফোন করে বলেছিলেন, তিনি আধ ঘন্টার মধ্যে বাড়ি ফিরে আসবেন। কিন্তু তিনি আর ফিরে আসেননি। নাজমা ফিরে না আসায় তার স্বামী তাকে খুঁজতে শুরু করেন।এরপর গতকাল শুক্রবার সকালে পথচারীদের কাছ থেকে জরুরি বার্তা পায় পুলিশ। হ্রদের তলদেশে মৃতদেহ দেখে ওই ব্যক্তি পুলিশকে ফোন করে ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত করেন। পরে পুলিশ এসে নাজমার মরদেহটি উদ্ধার করে। তার মাথা ও মুখে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তাকে শ্বাসরোধে হত্যার আলামতও স্পষ্ট ছিল। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, খুনের আগে নাজমাকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। ঘটনাটি সম্ভবত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অথবা রাতে ঘটে থাকতে পারে।’ পুলিশের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, নিহতের কাছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট বা অন্য কিছু পাওয়া না গেলেও তার স্বামীর কাছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে এবং তারা ছয় বছর ধরে বেঙ্গালুরু শহরে বসবাস করছিলেন। পুলি আরো জানায়, ‘নির্যাতিতা অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করেছিলেন। কারণ এসংক্রান্ত তার কোনো নথি- প্রমাণ নেই। তবে তার স্বামীর নথিপত্র রয়েছে এবং আমরা তা খতিয়ে দেখছি, তিনিও বাংলাদেশ থেকে এসেছেন কি না। পরিবারটি গত পাঁচ বছর ধরে এ শহরেই বসবাস করছে। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য আভালাহাল্লির ভার্গো নগরে একটি বেসরকারি হাসপাতালের মর্গে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাজমা কালকেরের একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করতেন। তারা থাকতেন রামকৃষ্ণ নামক একটি এলাকায়। সেখান থেকে তার কর্মস্থলটি কাছেই ছিল এবং যে অ্যাপার্টমেন্টে কাজ করতেন, সেখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে মৃতদেহটি পাওয়া গেছে। অভিযুক্তদের সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে পুলিশ আশপাশের সিসিটিভিগুলো পরীক্ষা করছে।